রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


স্বপ্নবাজ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৫, ১২:০৩ এএম

বিদ্রুপে তারুণ্যের বিদ্রোহ

স্বপ্নবাজ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৫, ১২:০৩ এএম

বিদ্রুপে তারুণ্যের বিদ্রোহ


‘ইন্টারনেট একা একা বন্ধ হয়ে গেছে’, ‘শেখ হাসিনা পালায় না’, ‘স্বজন হারানোর বেদনা’, ‘সাপে কাটার বেদনা আপনার চেয়ে আর বেশি কে জানে’, ‘শি হ্যাজ মেড আস ফ্লাই’ এসব হাসির খোরাক জোগানো বাক্যাংশের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে?

রাষ্ট্রীয় ‘গম্ভীরতা’র মুখে তারুণ্যের ছুড়ে দেওয়া ঠোঁটকাটা এসব ব্যঙ্গ মনে পড়তেই ভেসে ওঠে ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই আন্দোলন, যাকে কেন্দ্র করে তরুণ প্রজন্ম এক অভূতপূর্ব রাজনৈতিক চেতনায় জেগে উঠেছিল। হাসতে হাসতেই করে দেখিয়েছিল বিদ্রোহ। ফলে এসব বাক্যাংশ এখন আর নিছক হাসির খোরাক নয়, বরং হয়ে ওঠেছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সাহসের প্রতীক। তাই তো জুলাইয়ের এসব স্মৃতিকে ধারণ করে এবার রাজধানীর ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকায় আয়োজিত হয়েছে ছয় দিনব্যাপী একটি অভিনব প্রদর্শনী ‘বিদ্রুপে বিদ্রোহ’। ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে আছে ব্যঙ্গচিত্র, পথচিত্র, রাজনৈতিক উক্তির সংরক্ষিত সংকলন, ভিডিও ইনস্টলেশন, প্রতিবাদী গান ও কবিতা, প্রভোকেটিভ মঞ্চনাটক (‘নাটক কম করো প্রিয়’), লাইভ পারফরম্যান্স ও দর্শক অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রম। আয়োজনটি যৌথভাবে করেছে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকা এবং ব্যঙ্গনির্ভর সৃজনশীল প্ল্যাটফর্ম ‘ইয়ার্কি’। প্রদর্শনীটি চলবে প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং শেষ হবে ৫ আগস্ট।

এই আয়োজন কেবল একটি প্রদর্শনী নয়, এটি একটি প্রজন্মের মনোভঙ্গি ও প্রতিরোধের ধারাকে তুলে ধরার এক শিল্পিত প্রয়াস। জেনজি প্রজন্ম বা বর্তমান তরুণরা আর পুরোনো কাঠামোর প্রতিবাদী নয়। তারা মিছিলের পাশাপাশি মিম বানায়, রাগের বদলে ব্যঙ্গ করে, আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাসির চাদরে মুড়িয়ে ক্ষমতার নগ্নতাকে উন্মোচন করে দেয় চোখের সামনে। এই ব্যঙ্গ-বিদ্রুপই তাদের অস্ত্র, আর সেই অস্ত্র কখনো ফেসবুক পোস্টে, কখনো গ্রাফিক ডিজাইনে, আবার কখনো পথনাটকের সংলাপে।

আন্দোলনের সময় এসব হাস্যকর ও বিতর্কিত উক্তি যখন ভাইরাল হচ্ছিল, তখন সেগুলো হয়ে উঠেছিল একধরনের রাজনৈতিক ‘সেøাগান’। তরুণদের ব্যঙ্গচিত্র বা কনটেন্ট কেবল উপহাস নয়, ছিল উদ্দেশ্যমূলক, প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া, কিংবা কর্তৃত্বকে পায়ের নিচে টেনে আনার নিঃশব্দ এক চিৎকার। এই ব্যঙ্গ হয়ে উঠেছিল এক শক্তিশালী সামাজিক ভাষা, যা ক্ষমতার মুখোমুখি দাঁড়ানোর সাহস জুগিয়েছিল হাজারো কণ্ঠকে।

আয়োজকদের মতে, ‘আমাদের সমাজে ব্যঙ্গ সবসময়ই বঞ্চিতদের অস্ত্র। কিন্তু এটি ক্ষমতার প্রতি ছুড়ে দেওয়া একধরনের বুদ্ধিদীপ্ত হাসি, যা অনেক সময় তীব্র প্রতিবাদের চেয়েও বেশি জোরালো।’ এই প্রদর্শনী তাই হয়ে উঠেছে সাহসী কণ্ঠের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি।

যারা কঠিন সময়েও সত্য বলতে দ্বিধা করেননি, বরং কৌতুকের ছায়ায় সেই সত্যকে আরও বেশি ছড়িয়ে দিয়েছেন। এই আয়োজন প্রমাণ করে, বিদ্রোহের ভাষা বদলেছে। এখন আর শুধু সেøাগানে, সভায় বা ব্যানারে সীমাবদ্ধ নেই প্রতিবাদ। ডিজিটাল দুনিয়ায় জন্ম নেওয়া এই প্রজন্ম স্মার্টফোন হাতে নিয়েই নেমে পড়েছে রাজনৈতিক ভাষ্য নির্মাণে। তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ভয় পায় না, বরং সেটার হাস্যকরতাকে ফুটিয়ে তুলে লোকের হাসির মধ্য দিয়েই অস্বস্তির বার্তা পৌঁছে দেয়। এটাই তাদের কৌশল, এটাই তাদের নীরব বিদ্রোহ এবং এটাই তাদের স্বপ্নের পথচলা। 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!