ঢাকা সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

মাদুরোর সঙ্গে আলোচনার ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ০২:৩৫ পিএম
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি- সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা শুরু করতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যারিবীয় সাগরে ব্যাপক মার্কিন সামরিক শক্তি মোতায়েনের মধ্য দিয়ে ওয়াশিংটনের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে থাকা মাদুরো সরকার প্রথমবারের মতো এ ধরনের ইঙ্গিত পেল। ট্রাম্পের এই বক্তব্য অঞ্চলজুড়ে ক্রমাগত বাড়তে থাকা উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি প্রশমনের সম্ভাব্য পথগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

রোববার ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনার আগে ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘মাদুরোর সঙ্গে আমাদের কিছু আলোচনা হতে পারে। আর সেটির ফল কী হয়, তা দেখা যাবে। তাঁরা কথা বলতে আগ্রহী হবেন।’

যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, মাদুরো অবৈধ ‘মাদক’ বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যদিও কারাকাস বরাবরই ওয়াশিংটনের এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ভেনেজুয়েলাকে লক্ষ্য করে সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের বিভিন্ন বিকল্প নিয়ে হোয়াইট হাউসে তিন দফা বৈঠক করেছেন। ভেনেজুয়েলা ভূখণ্ডের ভেতরে স্থলহামলার পরিকল্পনা নিয়েও পর্যালোচনা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এমন তথ্য দিয়েছেন।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) ট্রাম্প বলেছেন, ভেনেজুয়েলা প্রশ্নে তিনি অনেকটাই মনস্থির করে ফেলেছেন। খুব শিগগিরই ভেনেজুয়েলা প্রশ্নে কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের সর্বশেষ মন্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে কারাকাসের  সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া পাওয়া যায়নি।

রোববার (১৬ নভেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি কথিত মাদক পাচারকারী সংগঠন ‘কার্টেল দে লস সোলেস’কে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই ঘোষণা দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী কোনো ব্যক্তি ওই গোষ্ঠীকে কোনো ধরনের সহায়তা দিলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

মার্কিন কর্মকর্তাদের অভিযোগ, কার্টেল দে লস সোলেস ভেনেজুয়েলার কুখ্যাত গ্যাং ত্রেন দে আরাগুয়ার সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ মাদক পাঠায়। এই গ্যাংকে ওয়াশিংটন আগেই বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ট্রাম্প প্রশাসন আরও অভিযোগ করেছে, মাদুরোই কার্টেল দে লস সোলেস পরিচালনা করেন। যদিও মাদুরো এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

রুবিওর ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র মাদুরোর মালিকানাধীন স্থাপনা ও ভেনেজুয়েলার ভেতরের অবকাঠামোতে হামলা করতে পারে কি না, এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের এমন পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে। তবে আমরা বলছি না যে এখনই সেটা করব।’

ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক মাত্রায় সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে। সর্বশেষ চলতি সপ্তাহে দেশটির শক্তিশালী বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ২১ টি হামলা চালিয়ে ৮০’র অধিক ‘নিরীহ লোক’ কে হত্যা করেছে পেন্টাগন।

এদিকে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি মাদুরোর প্রতি চাপ অব্যাহত রাখবেন। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা মাদক ব্যবসায়ীদের এবং মাদককে আমাদের দেশে ঢুকতে দেবো না।’ ২০১৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা মাদুরোকে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।