বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২৫, ১০:৫১ এএম

দলীয় অন্তঃকোন্দলে টালমাটাল জাপা

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২৫, ১০:৫১ এএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশে নির্বাচনী আবহ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করছে রাজনৈতিক ছোট-বড় সকল দল। যদিও একেবারে ভিন্ন চিত্র জাতীয় পার্টিতে (জাপা)। দলীয় অন্তঃকোন্দলে অনেকটা স্থবির দলীয় কর্যক্রম।

দলের ভেতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন জাতীয় পার্টির (জাপা) শীর্ষ নেতা জি এম কাদের। ফ্যাসিস্ট সময়ে দলের ভূমিকার সঙ্গে নেতৃত্বের দুর্বলতা অনিশ্চিতের মুখে ফেলেছে জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ। পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে পার্টির চেয়ারম্যানের কঠোর সিদ্ধান্ত। নেতৃত্বে দেখা দিয়েছে বড় রদবদল, বাদ পড়েছেন মুজিবুল হক চুন্নু, নতুন মহাসচিব হয়েছেন ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি।

দলের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, জাতীয় পার্টির দশম কেন্দ্রীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জ্যেষ্ঠ নেতাদের বড় একটি অংশ জি এম কাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর তৎপরতায় যুক্ত রয়েছে। যদিও চেয়ারম্যান জি এম কাদের বিরোধী অংশের নেতারা গত ২৮ জুন জাতীয় পার্টির (জাপা) সম্মেলনের কথা থাকলেও শেষ সময় তা বাতিল করে। কৌশলগত কারণে তারা সম্মেলন আয়োজন থেকে সরে আসে বলেও দাবি করেন। 

জাপার দুই শীর্ষ নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও রুহুল আমিন হাওলাদার জানান, আমরা দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানাই, চেয়ারম্যান যেন অবিলম্বে একগুঁয়েমি ও স্বেচ্ছাচারিতার পথ থেকে সরে এসে দলের প্রতিষ্ঠাতা পল্লিবন্ধুর (এইচ এম এরশাদ) প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অবিলম্বে সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষণা করেন।

এর আগে দলের প্রেসিডিয়ামের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,গত ২৮ জুন বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে সম্মেলন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। পরে ১৬ জুন মিলনায়তন না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে জি এম কাদের সম্মেলন স্থগিত করেন। তবে চলমান ইস্যুতে জি এম কাদেরের পক্ষের নেতারা দাবি করেন, সম্মেলন করার জন্য সরকার বা প্রশাসনের দিক থেকে সাড়া না পেয়ে তারা (আনিস-হাওলাদার) পিছু হটেছেন।

আনিস-হাওলাদারের অনুসারীদের দাবি কবেন, বর্তমান সময়টা অস্থির, বিশেষ করে জাতীয় পার্টির জন্য। এই সময়ে তারা ঘটা করে সম্মেলন করতে গেলে জাতীয় পার্টির বিপক্ষ শক্তি সুযোগ নিতে চাইবে। তারা সে সুযোগ দিতে চান না। 

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, দল ভাঙার দায়িত্বটা নিতে চাই না। আমরা সম্মেলন করে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে চাই। এর মধ্য দিয়ে কার্যত প্রতিপক্ষ গ্রুপ জি এম কাদেরের নেতৃত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। এতে দলে নতুন করে বিভক্তি দেখা দেয়। জাপার বর্তমান রাজনৈতিক পেক্ষাপটে জি এম কাদের তার দলের বিরোধী নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, যারা জাতীয় পার্টি নিয়ে এত দিন বেচাকেনার রাজনীতি করেছেন, তাদের সঙ্গে নিয়ে তিনি আর রাজনীতি করবেন না।

দলের সিনিয়র রাজনৈতিক নেতারা মনে করেন, বিগত দশম জাতীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে জাতীয় পার্টিতে (জাপা)। সম্মেলনের আয়োজন, চেয়ারম্যানের ক্ষমতা কমানো, আর্থিক স্বচ্ছতা আনাসহ নানা ইস্যুতে বিভক্ত হয়ে পড়ে দলটির প্রথম সারির নেতারা। তাদের মধ্যে বিভক্তি আরও প্রকট হয় গত ২৮ জুনের সম্মেলন স্থগিত হওয়াকে ঘিরে। প্রকাশ্য আসে দলের চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবের অন্তঃকোন্দল। 

মুজিবুল হক চুন্নু অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান (জি এম কাদের) সব সময় গণতন্ত্রের কথা বলেন, স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে বলেন। কিন্তু জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০ ধারাটি চরম স্বৈরতান্ত্রিক। এই ধারাবলে তিনি যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারেন। আমি এই ধারাটি একটু সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছি। তিনি তাতে রাজি নন। ফলে আমাকেও তিনি যখন ইচ্ছা বাদ দিতে পারেন। 

জাতীয় পার্টির কোন্দল প্রকাশ্যে

জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল অবশেষে প্রকাশ্যে রূপ নিলো চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের কঠোর সিদ্ধান্তে। দলের প্রেসিডিয়াম সভা ডাকা নিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ানোর জেরে অবশেষে মহাসচিব পদ হারালেন মজিবুল হক চুন্নু। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, যাকে দলের নতুন মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই রদবদল শুধু মহাসচিব পদেই সীমাবদ্ধ থাকছে না।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের প্রকাশ্য বিরোধিতা করায় দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ আরও কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্যকেও তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দলে জি এম কাদের নিজের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

গত কিছুদিন ধরেই দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অস্থিরতা ছিল চরমে, যার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল একটি প্রেসিডিয়াম সভা। সেই বিরোধের জেরেই গতকাল সোমবার এই বড় পরিবর্তনের ঘোষণা আসে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেন। একই সঙ্গে দলে নতুন নেতৃত্ব আনার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। শূন্য হওয়া পদে নতুন কয়েকজনকে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে জাপার নতুন দলের সম্ভাবনা : মহাসচিব পদ হারানোর পর মজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে চেয়ারম্যান (জিএম কাদের) বিরোধী জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে নতুন জাপার নুতন দল গঠনের সম্ভাবনা দেখছেন দলের নেতারা।   

দলের একাধিক শীর্ষ পর্যায়ের নেতা মনে করেন, দীর্ঘদিন ধরেই জি এম কাদেরের নেতৃত্বশৈলী দলে প্রশ্নবিদ্ধ। প্রেসিডিয়ামের সম্মতি ছাড়াই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া, দলের গণতান্ত্রিক চর্চা ক্ষুণ্ন করা ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

এসব কারণে দলের অধিকাংশ নেতা চেয়ারম্যানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। জুলাই অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে দলটির ঘনিষ্ঠতা এবং জি এম কাদেরের অন্তর্বর্তী সরকারবিরোধী অবস্থান দলকে রাজনৈতিকভাবে আরও কোনঠাসা করে তুলেছে বলে মনে করেন নেতারা।

দলে নেতৃত্বের পরিবর্তনের পক্ষে থাকা নেতারা বলছেন, ইতিমধ্যে জি এম কাদেরসহ দলটির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়েছে। জি এম কাদের নেতৃত্বে থাকলে সামনে দলের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এমনকি নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়েও শঙ্কা দেখা দিতে বলে জানিয়েছেন তারা। 

Shera Lather
Link copied!