শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপে প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সারা বাংলাদেশের মতো এবার এ উপজেলাতেও ৪২টি পূজামণ্ডপে প্রতিমা নির্মাণ, মণ্ডপ সাজসজ্জা ও অবকাঠামোর প্রস্তুতি কাজ চলছে। সরেজমিনে পৌরসভার হাটখোলা কালীমন্দিরে দুর্গা প্রতিমা নির্মাণ প্রায় শেষের দিকে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, উপজেলা শাখার সভাপতি অসীম কুমার দাস জানান, ‘গত বছর দুপচাঁচিয়ায় ২টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়নে মোট ৪০টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবার নতুন করে আরও ২টি মণ্ডপ যোগ হওয়ায় মোট ৪২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।’
মহালয়া বা সর্বপিতৃ অমাবস্যা অনুষ্ঠিত হবে রোববার, ২১ সেপ্টেম্বর। সেদিন থেকেই পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে দেবীপক্ষ শুরু হবে। ভোরবেলায় রেডিও থেকে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের উদাত্ত সুরে মহিষাসুরমর্দিনীর স্তব শুনতে পাওয়া যাবে। পরদিন সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর দেবীপক্ষের প্রতিপদ তিথি, এবং আবাঙালির সম্প্রদায় থেকে শারদীয় নবরাত্রি পূজা শুরু হবে।
মহা চণ্ডীতে উল্লেখ আছে, ত্রেতা যুগে ভগবান রামচন্দ্র রাবণের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হন। পাপের বিনাশের উদ্দেশ্যে দেবী আদ্যাশক্তি মহামায়ার কাছে শরৎকালে পূজা অর্পণ করে শক্তি বৃদ্ধি করেন। এরপর রামচন্দ্র দেবী সীতাকে উদ্ধার করে রাবণকে পরাজিত করেন। সেই থেকেই প্রতিবছর শরৎকালে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দুর্গোৎসব পালন করে আসছেন।
শারদীয়া দুর্গাপূজার নির্ঘন্ট অনুযায়ী, মহা ষষ্ঠী পালিত হবে রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর এবং বিজয়া দশমী, অর্থাৎ দেবীর বিসর্জন অনুষ্ঠিত হবে বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর। এখন থেকে দুর্গাপূজা শুরু হতে প্রায় ৩০ দিন বাকি।
দুর্গাপূজা মূলত দেবী দুর্গার দশমহাবিদ্যার পূজা, যা শুভ শক্তির জয় এবং অশুভ শক্তির বিনাশের উৎসব। এই উৎসবে নারী শক্তির পূজা করা হয়, যা জয় ও ক্ষমতায়নের প্রতীক।
দুর্গাপূজা বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং আনন্দ ও উৎসবের সময়। এই সময় মানুষে মানুষে মিলন ঘটে এবং সমাজে সম্প্রীতি ও ঐক্য বৃদ্ধি পায়। দুর্গাপূজা আত্ম উপলব্ধি ও আধ্যাত্মিক উন্নতির সুযোগও হয়ে থাকে। এটি বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব।