জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা ৮টি দলের যৌথ সমাবেশের কারণে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। গতকাল পল্টন মোড়ে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ দুপুর ২টায় শুরুর কথা থাকলেও সকাল থেকেই মিছিল নিয়ে যোগ দেন কয়েক হাজার নেতাকর্মী। লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় আশপাশের সব সড়ক। ফলে ওই এলাকায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও পথচারীরা। বিকেলে সমাবেশ শেষে স্বাভাবিক হয় যান চলাচল।
বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে হাইকোর্টের কদম ফোয়ারা থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুটি মোড়েই পুলিশ ব্যারিকেড স্থাপন করে। এ সময় ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদেরও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায়। সমাবেশের বিস্তৃতি দক্ষিণে জিরো পয়েন্ট, উত্তরে বিজয়নগর, পূর্বে বায়তুল মোকাররম ও পশ্চিমে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। এতে এসব সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ ছিল।
কদম ফোয়ারা মোড়ে দায়িত্ব পালনরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মিনজিস আলম বলেন, ‘দুপুর ১টার আগেই কদম ফোয়ারা মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড বসানো হয়। যেহেতু এটি (কদম ফোয়ারা থেকে দৈনিক বাংলা মোড়) ঢাকার ব্যস্ততম রাস্তা, তাই এখানে অন্যান্য সময়েও যানজট থাকে। তবে রাস্তা বন্ধ থাকায় যানজট মৎস্য ভবন হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত চলে যায়।’
এদিকে দৈনিক বাংলা মোড়ের সড়কটি বন্ধ থাকার কারণে যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ থেকে মিরপুর-ফার্মগেটগামী বাসগুলোও এদিকটায় প্রবেশ করতে পারেনি। তবে গুলিস্তান থেকে কিছু বাস সচিবালয় হয়ে শিক্ষা ভবনের সামনে দিয়ে চলাচল করলেও সেখানেও যানজটের একই অবস্থা দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, সমাবেশের প্রভাবে কাকরাইল, শাহবাগ ও সাইন্স ল্যাব পর্যন্তও দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। অনেকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে পরে হেঁটেই রওনা দেন গন্তব্যস্থলের দিকে।
মিরপুরগামী শিকড় পরিবহনের যাত্রী রাফিদ বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী থেকে রওনা হয়েছি শাহবাগের উদ্দেশে। সমাবেশের কারণে গুলিস্তান পর্যন্ত এসে বাস আর যেতে রাজি হচ্ছে না। রিকশায় উঠলেও একই অবস্থা। তাই বাধ্য হয়ে হেঁটেই রওনা হয়েছি।’
প্রায় চার ঘণ্টা পর বিকেল ৪টার দিকে সমাবেশ শেষ হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ভিক্টর পরিবহনের চালক আল-আমিন বলেন, ‘নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে মতিঝিল ফকিরাপুল দিয়ে গাড়ি চলছিল। কিন্তু তীব্র যানজট ছিল। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে বায়তুল মোকাররম হয়ে পল্টন মোড় এসেছি।’
সদরঘাটগামী জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘কাকরাইল মোড় পর্যন্ত আসার পর বাস আর যায় না। আজ (গতকাল) যে সমাবেশ জানতাম না। পরে হেঁটে পল্টন মোড় পর্যন্ত এসেছি। এখন রিকশা ছাড়া যাওয়ার উপায় নেই।’

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন