ভারি বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সঙ্গে কুড়িল বিশ্বরোডে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধের ফলে তীব্র যানজটে গতকাল বৃহস্পতিবার স্থবির হয়ে পড়ে ঢাকা। জলবদ্ধতার কারণে নগরীর বিভিন্ন রোড পানিতে ডুবে যানজট সৃষ্টি হয়, এতে ভোগান্তিতে পড়েন পথচারীরা। একইসাথে বকেয়া বেতনের দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকরা কুড়িলে সড়ক অবরোধ করলে যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে ঢাকা। এসময় গুলিস্তান থেকে উত্তরা পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে।
টানা কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহের পর গতকাল সকাল থেকেই রাজধানীর আকাশে মেঘ ছিল। দুপুরের পর বৃষ্টিতে ভ্যাপসা গরম থেকে কিছুটা মুক্তি পায় ঢাকাবাসী। আবহাওয়া অধিদপ্তর ১৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে। তবে অল্প সময়ের বৃষ্টিতেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এতে দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী ও পথচারীরা। বৃষ্টিতে রাজধানীর মিরপুর, কালশী, হাতিরঝিল, মৌচাক, শান্তি নগর, সিদ্ধেশ্বরী রোড, মগবাজারের ওয়ারলেস রেলগেট এলাকাসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
এই জলাবদ্ধতার পাশাপাশি কুড়িল এলাকায় শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে তীব্র যানজটে নাকাল হয় নগরবাসী। কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে যানজট প্রায় পুরো রাজধানী জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে রামপুরা, বনানী, গুলশান, শেওড়াপাড়া হয়ে জাহাঙ্গীর গেট, বিজয় সরণি হয়ে ফার্মগেট এলাকা ও আগারগাঁও পর্যন্ত যানজটে থমকে যায় যানবাহন। যাত্রীরা অভিযোগ করেন, প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় যানবাহন দাঁড়িয়ে আছে।
এয়ারপোর্ট থেকে রামপুরা হয়ে গুলিস্তান অভিমুখে যাওয়ার সড়কে কোনো গণপরিবহন না থাকায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। এই সড়কের পাশাপাশি, বিমানবন্দর হয়ে বনানী, মহাখালী ও বিজয় সরণি যাওয়ার রাস্তায় গণপরিবহন না থাকায় যাত্রীদের সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এছাড়া কোনো কোনো সড়কে গাড়ির জন্য যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে।
অন্যদিকে, গুলশান বিভাগের ট্রাফিক পুলিশ তাদের ফেইসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে জানায়, শ্যাওড়া (জোয়ার সাহারা) এলাকায় সড়ক অবরোধকারী পোশাক কর্মীদের টিয়ার শেল ব্যবহার করে সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। উত্তরা-ঢাকা রোডে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে কুড়িল-রামপুরা রুটের উভয় দিকে আন্দোলনকারীরা এখনও রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে।
এ বিষয়ে ডিএমপির ট্রাফিক গুলশান বিভাগের সরকারি পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. সোহেল রানা বলেন, গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে একটি ঝামেলা চলছিল। গতকাল শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতা দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মালিকপক্ষ তা দিতে পারেনি। এ জন্য কিছু শ্রমিক কুড়িলের দুই পাশের রাস্তা অবরোধ করার পাশাপাশি বিমানবন্দর এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডও অবরোধ করে রেখেছে। এতে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। চেষ্টা করছি, তবে এই মুহূর্তে যান চলাচল স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না।
বেসরকারি চাকরিজীবী শামিম হায়দার বলেন, ‘দুপুরের দিকে অফিস ছিল। অন্যান্য দিনের মতো একই সময়ে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। কিন্তু, বাস পাওয়া যাচ্ছিল না। পাশাপাশি বৃষ্টিও ছিল। খুব কষ্ট করে অফিসে এসেছি’।
আসাদগেটে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করা যাত্রী সুমি বেগম বলেন, ‘কয়েকটা বাস সামনে দিয়ে গেল। ভেতরে ওঠার মতো পরিস্থিতি দেখলাম না। ফলে হেঁটে যেতে হবে কাকলি’।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন