শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আনন্দ আড্ডা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০২:০৪ এএম

সংস্কৃতিচর্চায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না

আনন্দ আড্ডা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০২:০৪ এএম

সংস্কৃতিচর্চায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না

বহু বছর ধরেই রাজধানীর উত্তরায় শুটিং হচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ করেই ৪ নম্বর সেক্টরে বাড়িভিত্তিক শুটিং কার্যক্রম বন্ধ করতে বাড়ি মালিকদের ‘অনুরোধ’ জানিয়েছে স্থানীয় কল্যাণ সমিতি। এই নিষেধাজ্ঞা শিল্পসংস্কৃতির বিকাশে ‘বাধার শামিল’ বলে মনে করছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। সমিতির দেওয়া চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে আসতেই নাটক সংশ্লিষ্টরা প্রতিবাদ করছেন। এর প্রতিবাদ জানিয়েছে নাটকের দুই সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড ও অভিনয়শিল্পী সংঘ। এ নিয়ে রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে কথা হয় বেশ কয়েকজন প্রযোজক, নির্মাতা ও শিল্পীর সঙ্গে। তাদের নিয়ে এই আয়োজন।

আজাদ আবুল কালাম, সভাপতি, অভিনয়শিল্পী সংঘ
এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আইনগতভাবে যা করা দরকার, তা করব। বছরের পর বছর ধরে উত্তরায় শুটিং চলছে। কখনোই পরিবেশ নষ্ট করছে না। শুটিং বাড়িগুলো নিরিবিলি জায়গায়। এর সঙ্গে অনেক মানুষের রিজিক জড়িত। যার বাড়ি, তিনি ভাড়া পাচ্ছেন। তার বাড়িতে পাঁচ থেকে ছয়জন মানুষ কাজ করে, তাদের সংসার চলে। আমি মনে করি, একটি চক্র এই কাজ করছে। এর পেছনে কোনো চক্র আছে; অনুভূতিতে লাগে তেমন ইস্যু তৈরি করার চেষ্টা চলছে। রাস্তার ওপর বাজার আছে, সেসব নিয়ে তারা কথা বলছেন না। যতগুলো রেস্টুরেন্ট থাকা দরকার, তার চেয়েও বেশি আছে, সেসব নিয়ে তারা কথা বলছেন না। তারা হঠাৎ করে শুটিং হাউস বন্ধ করা নিয়ে কথা বলছেন। এটাকে কিছু মানুষের দুরভিসন্ধি বলব। কিছু মানুষ ভাবছে, এটা বন্ধ করতে পারলে তাদের বিজয় হবে। আমরা শিল্পীরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

শহীদুজ্জামান সেলিম, সভাপতি, ডিরেক্টরস গিল্ড
এই সিদ্ধান্ত অগ্রহণযোগ্য। এভাবে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না। অনেক বছর ধরে উত্তরায় শুটিং হয়ে আসছে, বৈধভাবেই হচ্ছে! এখানে তো আমরা বিশৃঙ্খল কিছু করছি না। নাটক বা সিনেমার শুটিং, কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই বন্ধের নোটিশ কেন? চার নম্বর সেক্টরে ক্লাব আছে, তাতে কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা শুধু শুটিং হাউসে!
সালাহউদ্দিন লাভলু, নির্মাতা ও অভিনেতাএর আগেও ৪ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতি শুটিং বন্ধে চিঠি দিয়েছিল। তখন আমি ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি ছিলাম। আমরা কয়েকটি সংগঠন সমিতির সঙ্গে বসে আলোচনা করে সমাধান করেছিলাম। এখন আবার চিঠি দিয়েছে, এটা তো ঠিক না!

