শুক্রবার, ০৬ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসান আরিফ

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৫, ০৪:০৬ এএম

ঘাটতির চাপেই ইসির নির্বাচনি প্রস্তুতি

হাসান আরিফ

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৫, ০৪:০৬ এএম

নির্বাচন কমিশন। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশন। ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন হলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যা গত ২ জুন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ যে প্রস্তাবিত বাজেট জাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন। যদিও প্রস্তাবিত বাজেটে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য ২ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা আগের নির্বাচনের অর্থবছরের তুলনায় অনেক কম।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে অর্থবছরের বাজেটে ইসির জন্য বরাদ্দ ছিল ৪ হাজার ১৯০ কোটি টাকা, যা এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে ১ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা বেশি ছিল। যার পুরোটাই ব্যয় হয়েছে। আগের অর্থবছরে ইসির জন্য মূল বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। নির্বাচনি ব্যয় মেটাতে পরে তা আরও বাড়ানো হয়েছিল।

প্রস্তাবিত বাজেটে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য হলো একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর। গত দেড় দশকে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাই আমরা নির্বাচনি ব্যবস্থার সংস্কারের ওপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেছি এবং এ লক্ষ্যে বিভিন্ন আইন, নীতিমালা ও আদেশ সংশোধন ও সংস্কারের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের প্রস্তুতির লক্ষ্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং যথাযথ তথ্য বিশ্লেষণ নিশ্চিত করতে ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা (জিআইএস) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে ইসির জন্য যে ২ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তার মধ্যে কমিশনের জন্য রাজস্ব ব্যয় ২ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় ২২৯ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।

ইসি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে, চলতি অর্থবছরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এই বরাদ্দ যথেষ্ট হবে কিনা এবং অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হবে কি না, তা নিয়ে খোদ ইসির ভেতরেই আলোচনা চলছে। ফলে অনেকের মধ্যে নির্বাচন নিয়েই সন্দেহ রয়েছে। যদিও সরকার চাইলে ইসির জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ দিতে পারে। আইনে সরকারকে সে ক্ষমতা দেওয়া আছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী বছরের জুনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে আগাতে হলে বাজেট সংশোধন করতে হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ নির্বাচনে ব্যয় করা হবে। যদি আরও প্রয়োজন হয়, সরকার তা দেবে। সমস্যা হবে না।

তিনি আরও বলেন, বাজেট একটা প্রস্তাব। যদি নির্বাচন পরিচালনার জন্য আরও তহবিলের প্রয়োজন হয়, তাহলে হবে। যদি খরচ কম হয়, তবে বাড়তি অর্থ ফেরত দেওয়া হবে।

নির্বাচনি সংস্কার কমিশনের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মোট ১ হাজার ৯২৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়, যা ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ব্যয়ের দ্বিগুণ।

এর আগে, ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে ১৫৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিল এবং সেবার নির্বাচনে ব্যয় হয়েছিল মাত্র ২৮২ কোটি টাকা। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি অন্যান্য নির্বাচনে যেভাবে দুর্নীতি হতো তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তাহলে ব্যয় অনেকটাই কমে যাবে। সে ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বরাদ্দের আশপাশেই ব্যয় হবে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। বর্তমান বাজেটে নির্বাচন কমিশনের জন্য যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ১৪০.৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১৫৮.৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে নির্বাচন কমিশনের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ২৩০ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে করা হয়েছে ১ হাজার ১৪২ কোটি টাকা।
তবে, নির্বাচন কমিশন তাদের প্রাথমিক চাহিদা হিসেবে ৫ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছিল। এর মধ্যে ৩ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা জাতীয় সংসদ নির্বাচন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন এবং অন্যান্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের জন্য এবং ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ইভিএম মেরামতের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল।

এই পরিপ্রেক্ষিতে, চলতি অর্থবছরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে প্রস্তাবিত বাজেটে নির্বাচন কমিশনের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ যথেষ্ট নাও হতে পারে। অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হতে পারে, বিশেষ করে ইভিএম মেরামত ও নির্বাচনি সরঞ্জামাদি প্রস্তুতির জন্য।যেহেতু নির্বাচন কমিশন তাদের প্রাথমিক চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দের জন্য ৫ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা প্রস্তাব করেছিল এবং বর্তমান বাজেটে ২ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তাই প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি পূরণে সরকারি বাজেট থেকে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হতে পারে বা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকেও অনুদান বা ঋণ হিসেবে নেওয়া হতে পারে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!