মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শফিকুর রহমান শিখর

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৫, ০২:২৮ এএম

সনিকের পৃথিবী যাত্রা

শফিকুর রহমান শিখর

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৫, ০২:২৮ এএম

সনিকের পৃথিবী যাত্রা

ভিডিও গেম খেলতে ভালোবাসে এমন অনেক শিশুর পরিচিত নাম সনিক। নীল রঙের ছোট এই হেজহগটির সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব তার দৌড়ানোর গতি। চোখের পলকে হারিয়ে যায় সে। দীর্ঘদিন ধরেই সনিক গেম দুনিয়ায় জনপ্রিয় ছিল। সেই পরিচিত চরিত্রটিকে প্রথম বড় পর্দায় দেখা গেছে ২০২০ সালে মুক্তি পাওয়া সনিক দ্য হেজহগ মুভিতে, যেখানে তার গল্পটি আরও সহজভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

মুভিতে দেখানো হয়, সনিক এসেছে অন্য এক জগত থেকে। সেখানে নানা বিপদের কারণে তার অভিভাবক তাকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেয়।  সনিকের গ্রহে তার শক্তি সাধারণ ব্যাপার ছিল, কিন্তু পৃথিবীতে এমন শক্তি স্বাভাবিক নয়। পৃথিবীতে এসে সবকিছুই তার কাছে নতুন  মনে হচ্ছিল। শিশুরা যেমন নতুন জায়গায় গেলে কৌতূহল বোধ করে, ঠিক তেমন সনিকও পৃথিবীর নানা জিনিস দেখে মজা পায়।

মুভির গল্পটি খুব সহজ। পৃথিবীতে আসার পর সনিক অনেক বেশি একা বোধ করে। এখানে তার মতো কেউ নেই, কথা বলার সঙ্গীও পাওয়া যায় না। তবে সিনেমায় এ দৃশ্যগুলো এত সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে, চোখ সরানো যায় না। সনিক মাঝেমধ্যে লুকিয়ে মানুষের জীবন যাপন দেখতে যায়। কে  কোথায় কী করছে, বাচ্চারা কী খেলছে, কার কোথায় যাওয়ার তাড়া; এসব সে কৌতূহলে ভরা চোখে দেখতে থাকে। একসময় তার পরিচয় হয় টম নামের একজন মানুষের সঙ্গে। টমের চরিত্রটি খুব সাধারণ। সে একজন পুলিশ অফিসার।  দায়িত্বশীল হলেও টম বন্ধুসুলভ। তার সঙ্গে সনিকের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে মুভির টানটান মুহূর্তে। তাদের বন্ধুত্ব খুব জোড়ালো। সনিক অস্থিরভাবে কথা বলে, অল্পতেই উত্তেজিত হয়ে ওঠে, টম সেগুলো শান্তভাবে সামলে নেয়। এই জুটির সম্পর্কটিই মুভির সবচেয়ে সুন্দর দিক। তাদের কথাবার্তা, ভুল বোঝাবুঝি, আবার সব ঠিক করে নেওয়া দেখে সবাই মজা খুঁজে পায়। মুভির আরেকটি বড় চরিত্র হলো ডক্টর রোবটনিক। তিনি গল্পের খলনায়ক হলেও তাকেও কখনো কখনো ভালো মনে হয়। তার যন্ত্রপাতি, বেশি বুদ্ধিমান হওয়ার ভঙ্গি, মাঝে মাঝে অতিরঞ্জিত আচরণে তাকে বেশিরভাগ সময়েই বেশ হাস্যকর মনে হয়। রোবটনিক সনিকের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, কারণ সনিকের শক্তিকে নিজের আবিষ্কারে ব্যবহার করার ইচ্ছা তার। তবে একপর্যায়ে রোবটনিক সনিককে ধরতে চায় প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।  কেন প্রতিশোধ নিতে চায়, জানতে চাও? জানতে হলে দেখতে বসে যাও মজার এই মুভিটি।

এই মুভিটি তৈরির গল্পও কিন্তু খুব ইন্টেরেস্টিং! শোনো বলি, সর্বপ্রথম ১৯৯১ সালে গেম কোম্পানি সেগা সনিক চরিত্রটি তৈরি করে। সেগার দরকার ছিল এমন একজন নতুন হিরো যার আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকবে। সনিকের আলাদা বৈশিষ্ট ও ক্ষমতা দ্রুতই গেমারদের মন জিতে নেয়। গেমের জনপ্রিয়তার কারণে অনেক বছর ধরে সনিককে নিয়ে কার্টুন, কমিক, খেলনাসহ বিভিন্ন কাজ হয়েছে। কিন্তু পূর্ণদৈর্ঘ্য লাইভ-অ্যাকশন সিনেমা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২০১০ সালের দিকে। পরিকল্পনা কয়েকবার বদলানোর পর অবশেষে ২০১৭ সালে প্যারামাউন্ট পিকচার্স সিনেমাটি হাতে নেয় এবং প্রস্তুতি শুরু হয়। তবে ২০১৯ সালে প্রথম ট্রেইলার প্রকাশ হওয়ার পর দর্শকরা অবাক হয়ে যায়। কারণ সনিকের চেহারা গেমের পরিচিত রূপের চেয়ে অনেক আলাদা দেখাচ্ছিল, যা ভক্তরা পছন্দ করেনি। এরপর নির্মাতারা সিদ্ধান্ত নেন পুরো চরিত্রটির ডিজাইন বদলে আবার তৈরি করবেন। তারা সেটা করলেনও। ডিজাইন বদলের পর যখন সিনেমা মুক্তি পায়, এটি বক্স অফিসে বেশ সফল হয়। ২০২০ সালের জনপ্রিয় পারিবারিক সিনেমাগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। পরে এর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অংশও তৈরি হয়।

চিত্রায়ণের দিক থেকে মুভিটি অনন্য। বিশেষ করে সনিকের দৌড়ানোর দৃশ্যগুলো চোখে লাগার মতো। সে যখন শহরের ভেতর দিয়ে বা মরুভূমিতে দৌড়ায়, তখন রঙের ঝলক আর গতির রেখা দেখে মনে হবে যেন গেমের ভেতরেই ঢুকে গেছ। অ্যানিমেশন আর বাস্তব দৃশ্য মিশিয়ে তৈরি হওয়ায় সিনেমাটা দেখতে মোটেও বোরিং লাগে না। শিক্ষণীয় দিক বলতে গেলে এই মুভিটি খুব বড় কোনো শিক্ষা দিতে চায় না। তবে বন্ধুত্ব, বিশ্বাস ও সহযোগিতার বিষয়গুলো এই মুভিতে খুব স্বাভাবিকভাবে এসেছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!