প্রধান উপদেষ্টা যেই মাসে বলেছেন  সেই মাসেই নির্বাচন হবে - স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হয় কেউ এটাকে বাধা দিতে পারবে না। রাষ্ট্রের ক্ষমতা জনগণের হাতে। জনগণ যে সময়ে নির্বাচনের দিকে চলে যাবে কারো কোনো শক্তি নেই নির্বাচন বন্ধ করার। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে সময় বলেছেন, সেই সময়েই নির্বাচন হবে।

এ বিষয়ে অন্য কারো বলার কিছু নেই। গতকাল শনিবার নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণন রোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষিমার্কেট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে পরিদর্শনকালে দোকানিদের পলিথিন ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে পলিথিন ব্যবহারের ভয়াবহতা তুলে ধরেন তিনি। এ সময় র‌্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শহিদুর রহমান, অতিরিক্ত মহপরিচালক (অপারেশন্্স), অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন), র‌্যাবের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

এ ছাড়াও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. কামরুজ্জামানসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ উপস্থিত ছিলেন। 

পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন,  এখানে দুটি উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছি। দেশে বিভিন্ন জায়গায় পানি বেড়ে যাচ্ছে, প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় শাক-সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। বাজারে শাক-সবজির দাম একটু বেড়েছে। তবে স্টোরে প্রচুর আলুর মজুত আছে, কিন্তু কৃষকরা আলুর দাম পাচ্ছে না। এখানে বাজার থেকে ৫-৬ টাকা পার্থক্য দামে। এতে ভোক্তারাও যে রকম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কৃষকও কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষক যদি আলুর দাম না পায় আগামীবার তারা আর আলু চাষ করবে না। তখন আলুর দাম বেড়ে যাবে। তাই প্রত্যেকটা ভোক্তার ও কৃষকের জন্য যেন সুবিধা হয় ওই পর্যায়ে একটা দাম রাখতে হয়।

তিনি আরও বলেন, আমি চাই মধ্যস্বত্বভোগী যারা আছেন তাদের লাভ একটু কমিয়ে আনতে হবে। এটাকে কীভাবে কন্ট্রোল করা যায় আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া এটা করা সম্ভব নয়। আর অন্যান্য জিনিসের দাম আপনারাও দেখলেন মার্কেটে। মোটামুটি সহনশীল আছে। কিন্তু সবজির দাম কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটু বেড়ে গেছে।

চাঁদাবাজির বিষয় উল্লেখ করে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এই মোহাম্মদপুর-মিরপুর এলাকায় চাঁদাবাজিটা একটু বেশি হয়। এটা কীভাবে কন্ট্রোলের ভেতরে আনতে হবে? কোনো চাঁদাবাজকেই বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না। চাঁদাবাজদের ঠাঁই বাংলাদেশে হবে না। এটা যে যত বড় চাঁদাবাজই হোক না কেন তাকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, আপনারা যদি কোনো চাঁদাবাজ পান, আমাদের দেখান। সঙ্গে সঙ্গে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। চাঁদাবাজ নির্মূলের ক্ষেত্রে আপনাদের একটু সাহায্য-সহযোগিতা দরকার। আপনাদের কাজ একটু চাঁদাবাজগুলোরে আইডেন্টিফাই করে দেওয়া। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা।

এ সময় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ওঠা চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যার সম্পর্কে যা অভিযোগ উঠুক না কেনÑ এ বিষয়ে আমি এখানে কিছু বলব না।

এরপর মাদকের নির্মূলের বিষয়ে তিনি বলেন, আপনাদের অনুরোধ করব আপনারা মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। মাদকের বিরুদ্ধে আপনাদের সোচ্চার হতে হবে। মাদক কিন্তু আমাদের সমাজকে ধ্বংস করে দেবে আপনারা যদি সোচ্চার না হন। আমরা কিন্তু খুব অসহিষ্ণু জাতি হয়ে গেছি। কোনো কিছু একটা ঘটনা ঘটলে আমরা ছবি ওঠাতে যাই, কিন্তু তার প্রতিকার করি না। একটা সমাজে যদি কোনো অঘটন ঘটে বা একটা খারাপ কাজ চলে, এটা প্রতিকার করা আপনাদের ঈমানি দায়িত্ব।

পলিথিন ব্যবহার নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এই পলিথিনের ব্যবহারের কারণে আমাদের মাটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পলিথিন কোনো অবস্থায়ই নষ্ট হয় না। অনেক সময় পলিথিনের জন্য পানি আটকে যায়। এর কোনো উপকারিতা নেই, অপকারিতাই বেশি। একসময় আমাদের কিন্তু পাটের একটা বিরাট চাহিদা ছিল। এখন কৃষকরা কিন্তু পাটের দাম পায় না। এখন আপনারা যদি পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করে পাটের ব্যাগ ব্যবহার শুরু করেন তবে আমাদের কৃষকরা লাভবান হবে।