নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আগামী জাতীয় নির্বাচন ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমারের জাতিগত শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। সোমবার দেশটির সশস্ত্র এই গোষ্ঠী তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জান্তার পরিকল্পিত জাতীয় নির্বাচন বানচাল করে দেওয়ার এই ঘোষণা দিয়েছে। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আরাকান আর্মি (এএ) মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জেনারেলদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে হাজির হয়েছে। বর্তমানে এই গোষ্ঠীটি দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের প্রায় পুরো অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। আরাকান আর্মি ছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় শাসনের বিরোধিতা করা বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে জান্তা। বর্তমানে এসব গোষ্ঠীর সঙ্গে দেশটির নতুন গণতন্ত্রপন্থি বিভিন্ন গেরিলা ইউনিটও সম্মুখ সারির লড়াইয়ে যোগ দিয়েছে। দেশটিতে অভ্যুত্থানের সময় জারি করা জাতীয় জরুরি অবস্থা গত জুলাইয়ের শেষের দিকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে সামরিক জান্তা। ওই সময় দেশটিতে আগামী ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত গণতন্ত্রকামী আইনপ্রণেতারাসহ দেশটির জান্তাবিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর মোট ৫ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার অন্তত ২৫ লাখই বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইনে বসবাস করেন। প্রাথমিকভাবে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর থাকলেও ২০২৩ সালের শেষের দিকে সেটি ভেস্তে যায়। পরে দেশটির অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও আরাকান আর্মির সঙ্গে জান্তাবিরোধী লড়াইয়ে অংশ নেয়। দেশটির সশস্ত্র এসব গোষ্ঠীর সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষে একের পর এক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারায় সামরিক বাহিনী। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হামলার জবাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রাখাইনের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। পাশাপাশি উপকূলীয় এই রাজ্যকে দেশের বাকি অংশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে সেখানে অঘোষিত অবরোধ আরোপ করে জান্তা। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে রাখাইনে প্রায় ৫ লাখ ৬০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত অবস্থায় বসবাস করছেন। মিয়ানমারের জান্তা বলেছে, তারা স্থিতিশীলতা, শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিতে রাজ্যের ১৪টি শহরে স্থানীয়ভাবে জরুরি অবস্থা জারি রেখেছে।