ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

এবার বিএফআইইউ প্রধানের আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখছে সংস্থাটি

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৫, ১০:০৮ এএম

আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলামের লেনদেনের তথ্য খতিয়ে দেখছে সংস্থাটি। তার স্ত্রী সুমা ইসলামের অ্যাকাউন্টের তথ্যও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। শাহীনুল ছুটিতে থাকলেও তিনি বর্তমানে বিএফআইইউর প্রধান হিসেবে কর্মরত। গত ১৮ আগস্ট তার আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তিনি ছুটিতে আছেন। বিএফআইইউ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বিএফআইইউ দুই উপায়ে বিভিন্ন ব্যক্তির লেনদেনের তথ্য পর্যালোচনা করে। প্রাথমিকভাবে নিজস্ব উৎসে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে শাহীনুল ও তার স্ত্রীর দুটি অ্যাকাউন্টের তথ্য পর্যালোচনা করা হয়েছে। তার অ্যাকাউন্টে জনৈক মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তি গত ১২ মে নগদে ২৩ লাখ টাকা জমা করেন। একই ব্যক্তি শাহীনুলের স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে গত ৪ মে নগদ ১৫ লাখ টাকা এবং ৫ মে পাঁচ লাখ টাকা জমা দেন। এসব তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। পরবর্তী করণীয় জানতে উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে শুধু আপত্তিকর ভিডিওর বিষয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে শাহীনুলের বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে এনা পরিবহনের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজের পর ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ, বেসরকারি একটি ব্যাংকের অবলোপন করা ঋণে হস্তক্ষেপসহ নানা অভিযোগ এসেছে। এসব ক্ষেত্রে তার ভাগনে পরিচয়ে একজনকে ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ তদন্তের বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের সায় পেলে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হতে পারে।

গত ১৮ আগস্ট শাহীনুল ইসলামের একাধিক আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। শাহীনুল ইসলাম এটিকে ভুয়া দাবি করলেও ১৯ আগস্ট তিনি অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। পরদিন ২০ আগস্ট অফিসে এলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ওই দিন সরকার চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাইদ কুতুবকে আহ্বায়ক করে গঠিত তদন্ত কমিটির দুই সদস্য হলেনÑ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের পরিচালক মো. মতিউর রহমান।

আর যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সদস্যসচিব। সাত কর্মদিবসের মধ্যে এই কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার কথা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৮ আগস্ট পদত্যাগে বাধ্য হন বিএফআইইউর তৎকালীন প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস। এরপর দীর্ঘদিন পদটি খালি থাকার পর চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি নিয়োগ পান শাহীনুল ইসলাম।