কর্মসংস্থানের নতুন দুয়ার

ভূমধ্যসাগর ঘেরা বিশ্বের অন্যতম উন্নত জীবনযাত্রার এক দ্বীপদেশ মাল্টা। অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য দেশটি তৃতীয় বিশ্ব থেকে প্রচুর জনবল নিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের জন্য খুলে গেছে এক অপার সম্ভাবনার দ্বার। বাংলাদেশিদের জন্য আরও সুখবর হচ্ছে- গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশের রাজধানীতে অস্থায়ীভাবে চালু হয়েছে মাল্টা কনসুলেট। 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
য়আবেদনকারী স্বাক্ষরসহ যথাযথভাবে পূরণকৃত আবেদনপত্র
য়সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে সদ্য তোলা ৬ কপি রঙিন ছবি (৩৫ মিলিমিটার/৪৫ মিলিমিটার)।
য়মাল্টায় থাকার পর থেকে শুরু করে ন্যূনতম তিন মাস অতিরিক্ত সময়ের জন্য পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে। পাসপোর্টের কমপক্ষে তিনটি ফাঁকা পৃষ্ঠা প্রয়োজন। মূলত পুরো পাসপোর্টই আসল ও অনুলিপিসহ দিতে হবে। পুরোনো পাসপোর্ট থাকলে সেটিও সরবরাহ করতে হবে।

য়বিদেশি ভ্রমণের জন্য চিকিৎসা বিমা। বিমা যেন আবেদনকারীর ন্যূনতম ৩০ হাজার ইউরো বা তার সমতুল্য সমস্ত ঝুঁকির (দুর্ঘটনা, অসুস্থতা, জরুরি চিকিৎসা, স্থানান্তর ইত্যাদি) কভার করতে পারে। এখানে বিমার বৈধতার সময়কাল স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে এবং তা যেন মাল্টায় ভ্রমণের তারিখ থেকে কমপক্ষে ৯১ দিন কভার করতে পারে।

য়নিয়োগকর্তার কাছ থেকে আমন্ত্রণপত্র/কভারিং লেটার, যেখানে আবেদনকারীর পেশাগত অবস্থা এবং মালটায় কি কাজ করা হবে তার কাজের বিবরণ থাকবে। আমন্ত্রণপত্রটিতে অবশ্যই অনুমোদিত ব্যক্তির স্বাক্ষর, নাম এবং পদবি উল্লেখ থাকতে হবে। স্বাক্ষরিত কর্মসংস্থান চুক্তিটির ম্যাল্টিজ নোটারি পাবলিক দ্বারা প্রত্যয়িত কপি লাগবে। পাশাপাশি নিয়োগকর্তা কর্তৃক ইস্যুকৃত একটি ডিকলারেশন লেটার সংযুক্ত করতে হবে।

য়আইডেন্টিটি পত্র। এটি আবেদনকারি যে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য অনুরোধ করেছেন তার স্বীকারক্তি। এখানে আবেদনকারীর দক্ষতা/যোগ্যতা; মুক্ত পেশাজীবীদের জন্য বোর্ড সদস্যতার প্রমাণ; অথবা ডাক্তারদের ক্ষেত্রে মেডিকেল প্রতিষ্ঠানের চিঠি ফটোকপিসহ আসল কপি জমা দিতে হবে।
য়বাসস্থানের প্রমাণ। হোটেল বুকিং/স্বাক্ষরিত ইজারা চুক্তি/প্রমাণের ঘোষণাপত্র যেকোনো একটির স্বাক্ষরিত কপি এবং হোস্ট/মালিকের আইডি কার্ডের ফটোকপি। সঙ্গে ম্যাল্টিজ পাবলিক নোটারি দ্বারা প্রত্যয়িত কপি লাগবে।

য়ইউরো পাস ফরমেটে আবেদনকারির স্বাক্ষরিত সিভি, যেখানে রেফারেন্সসহ কমপক্ষে তিন বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
য়পিসিসি(পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ)। এটি আবেদনকারী দেশের কোনো অপরাধ না করে বৈধভাবে মাল্টা যাচ্ছেন তার প্রমাণপত্র।

অনলাইনে আবেদনের উপায়
সকল নথি ক্রমানুসারে প্রস্তুত হয়ে গেলে ভিএফএস গ্লোবালের ওয়েবসাইট থেকে ভিসার আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করতে হবে। এই ফর্মটি সঠিক তথ্য দিয়ে ভালোভাবে পূরণ করে সহায়ক কাগজপত্রগুলো একসঙ্গে করে একটি ফাইল প্রস্তুত করতে হবে। এই ফাইলটি ভিসা কনসুলেটে জমা দিলেই আবেদন সম্পন্ন হবে।

ভিসা প্রসেসিং ফি
একটি একক ওয়ার্ক পারমিটের আবেদনের জন্য খরচ ২৮০ দশমিক ৫০ ইউরো বা প্রায় ২৮ হাজার ২০৬ বাংলাদেশি টাকা, যেটি আবেদন জমা দেওয়ার মুহূর্তে দিতে হয়। 

ভিসার আবেদনপত্র যেখানে
প্রয়োজনীয় সকল সংযুক্তিগুলো সব একসঙ্গে করে আবেদন ফর্মের সঙ্গে এক ফাইলে জমা করতে হবে। তারপর চলে যেতে হবে ঢাকার মাল্টা কনসুলেট অফিসে। তারা আবেদনপ্রাপ্তি স্বীকার করে একটি টোকেন দিবে, যেখানে ভিসা প্রদানের তারিখ উল্লেখ থাকবে। এই টোকেন দেখিয়ে নির্দিষ্ট দিনে পাসপোর্ট-ভিসা সংগ্রহ করা যাবে।

ভিসার মেয়াদ
মাল্টায় কাজের জন্য অনুমিত এই ভিসার মেয়াদ দুই বছর। সময়টি প্রয়োজনে বাড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে। তবে এই মেয়াদ বৃদ্ধিটা নির্ভর করবে নিয়োগকারীর সঙ্গে কর্মচারীর চুক্তির ওপর।