শনিবার, ০৩ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসান আরিফ

প্রকাশিত: মে ৩, ২০২৫, ০২:০২ এএম

নতুন অর্থবছরে নন-এনবিআর রাজস্ব লক্ষ্য ১৯ হাজার কোটি

হাসান আরিফ

প্রকাশিত: মে ৩, ২০২৫, ০২:০২ এএম

নতুন অর্থবছরে নন-এনবিআর রাজস্ব লক্ষ্য ১৯ হাজার কোটি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাজেটে অর্থের জোগান দিতে ‘নন-এনবিআর কর-রাজস্ব’ হিসেবে পরিচিত এনবিআর-বহির্ভূত কর-রাজস্ব আদায় বাড়াতে চায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ জন্য আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এনবিআর-বহিভূর্ত রাজস্ব আয় চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় ৪ হাজার কোটি টাকা বেশি লক্ষ্য নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার। ফলে আগামী অর্থবছরের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হতে পারে ১৯ হাজার কোটি টাকা।

এমন সিদ্ধান্তের অর্থ হচ্ছে, সরকার এনবিআরের বাইরে যেসব রাজস্ব আদায় করে তা থেকে আদায় বাড়াবে। ফলে মূল্যস্ফীতির এই সময়ে মানুষের ওপর আরও কিছুটা বাড়তি চাপ পড়বে। ফলে মানুষের ব্যয় বেড়ে যাবে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এনবিআর-বহির্ভ‚ত রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে করা হয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই খাতের আয় ধরা হয়েছিল ২০ হাজার কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে করা হয়েছিল ১৯ হাজার কোটি টাকা। তবে একচুয়াল হিসেবে আয় হয়েছিল মাত্র ৮ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরেও এই খাতের লক্ষ্য নির্ধারণ করা করা হয়েছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটেও তা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল ১৮ হাজার কোটি টাকায়।

তবে একচুয়াল হিসেবে আয় হয়েছিল মাত্র ৭ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা। আগের ধারাবাহিকতায় আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এনবিআর-বহির্ভ‚ত রাজস্ব আয় ১৯ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও একচুয়াল হিসেবে তা কতটা আদায় হবে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, দেশে রাজস্ব আয় বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে। আপাতত এনটিআর ও নন-এনবিআর কর-রাজস্ব বৃদ্ধির নির্দেশিকা জারি করেছে অর্থ বিভাগ। এনবিআর-নিয়ন্ত্রিত কর-রাজস্ব বৃদ্ধির কাজও চলছে। এনটিআর ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-বহির্ভূত (নন-এনবিআর) কর-রাজস্ব সংগ্রহ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কথা বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের প্রধম সপ্তাহে একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে।

তাতে বলা হয়েছিল, এনটিআর ও নন-এনবিআর রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা আছে। এ দুটি উৎস থেকে আদায় বৃদ্ধির জন্য একটি সময়োপযোগী নির্দেশিকা প্রণয়নের দরকার ছিল, সেটাই এখন করা হলো।

নির্দেশিকায় বলা হয়, এনটিআর ও নন-এনবিআর কর-রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ, যৌক্তিক মাসুল ও কর আরোপ, সঠিক খাত চিহ্নিতকরণ, সরকারের প্রাপ্য সুদ ও লভ্যাংশ নিয়মিতভাবে আদায় এবং সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন, সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে নির্দেশিকাটি প্রণয়ন করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো এখন থেকে যে যার জায়গা থেকে এনটিআর ও নন-এনবিআর কর-রাজস্বের আওতা স¤প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিতে হবে। এনটিআর ও নন-এনবিআর কর-রাজস্ব আদায়ের দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার প্রয়োজনে প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারও নিশ্চিত করতে হবে।

নির্দেশিকা অনুযায়ী, আদায় করা রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় চালান বা এ-চালান ব্যবহার করতে হবে। রাজস্ব জমা দেওয়ার তথ্য এবং টাকার পরিমাণ, খাত, চালান নম্বর ইত্যাদি নির্দিষ্ট রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে। মাসুল, টোল, ইজারা, ভাড়া ইত্যাদি যেদিন আদায় করা হবে, সেদিনই জমা দিতে হবে। তবে অফিস সময়ের পরে বা সরকারি ছুটির দিনে আদায় হলে তা পরের কর্মদিবসে সরকারি কোষাগারে জমা করতে হবে।

ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে এনটিআর ও নন-এনবিআর কর-রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে অর্থ বিভাগে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। মন্ত্রণালয় বা বিভাগগুলোকে সেবার মূল্য বা মাসুল নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ অথবা অপরিবর্তিত রাখার যৌক্তিকতা নিরূপণ করে একটি বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন প্রতিবছর অক্টোবর মাসে অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।

নির্দেশিকায় অর্থ বিভাগের করণীয় সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ বিভাগ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ত্রৈমাসিক পর্যালোচনা সভা করবে এবং মাসুল নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা আরোপের বিষয়ে মতামত দেবে। অর্থ বিভাগ এনটিআর ও নন-এনবিআর রাজস্বনীতি প্রণয়নের ব্যবস্থাও গ্রহণ করবে। বিভাগটি সব ধরনের সরকারি সেবার একটি তথ্যভাণ্ডারও (ডেটাবেজ) তৈরি করবে।

নির্দেশিকায় বলা হয়, টাকা জমা দিতে ব্যর্থ হলে এবং নির্দেশিকার কোনো শর্ত পালন না করলে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানান, ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের আইন-কানুনের অভাব নেই।

বাংলাদেশের চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এতে অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এই বাজেটে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকার অনুদানসহ মোট রাজস্বপ্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে নন-এনবিআর কর ১৫ হাজার কোটি এবং এনটিআর ৪৬ হাজার কোটি। অর্থাৎ অর্থ বিভাগের চাওয়া হলো ৬১ হাজার কোটি টাকা বা পারলে আরও বেশি আদায় করা।

এনটিআর ও নন-এনবিআর কর আদায়ের ক্ষেত্র হচ্ছে এনটিআর খাতের মধ্যে রয়েছে লভ্যাংশ ও মুনাফা, সুদ, প্রশাসনিক মাসুল, জরিমানা, ভাড়া ও ইজারা, টোল, অবাণিজ্যিক বিক্রি, সেবাপ্রাপ্তি, মূলধন রাজস্ব ও কর ছাড়া অন্যান্য রাজস্ব। নন-এনবিআর কর-রাজস্ব হলো মাদক শুল্ক, যানবাহন কর, ভ‚মি রাজস্ব, নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প বিক্রি ও সারচার্জ।

চলতি অর্থবছরে স্ট্যাম্প বিক্রি থেকে ১০ হাজার কোটি, লভ্যাংশ ও মুনাফা থেকে ৭ হাজার ৬৭৬ কোটি, সুদ বাবদ ৬ হাজার ১১৪ কোটি, টোল হিসেবে ১ হাজার ৯১৫ কোটি ও ভূমি রাজস্ব বাবদ ২ হাজার ২৫০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Link copied!