সোমবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


উচ্চপ্রু মারমা, রাজস্থলী

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২৫, ০১:৫২ এএম

প্রবারণা পূর্ণিমায় রঙিন ফানুসে মুখরিত হবে আকাশ

পাহাড়জুড়ে আলোর উৎসব

উচ্চপ্রু মারমা, রাজস্থলী

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২৫, ০১:৫২ এএম

পাহাড়জুড়ে আলোর উৎসব

পাহাড়ের জনপদ মুখরিত হবে আনন্দ-উল্লাসে। আকাশ ভরে উঠবে রঙ-বেরঙের ফানুসে, জ্বলজ্বলে আলোর ঝলকানিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে পাহাড়ের প্রতিটি আঙিনা। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা আজ উদযাপিত হচ্ছে। প্রতিবছরই ভক্তি, শ্রদ্ধা আর ধর্মীয় আবেগকে ধারণ করে এ উৎসব পালিত হয় পাহাড়ে।
প্রবারণা পূর্ণিমা মূলত ভিক্ষুদের তিন মাসব্যাপী বর্ষাবাস শেষে আত্মশুদ্ধি ও পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ভিক্ষুদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, পূজা-অর্চনায় অংশ নেন এবং জীবজন্তুর কল্যাণ কামনায় প্রার্থনা করেন। অশুভ বিদায় ও মঙ্গল কামনার মধ্য দিয়ে মানুষ এই উৎসবে মেতে ওঠে।
এ উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো আকাশ ভরানো রঙিন ফানুস। সন্ধ্যা নামলেই গ্রাম থেকে শহর, পাহাড় থেকে পাড়া, সবখানে প্রতিযোগিতা শুরু হয় ফানুস উড়ানোর। কেউ বানায় ছোট, কেউ বানায় বিশাল আকৃতির ফানুস। পরিবার, বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন সবাই একত্র হয়ে আকাশে ছাড়ে আলোকিত ফানুস। এতে শুধু আকাশ নয়, মানুষের মনও ভরে ওঠে আলোর আনন্দে।
পাহাড়ি জনপদের প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে থাকবে উৎসবের আমেজ। ভোর থেকে ভক্তদের আনাগোনায় মুখরিত থাকবে বিহার চত্বর। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের পাশাপাশি থাকবে দান-ধ্যান ও বিশেষ প্রার্থনা। শিশু-কিশোরদের জন্য এই দিন বাড়তি আনন্দের, আর বড়দের জন্য দিনটি হয়ে ওঠে ভক্তি ও প্রার্থনায় মগ্ন হওয়ার সময়।
প্রবারণা পূর্ণিমা শুধু ধর্মীয় আচার নয়; এটি পাহাড়ের মানুষের মিলনমেলা ও সংস্কৃতির অনন্য রূপ। পাহাড়ের রাত যখন ফানুসে ভরে যায়, তখন মনে হয় পুরো জনপদ যেন এক উৎসবের আলোয় স্নাত। এভাবেই বছরের পর বছর ধরে প্রবারণা পূর্ণিমা পাহাড়ি জনপদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও আনন্দ-আলোকের প্রতীক হয়ে রয়েছে।
এ উপলক্ষে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে চলছে প্রস্তুতি। প্রতিটি বিহারে সাজানো হচ্ছে রঙিন আলোকসজ্জা, প্রস্তুত করা হচ্ছে বিশেষ প্রার্থনা ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন। স্থানীয় যুবসমাজ, নারী ও শিশুরাও সমানভাবে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন উৎসবকে আনন্দমুখর করে তুলতে।
একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু জানান, ‘প্রবারণা পূর্ণিমা আত্মশুদ্ধি ও মঙ্গল কামনার উৎসব। এদিন আমরা সমাজের কল্যাণ, দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি এবং মানবজাতির শান্তি কামনায় নিয়ে প্রার্থনা করি।’ জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক, দুঃখ থেকে মুক্তি হোক।
রাজস্থলীর মংপ্রু মারমা বলেন, ‘প্রবারণা পূর্ণিমা আমাদের সবচেয়ে আনন্দের দিন। এদিন আমরা পরিবার-পরিজন সবাই মিলে পূজা করি, ভিক্ষুদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং রাতে ফানুস উড়িয়ে আকাশ আলোকিত করি। এটি শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যেরও প্রতীক।’
অংনুচিং মারমা বলেন, ‘শিশুরা ফানুস উড়ানোর অপেক্ষায় থাকে। পুরো আকাশ যখন আলোর ঝলকে ভরে যায়, তখন মনে হয় যেন অশুভ বিদায় নিয়ে মঙ্গল ফিরে আসছে। এই উৎসব আমাদের সবাইকে মিলেমিশে আনন্দ করার সুযোগ করে দেয়।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!