সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম

জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪৭ কোটি ডলার

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম

জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৪৭ কোটি ডলার

নতুন অর্থবছরের শুরুতেই রেমিট্যান্সে সুখবর দিলেন প্রবাসীরা। জুলাই মাসে তারা দেশে পাঠিয়েছেন ২৪৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে হিসাব)।  গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের একই মাসের তুলনায় এ আয় ২৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে দেশে এসেছিল ১৯১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স। তবে এ সময়েও প্রায় বেসরকারি, বিশেষায়িত ও বিদেশি আট ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।


গত বছরের জুলাইয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আহ্বান জানিয়ে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দেন। পরে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ফের বাড়তে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করে পাঠানো এই অর্থ সরাসরি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। কর্মকর্তারা বলছেন, হুন্ডি প্রতিরোধে সরকারের নানা উদ্যোগ, রেমিট্যান্সে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা এবং ব্যাংকিং সেবার উন্নয়নের কারণে এই ধারাবাহিকতা তৈরি হয়েছে। এর আগে গত জুন মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২৮২ কোটি মার্কিন ডলার, যা তার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে রেকর্ড প্রবাহ এসেছে। 


বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন বলেন, ‘মূলত হুন্ডি কমে যাওয়ার কারণেই রেমিট্যান্স বাড়ছে। নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে হুন্ডি কমে গেছে। এখন দেশে যে রেমিট্যান্স আসছে, তার পুরোটাই বৈধ পথেÑ অর্থাৎ ব্যাংকিং চ্যানেলে আসছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে ডলারের দর স্থিতিশীল রয়েছে। টাকা-ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরও বাজার স্বাভাবিক রয়েছে। দেশের অর্থনীতির জন্য এটা সুখবর।’ নতুন অর্থবছরেও রেমিট্যান্সে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘নানা সংকটের মধ্যে অর্থনীতির জন্য ভালো খবর এলো। এক লাফে রেমিট্যান্স ৩০ বিলিয়ন ছাড়ানো সত্যিই বিস্ময়কর। এক-দুই বছর আগে এটা কল্পনাও করতে পারেনি কেউ। এর আগে কোনো অর্থবছরে ২৫ বিলিয়নও আসেনি। রপ্তানি আয়ের গতিও ভালো। কিন্তু আমদানি ব্যয় মেটানোর পর রিজার্ভ বাড়ছিল না। এখন দাতা সংস্থাগুলোর বাজেট সহায়তার প্রায় পৌনে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণে বেশ কিছুদিন ধরে চাপের মধ্যে থাকা রিজার্ভও সন্তোষজনক অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। এটা অর্থনীতির জন্য খুবই ভালো খবর।’


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।  এই অঙ্ক এক অর্থবছরে দেশে আসা সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। প্রবাসী আয়ের এমন ধারাবাহিক বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ও ডলারের জোগানে স্বস্তি এনে দিয়েছে।


গত জুলাই মাসে যেসব ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি এমন সংখ্যা আট। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, হাবিব ব্যাংক, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও ন্যাশনাল ব্যাংক পাকিস্তান।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত জুলাই মাসে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৪ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ২২ কোটি ৯২ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৮ কোটি ৯৭ লাখ ডলার এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১ কোটি ১৩ লাখ ডলার। 


২০২৪-২৫ অর্থবছরের ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ বেশি। এর আগে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সে এসেছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস চলাকালীন সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসার রেকর্ড ছিল ২ হাজার ৪৭৮ কোটি বা ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবছর শুরু হয়েছিল গত বছরের জুলাই থেকে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে ওই মাস ছিল উত্তাল; দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল। কয়েক দিন ব্যাংক ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। সে কারণে জুলাই মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা কমেছিল; এসেছিল ১৯১ কোটি ৩৭ কোটি (১.৯১ বিলিয়ন) ডলার। তবে একক মাস হিসেবে চলতি বছরের মার্চ মাসে রেকর্ড ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে। এর আগে করোনাকালীন ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। সেই রেকর্ড ভাঙে ২০২৪ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে। ২০২৪ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৬৪ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের ডিসেম্বরে এসেছিল ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৪ সালের জুলাই মাস বাদে বাকি ১১ মাসই দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!