সতী নদীর ওপর লালমনিরহাট জেলা যুবদলের স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত ভাসমান সেতু স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনা তৈরির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন এলাকাবাসী।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের মধুরাম এলাকায় সেতুটির উদ্বোধন করেন বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু।
সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে সতী নদী। ব্রিজ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের ডিঙি নৌকায় পারাপার হতে হতো। ইউনিয়ন পরিষদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রয়োজনীয় স্থানে যেতে চার-পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হতো চারটি গ্রামের বাসিন্দাদের। কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যবসায়িক কাজে দুর্ভোগ ছিল নিত্যসঙ্গী।
এই সমস্যা দূর করতে জেলা যুবদলের নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে ভাসমান সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। তিস্তা নদীর পানির ওঠা-নামার সঙ্গে সতী নদীর পানিও ওঠানামা করে বলে বাঁশ বা কাঠের স্থায়ী সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়নি। তাই ড্রাম, বাঁশ ও কাঠ ব্যবহার করে ৮০ মিটার দীর্ঘ ভাসমান সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি এখন যোগাযোগের পাশাপাশি পর্যটকদেরও আকর্ষণ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হামিদ বলেন, ‘এখন আর ঘুরে যেতে হয় না। ধান-গম-ভুট্টা ঘরে তুলতে আগের মতো কষ্ট করতে হয় না। যুবদল নিজ উদ্যোগে সেতু বানিয়ে আমাদের বড় উপকার করেছে।’
গৃহিণী মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আগে বাচ্চাদের অনেক দূর ঘুরে স্কুলে যেতে হতো। এখন আর সেই কষ্ট নেই। আমরা খুব উপকার পেয়েছি।’
রাজপুর ইউনিয়ন যুবদলের সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজের দাবি করেও সাড়া পাইনি। তাই আমরা নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমে সেতুটি তৈরি করেছি।’
জেলা যুবদলের সভাপতি আনিচুর রহমান আনিচ বলেন, ‘তিস্তার পানি বৃদ্ধি–হ্রাসের কারণে ভাসমান সেতুই ছিল একমাত্র কার্যকর সমাধান। এতে দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগ ও সম্প্রীতি আরও দৃঢ় হয়েছে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে দুলু বলেন, ‘মানুষের কষ্ট কমানোই বিএনপির মূল লক্ষ্য। যুবদলের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এখানে স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।’



