বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ১১:৪৭ পিএম

ছয় দফা দাবিতে মাইলস্টোনে শিক্ষার্থীদের দিনভর বিক্ষোভ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ১১:৪৭ পিএম

ছয় দফা দাবিতে মাইলস্টোনে  শিক্ষার্থীদের দিনভর বিক্ষোভ

ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বিমান বিধ্বস্তে প্রাণহানির ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কলেজের সামনের সড়কের গোলচত্বরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ডাক দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ জন্য সকাল থেকে স্কুলের সামনে ভিড় করে নিহতদের স্বজন, শিক্ষার্থী ও উৎসুক জনতা। সকাল ৯টায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা নিহতদের নাম ও পরিচয় প্রকাশসহ ৬ দফা দাবি জানায়। সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পড়েন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও প্রেস উইংয়ের আরও দুই সদস্য। টানা আট ঘণ্টা কলেজ ক্যাম্পাসে অবরুদ্ধ থকেন তারা।

এর আগে গতকাল সকাল ১০টার দিকে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে কলেজ ক্যাম্পাসে যান উপদেষ্টারা। কিন্তু কলেজের সামনে বারবার ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন দুই উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব। এ সময় তারা কয়েক দফা শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে আশ্বাস দিলেও ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তা মানেনি। ফলে মাইলস্টোন থেকে বের হতেও পারেননি তারা। জানা যায়, এদিন বিকেল সোয়া ৬টার পর দুই উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব কলেজের ভেতর থেকে বের হন। এর আগে তারা কলেজের ৫ নম্বর একাডেমিক ভবনে অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকেন।

এদিকে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে তাদের সব দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। আসিফ নজরুল বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিচ্ছি, আমরা প্রতিটি দাবি পূরণ করব। বিশ্বাস রাখেন।’ তবে উপদেষ্টার বক্তব্যের পরও বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর পৌনে ১টার দিকে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার পর ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে আসেন আইন উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

আইন উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে শিক্ষার্থীরা তখনো বিক্ষোভ চালিয়ে যায়। এ সময় উপদেষ্টারা আবার কলেজের ভেতরে ঢুকে যান। তখন ৫ নম্বর ভবনের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের ছয়টি দাবির প্রতিটিই যৌক্তিক।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, সি আর আবরার, প্রেস সচিব শফিকুল আলম কলেজ পরিদর্শনে আসেন। সেখান থেকে বের হয়ে আসার সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ঘিরে ধরে। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করতে থাকে। দুই উপদেষ্টা পরে কলেজের ৫ নম্বর ভবনের নিচতলায় কনফারেন্স কক্ষে যান। তাদের সঙ্গে কলেজের শিক্ষকেরাও ছিলেন। সেখানে পাঁচ থেকে সাতজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধির সঙ্গে তাদের আলোচনা চলে। এ সময় বাইরে শত শত শিক্ষার্থীকে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।

দুপুর পৌনে ১টার দিকে উপদেষ্টারা কনফারেন্স কক্ষ থেকে বের হয়ে আসেন। এ সময় উপদেষ্টা আসিফ নজরুল শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। অভিভাবক হিসেবে ভালোবাসা জানাতে এসেছেন বলে জানান। আসিফ নজরুল বলেন, কোমলমতি শিশু যারা প্রাণ হারিয়েছে, তাদের সংখ্যা জানানো হবে। সরকার কন্ট্রোলরুম করবে। কন্ট্রোলরুম থেকে হতাহত ব্যক্তিদের তথ্য হালনাগাদ করে জানানো হবে। উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আরও বলেন, জনবহুল এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান না চালানোর ব্যবস্থা নিতে বিমান বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে। আসিফ নজরুল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘যে বাহিনী খারাপ ব্যবহার করেছে, সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাই। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। আপনাদের সব দাবি মেনে নিচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা এ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে, তাদের পাশে দাঁড়াই।  দোয়া করি।’

এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আন্দোলন হবে সম্পূর্ণ অহিংস এবং গণতান্ত্রিক। তবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থানে থাকবে আপসহীন। ‘ভয় নয়, আমরা চাই ন্যায়বিচার’Ñ এমন স্লোগান সামনে রেখে তারা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করে। শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবিগুলো হলোÑ নিহতদের সঠিক নাম ও তথ্য প্রকাশ, আহতদের সম্পূর্ণ ও নির্ভুল তালিকা প্রকাশ, শিক্ষকদের গায়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হাত তোলার মতো জঘন্য ঘটনার জন্য

জনসমক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া, নিহত প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পরিবারকে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, বিমান বাহিনীর ব্যবহৃত ঝুঁকিপূর্ণ ও পুরোনো প্লেনগুলো বাতিল করে আধুনিক প্লেন চালু করা, বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিবর্তন করে আরও মানবিক ও নিরাপদ ব্যবস্থা চালু করা।

আন্দোলনরত কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেছে, আমরা নিহতের সঠিক সংখ্যা জানি না। রাত ২টায় কলেজে একটি অ্যাম্বুলেন্স ঢুকে কিছুক্ষণ থেকে আবার বের হয়ে যায়। উদ্ধারকর্মীরা কী করছে বুঝতে পারছি না। আমাদের কিংবা অভিভাবক এবং শিক্ষকদেরও যেতে দেওয়া হচ্ছে না সেখানে। তাই আমরা বিক্ষোভ করছি। আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস দেখাচ্ছি। বিচারহীনতা, অবহেলা ও দমননীতির বিরুদ্ধে আমাদের দাবি স্পষ্ট, আমাদের অবস্থান অটল। আমরা আজও (গতকাল) দিনভর আন্দোলন চালিয়ে যাব।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!