সাজ্জাদ হোসেন দোদুল, প্রযোজক, নির্মাতা ও অভিনেতা
এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা বাসার মধ্যে শুটিং করি। গল্পের প্রয়োজনে কখনো কখনো রাস্তায় দু-একটা দৃশ্যের শুটিং করতে হয়। তাও বেশ সতর্কতার সঙ্গে করি। নির্জন এলাকায় গিয়ে আউটডোর-এর শুটিং করি। তা ছাড়া উত্তরাতে অনেক রেস্টুরেন্ট, অযাচিত পাকিং, অফিস ও ক্লাব রয়েছে। আবাসিকের চেয়ে অফিস বেশি। সবই থাকতে পারলে শুটিংয়ে সমস্যা কি? শুটিং তো হয় বাসার ভেতরে। সব কাজ উত্তরা কেন্দ্রিক তাও কিন্তু নয়। এখানে কিছু গোলমাল আছে। এখন চারদিকে অশনিসংকেত। অনেক জায়গাতেই শুটিংয়ের বাধার কথা শোনা যায়। সার্বিকভাবে রাজনৈতিক ও সামাজিক আশ্রয় প্রয়োজন। তাহলে হয়তো এ ধরনের সমস্যা হবে না। আমাদের ভালো কাজের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। আমরাই বাংলাদেশের সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। আমাদের পূর্ব পুরুষরা যেমন ছিল আমরা এখন আছি। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকের কাজের পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। নিবিঘেœ বাংলাদেশে সংস্কৃতিচর্চা করতে দিতে হবে। সংস্কৃতিচর্চায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না। সরকার আমাদের শুটিংয়ের জন্য জায়গা দেয়নি। আমাদের গল্পের প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের লোকেশনে কাজ করতে হয়। কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী আমাদের জায়গার সংকট রয়েছে। তার মধ্যে এমন বাধা আসলে কীভাবে আমরা কাজ করব?
শামীম জামান, প্রযোজক, নির্মাতা ও অভিনেতা

শুটিং বাড়ি বন্ধের নোটিশ এটা আমাদের শিল্পের জন্য হুমকি। আমরা যারা শিল্পচর্চা করি আমাদেরও ঘর-বাড়ি আছে। আমরা তো নিয়মের মধ্যে চলি। শুটিং বাড়ির যদি কেনো অনিয়ম থাকে সেটা বলতে পারে। কিন্তু হুট করে শুটিং বন্ধ করতে বলতে পারে না। এটা আমাদের রুটি-রুজি। এর সঙ্গে অনেক মানুষ জড়িত। রুটি-রুজিতে আঘাত করা ঠিক না। এটা ষড়যন্ত্রও হতে পারে। যারা এ ধরনের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে তাদের বোঝা উচিত আমাদেরও পরিবার আছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের অনেকের জন্য ক্ষতি হয়ে যাবে। শুটিং আমাদের চাকরি। এটা করেই আমরা জীবিকা চালাই। আমাদের পেশায় আঘাত করা ঠিক না। এমনিতেই পট পরিবর্তনের পর নানান কারণে কাজ কমে গেছে। তার মধ্যে শুটিং বাড়ি বন্ধের নোটিশ শিল্প সংস্কৃতির জন্য হুমকি। শিল্পচর্চার ওপর সবসময়ই আঘাত আসে। কিন্তু এগুলো প্রতিহত করেই টিকে থাকতে হবে। আমরা সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করি। সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আমাদের অসংখ্য ভক্ত। তাদের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। বন্ধ সমাধান নয়। সমস্যা হলে আলোচনা করে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। শিল্পচর্চায় বাধা দেওয়া যাবে না।
আহসান হাবিব নাসিম, অভিনেতা

হুট করে উত্তরায় শুটিং বন্ধের নোটিশ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তবে আজ হোক, কাল হোক আবাসিক এলাকায় শুটিং বন্ধ করতেই হবে। এত বড় একটা ইন্ডাস্ট্রি আবাসিক এলাকায় দীর্ঘমেয়াদে চলতে পারে না। এতে যেমন জনভোগান্তি হচ্ছে তেমনি আবার শুটিং ইউনিটের পেশাদারিত্ব বিঘিœত হচ্ছে। শিল্পী-কলাকুশলীদের কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। কমপ্লায়েন্স ইস্যুগুলো নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তাই শুটিং হাউজ মালিক অ্যাসোসিয়েশন, প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশন, শুটিং সংশ্লিষ্ট অংশীজন  মিলে বাণিজ্যিক শুটিং জোন গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে। এফডিসির শুটিং ফ্লোর, করিরপুরের শুটিং জোন, বেসরকারি ব্যেবস্থাপনায় (শুটিং হাউস পরিচালনায় যারা অভিজ্ঞ) পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে দীপ্ত টিভির শুটিং জোন/ফ্লোর, মানিকগঞ্জের ফিল্ম সিটি, পুবাইলের ‘হাসনা হেনা’র মতো প্রফেশনাল আরো শুটিং জোন/ফ্লোর গড়ে তুলতে হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!