রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ০২:৩৮ এএম

গাজায় হাঙ্গার গেমস খেলছে ইসরায়েল

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ০২:৩৮ এএম

গাজায় হাঙ্গার গেমস খেলছে ইসরায়েল

একবার নারী, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের একটি দল ত্রাণকেন্দ্র থেকে ফিরে যাওয়ার সময় শুধু ধীরে চলার কারণে একজন প্রহরী ওয়াচটাওয়ার থেকে তাদের ওপর মেশিনগান দিয়ে গুলি চালায়। এ তথ্য জানান গাজায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিতর্কিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) সাবেক এক নিরাপত্তা ঠিকাদার। তিনি বলেছেন, তিনি কয়েকবার তার সহকর্মীদের মেশিনগানসহ অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালাতে দেখেছেন, যারা কোনো হুমকি ছিল না। বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে জিএইচএফের মন্তব্য জানতে চাইলে অভিযোগগুলো পুরোপুরি মিথ্যা বলে দাবি করে তারা। একটি বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে তারা আরও জানায়, জিএইচএফের ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে কোনো বেসামরিক নাগরিকের ওপর কখনোই গুলি চালানো হয়নি। মে মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ ও মধ্য গাজার বেশ কিছু এলাকায় সীমিতভাবে ত্রাণ বিতরণের মাধ্যমে গাজায় নিজেদের কার্যক্রম শুরু করে জিএইচএফ। এরপর গাজায় ১১ সপ্তাহের পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে ইসরায়েল, তখন থেকে ওই এলাকায় আর কোনো খাদ্যসামগ্রী প্রবেশ করেনি। শুরু থেকেই জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণব্যবস্থা ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। কেননা, এর ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষকে সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে হেঁটে অল্প কয়েকটি কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করা হচ্ছিল। জাতিসংঘ ও স্থানীয় চিকিৎসকেরা জানান, জিএইচএফের কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ত্রাণ নিতে যাওয়া চার শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। যদিও ইসরায়েলের দাবি, নতুন এই বিতরণব্যবস্থা চালুর ফলে হামাসের হাতে ত্রাণ পৌঁছানো বন্ধ হয়েছে। 
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র এবং অন্যান্য সংস্থা পরিচালিত মানবিক সহায়তা বহরের আশপাশে অন্তত ৬১৩ জন নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ৬১৩টি হত্যার ঘটনা নথিভুক্ত করেছি। এটি ২৭ জুন পর্যন্ত হিসাব। এরপর আরও কিছু ঘটনা ঘটেছে।’ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। 
জাতিসংঘ-নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থা এড়িয়ে জিএইচএফ যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি নিরাপত্তা ও লজিস্টিক কোম্পানির সহায়তায় গাজায় ত্রাণ সরবরাহ করছে। ইসরায়েলের দাবি, জাতিসংঘ নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থায় হামাস জঙ্গিরা ত্রাণ ছিনিয়ে নিচ্ছে। তবে জাতিসংঘ এই জিএইচএফ পদ্ধতিকে বিপজ্জনক ও মানবিক নিরপেক্ষতার নীতিমালার লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে। রাভিনা শামদাসানি আরও বলেন, জিএইচএফ ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র এবং মানবিক সহায়তা বহরের আশপাশে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এসব মানবিক সংস্থার মধ্যে জাতিসংঘও রয়েছে। জিএইচএফ মে মাসের শেষ দিকে গাজায় খাদ্য প্যাকেট বিতরণ শুরু করে। সংস্থাটি একাধিকবার দাবি করেছে, তাদের বিতরণকেন্দ্রে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। এদিকে গাজায় মধ্যরাত থেকে গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছে। গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার প্রস্তাবের মাঝেই এসব হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। খবর আল-জাজিরার। এসব হত্যাকাণ্ডের মধ্যে আল-মাওয়াসিতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জন্য স্থাপিত তাঁবুতে হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে।  
অন্যদিকে হামাস বলেছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিমুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সর্বশেষ প্রস্তাবের ব্যাপারে মধ্যস্থতাকারীদের কাছে ‘ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া’ পাঠিয়েছে তারা। যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে হামাস যে ‘ইতিবাচক মনোভাব’ দেখিয়েছে, তাকে ‘ভালো’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এয়ারফোর্স ওয়ানে গত শুক্রবার সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, গাজা যুদ্ধবিরতি আগামী সপ্তাহেই হয়ে যেতে পারে, তবে তিনি এখন আলোচনা কী অবস্থায় আছে, সে সম্বন্ধে বিস্তারিত জানেন না। রোববার সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে সোমবারকে সপ্তাহের শুরু ধরে নেওয়া হয়।
যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে অবিলম্বে আলোচনায় বসতে প্রস্তুতÑ হামাসের এমন মন্তব্যের পর এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে ট্রাম্পের প্রস্তাব পর্যালোচনা শেষে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার-মিশরের কাছে নিজেদের শর্তাবলি পাঠায় হামাস। প্রস্তাবে হামাস উল্লেখ করেছে, প্রথমে ইসরায়েলের কাছে ১০ জিম্মি ও ১৮ মরদেহ হস্তান্তর করবে তারা। বিনিময়ে মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেবে এবং গাজায় আগ্রাসন থামাতে হবে। এ ছাড়া ইসরায়েল যে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করবে না, সে নিশ্চয়তা মার্কিন প্রেসিডেন্টকে দিতে হবে বলে শর্ত দিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী ও দলের সঙ্গে পরামর্শ শেষে হামাস গাজায় যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া দেওয়ার কথা জানিয়েছে।
বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম টেলিগ্রামে পোস্ট করা একটি বিবৃতিতে হামাস বলেছে, তারা মধ্যস্থতাকারীদের কাছে একটি ইতিবাচক জবাব জমা দিয়েছে এবং যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনার নতুন পর্বে তাৎক্ষণিকভাবে অংশ নিতে পুরোপুরি প্রস্তুত আছে। এ আলোচনার বিষয়ে অবগত আছেন এমন একজন জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, হামাস চুক্তির সামগ্রিক কাঠামো মেনে নিয়েছে। তবে তারা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনের অনুরোধ জানিয়েছে। এর একটিÑ যদি ২০ মাস ধরে চলা এ যুদ্ধ স্থায়ীভাবে থামানো নিয়ে আলোচনা ভেঙে পড়ে, সে ক্ষেত্রেও আবার হামলা শুরু করা যাবে নাÑ যুক্তরাষ্ট্রকে এমন নিশ্চয়তা দিতে হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!