গাজায় যুদ্ধবিরতি ও শান্তিচুক্তি সম্ভব বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর হামাস এখন পর্যন্ত ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ কিছু বিষয়ে সম্মত হচ্ছে। আমি প্রায় নিশ্চিত, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তি হবে। হামাস এখন বেশ ‘ঠিকঠাক’ আচরণ করছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার কিছু লাল সীমা আছে। যদি কিছু বিষয় পূরণ না হয়, আমরা এগোব না। তবে আমি মনে করি আমরা খুব ভালো অগ্রগতি করছি এবং হামাস এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একমত হচ্ছে।’
তিনি জানান, তার প্রস্তাবিত ২০ দফা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অধীনে মিশরে হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে।
আলোচনা নিয়ে ট্রাম্প আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা একটি চুক্তি করতে যাচ্ছি। বছরের পর বছর তারা যখন ব্যর্থ হয়েছে, এখন তা বলা কঠিন হলেও আমি প্রায় নিশ্চিত আমরা গাজা চুক্তি করতে যাচ্ছি।’
এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আলোচনায় নেতিবাচক মনোভাবের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘নেতানিয়াহু চুক্তি বিষয়ে খুবই ইতিবাচক।’
ট্রাম্প আরও জানান, তিনি আগের দিন জর্ডানের রাজার সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলেছেন।
সিনাইয়ের শার্ম আল শেখ শহরে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ও বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। মার্কিন এক কর্মকর্তা চ্যানেল ১২-কে জানান, ‘ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চুক্তি না হলে আমরা মিশর ছাড়ব না।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা চাই এই সপ্তাহেই একটি চুক্তি হোক। গাজার যুদ্ধ বন্ধে ও জিম্মি মুক্তিতে আমরা দ্রুত অগ্রগতি চাই।’
হোয়াইট হাউস প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা দ্রুত এটি সম্পন্ন করি, যাতে কিছুটা গতি পাওয়া যায়, জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া যায় এবং পরবর্তী ধাপে গাজায় একটি স্থায়ী ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়।’
তিনি বলেন, ‘হামাস ইতোমধ্যেই প্রেসিডেন্টের দৃষ্টিভঙ্গি স্বীকার করেছে এবং তার কাঠামো মেনে নিয়েছে বলেই এই কারিগরি আলোচনা চলছে। সংঘাতের সব পক্ষ এখন একমত যে এই যুদ্ধের অবসান হওয়া উচিত।’
লিভিট আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতি দেখতে চান, জিম্মিদের মুক্তি দেখতে চান। কারিগরি দলগুলো বর্তমানে সেই পরিবেশ তৈরিতে কাজ করছে।’
গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসন সম্পর্কে এক প্রতিবেদকের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো সেখানে পৌঁছাইনি। তবে প্রেসিডেন্ট বিশ্বাস করেন, শান্তি সম্ভব। গাজার মতো দীর্ঘদিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ও সুশাসন—এ দুটি বিষয়ই প্রশাসনের প্রধান অগ্রাধিকার থাকবে।’
ট্রাম্পের পরিকল্পনা এখনো সম্পূর্ণভাবে গৃহীত না হলেও ওয়াশিংটন আশাবাদী যে এই আলোচনাই মধ্যপ্রাচ্যে নতুন এক শান্তির অধ্যায়ের সূচনা করবে।
সূত্র: সিএনএন, টাইমস অব ইসরায়েল, আল-আরাবিয়া