মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


জলের বুকেও শূন্যতা

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২৫, ০৫:১৩ এএম

জলের বুকেও শূন্যতা

  • আন্ধারমানিক নদীতে ইলিশ উৎপাদন কমেছে
  • বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বন্দর নির্মাণ নদী দূষিত করছে
  • জেলে ও সুশীল সমাজ গণশুনানি করেছে

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আন্ধারমানিক নদ, একসময় ছিল অফুরন্ত ইলিশের ভান্ডার। ভোরের আলো ফোটার আগেই শত শত নৌকা নামত জালে, নদীজুড়ে ধরা পড়ত রুপালি ঝিলিক। কিন্তু আজ সেই নদীর বুক নিঃশব্দ, জাল ফেলে ফিরতে হয় খালি হাতে। ইলিশ যেন হারিয়ে গেছে জলের বুক থেকে, রেখে গেছে শুধু শূন্যতা আর দীর্ঘশ্বাস।

ইলিশের এই অস্তিত্বসংকট নিয়ে সোমবার সকালে আন্ধারমানিক নদেই অনুষ্ঠিত হয় এক অনন্য গণশুনানি। আয়োজন করে প্রতিবেশ ও উন্নয়ন ফোরাম-পটুয়াখালী, প্রান্তজন, ক্লিন ও বিডব্লিউজিইডি। নৌকায় বসেই জেলে পরিবার, পরিবেশবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা একে একে তুলে ধরেন তাদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ, বেদনা আর আশা।

বক্তারা বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বন্দরনির্ভর উন্নয়ন আর নদীভরাটের কারণে ইলিশের অভয়াশ্রম আন্ধারমানিক এখন প্রাণহীন। একসময় যে নদী ইলিশের প্রজননক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত ছিল, সেখানে এখন দূষিত পানি আর ভারী জাহাজের শব্দে প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। নদীতে ফেলা হচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের গরম পানি ও শিল্পবর্জ্য, যা ইলিশের জন্য বিষসম।

৭০ বছরের জেলে আব্দুর রব রাঢ়ী বলেন, ‘একসময় আমাদের নৌকা ভরে যেত ইলিশে। এখন দিন যায়, জালও নড়ে না। নদীর বুকটা যেন মরে গেছে।’

আরেক জেলে হারুন মাতুব্বরের কণ্ঠে হতাশা, ‘পায়রা বন্দর হয়েছে, উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু আমাদের জীবন থেমে গেছে। ক্ষতিপূরণও পাইনি।’

পরিসংখ্যানও যেন তাদের বেদনার সাক্ষী। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাতীয় ইলিশ উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৪২ হাজার মেট্রিক টন কমেছে, যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ। বরিশাল বিভাগে এই ঘাটতি সবচেয়ে বেশি।

গণশুনানিতে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদরা বলেন, ‘ইলিশ শুধু মাছ নয়, এটি বাংলাদেশের সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও নদীজীবনের প্রতীক। এই মাছ হারিয়ে গেলে হারিয়ে যাবে এক সম্পূর্ণ জীববৈচিত্র্য।’

আলোচনার শেষে আয়োজক সংস্থাগুলো সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, নদীর সীমানা নির্ধারণ, বর্জ্য ফেলা বন্ধ, পলি অপসারণ এবং ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্র সুরক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে। তারা বলেন, নদীকে বাঁচাতে পারলেই ইলিশ ফিরবে, আর ইলিশ ফিরলে নদীর বুকেও ফিরবে প্রাণ।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!