শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ০৩:৪৪ এএম

মাদ্রাসাছাত্রীর আত্মহত্যা

‘শিক্ষিকার সহযোগিতায় ধর্ষণ করে সুপার’

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ০৩:৪৪ এএম

‘শিক্ষিকার সহযোগিতায়  ধর্ষণ করে সুপার’

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে মাদ্রাসাছাত্রীর (১৪) আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের অভিযোগ, মাদ্রাসা শিক্ষিকার সহযোগিতায় সুপারের ধর্ষণের শিকার হয়ে লোকলজ্জার ভয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছে ওই কিশোরী। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী মাদ্রাসা সুপারকে আটক করে পিটুনি দেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে বলে জানিয়েছেন মুকসুদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল।

এদিকে গতকাল শুক্রবার সকালে মৃতের মা বাদী হয়ে মাদ্রাসা সুপার মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান শিকদার (৫১) ও শিক্ষিকা খাদিজা বেগমকে (৩০) আসামি করে মামলা করেছেন। মামলার পর গতকালই পুলিশ শিক্ষিকাকে গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে থেকেই পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন অভিযুক্ত সুপার।

গ্রেপ্তার মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান শিকদার উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের ‘আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসা’র সুপার ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম। তিনি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বারাশিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদ শিকদারের ছেলে। আর খাদিজা বেগম উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের ফজলু খালাসীর মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোহালা ইউনিয়নের বামনডাঙ্গা গ্রামের ভুক্তভোগী কিশোরী আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসার পঞ্চম জামাতের ছাত্রী ছিল। গত বৃহস্পতিবার নিজ বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। এর আগে, গত ২৬ নভেম্বর ওই ছাত্রী মাদ্রাসা সুপার মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান শিকদার কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়। এ সময় ধর্ষণের চিত্র মোবাইলে ধারণ করেন অভিযুক্ত শিক্ষক খাদিজা বেগম। আত্মহত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্ত সুপারকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। অসুস্থ হওয়ায় পুলিশ তাকে পাশর্^বর্তী মাদারীপুর জেলার রাজৈর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা বলেন, গত ২৬ নভেম্বর বিকেলে মাদ্রাসা ছুটির পর সুপার মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান আমার মেয়েকে তার রুম ঝাড়ু দিতে বলে। পরে খাদিজা ম্যাডামের সহযোগিতায় তাকে ওই কক্ষেই ধর্ষণ করে। আমার মেয়েটি বিষয়টি গোপন রাখলেও বাড়িতে মন খারাপ করে বসে থাকত। ঘটনার ৮ দিন পর গত বুধবার সকালে বিষয়টি আমাকে ও তার বাবাকে জানায়।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনা অন্যদের জানালে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকিও দেয়। কিন্তু পরে বাড়ির অন্যরা বিষয়টি জানার পর আমার মেয়ে অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সন্তানহারা মা বলেন, ‘আমি বুকের ধন হারিয়েছি। আমি মেয়ের ধর্ষণকারীরর সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই৷’

নিহতের বড় বোন বলেন, শিক্ষিকা খাদিজা বেগম আমার বোনকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখে। এর পর থেকে বিভিন্ন সময় মাদ্রাসার ছাত্রদের পাঠিয়ে আমার বোনকে ডেকে পাঠাত। সে যেতে না চাইলে ওই শিক্ষিকা ফোন দিয়ে ওই শিক্ষককে বিয়ে করার জন্য চাপ দিত। এসব কারণেই আমার বোন আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসি চাই।

ওই শিক্ষার্থীর বোন জামাই বলেন, মাদ্রাসার খাদিজা ম্যাডাম সুপারকে এ কাজে সহযেগিতা করেন এবং ধর্ষণের পর খাদিজা ম্যাডাম বিষয়টি প্রকাশ করলে আমার শ্যালিকাকে জীবননাশের হুমকি দেন। এ ছাড়া সুপারকে বিয়ে করার কথা বলেন। এসব কারণে ভয়ে মেয়েটি ধর্ষণের কথা চেপে রাখে।

তিনি আরও বলেন, গত বুধবার খাদিজা ম্যাডাম ধর্ষণের বিষয় নিয়ে ফোন করে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। এটা আমার শ্যালিকা জানতে পারে। তার আত্মহত্যার পেছনে এটিও একটি বড় কারণ।

মুকসুদপুর থানার পরিদর্শক শীতল চন্দ্র পাল বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এই মামলার প্রধান আসামি মাদ্রাসা সুপার আগে থেকেই পুলিশ হেফাজতে আছেন। তাকে আজ (গতকাল) থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। আর আরেক আসামি খাদিজাকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!