বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১২:৩৪ এএম

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি

মেয়েকে আনতে গিয়ে নিহত রজনীর বাড়িতে চলছে মাতম

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১২:৩৪ এএম

মেয়েকে আনতে গিয়ে  নিহত রজনীর বাড়িতে  চলছে মাতম

মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তে নিহত রজনীর কুষ্টিয়ার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে এস এম জুমজুমকে আনতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়েছিলেন মা রজনী ইসলাম (৩৭)। মেয়েকে স্কুল থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও রজনীর কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) শাড়ি দেখে মরদেহটি রজনীর বলে শনাক্ত করেন স্বামী জহুরুল ইসলাম। মরদেহ বুঝে পাওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

রজনী ও জহুরুল দম্পতি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা। সকাল ৯টায় জানাজা শেষে ১০টার দিকে গ্রামের গোরস্তানে রজনীর মরদেহ দাফন করা হয়। এই দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে এস এম রুবাই একটি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। মেয়ে জুমজুমের সঙ্গে আরেক ছেলে এস এম রোহানও মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী। সে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। তবে অসুস্থ থাকায় সে স্কুলে যায়নি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় দুই দশক ধরে জহুরুল সপরিবারে ঢাকায় থাকেন। সেখানে তিনি গার্মেন্টস ব্যবসা করেন। গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পরিবারের কাছে রজনীর মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

পরে রাত ১০টার দিকে মরদেহ নিয়ে দৌলতপুরের গ্রামের বাড়িতে রওনা হন তারা। ভোরের দিকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাওট গ্রামে রজনীর বাবার বাড়িতে মরদেহটি নেওয়া হয়। সেখানে কিছুক্ষণ রাখার পর মরদেহ কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বাড়িতে নিয়ে যান তারা। সকালে দৌলতপুরে গ্রামের বাড়িতে মরদেহটি পৌঁছালে সেখানে ভিড় করেন আশপাশের বাসিন্দারা। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় রজনীর এমন করুণ মৃত্যুতে প্রায় সবার চোখ ছলছল করছিল। শোকে স্তব্ধ তিন সন্তানকে সান্ত¡না দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন পরিবারের অন্য সদস্যরা। জহুরুল ইসলাম বলেন, তিনি সোমবার ব্যবসার কাজে চট্টগ্রাম ছিলেন। স্কুলে বিমান দুর্ঘটনার খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকায় রওনা করেন। এর মধ্যে পরিবারের সদস্যরা জুমজুমকে স্কুল থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেন। কিন্তু রজনীর কোনো খোঁজ মিলছিল না।

পরিবারের সদস্যরা হন্যে হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে তার খোঁজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে এক আত্মীয় মুঠোফোনে জানান যে রজনীর মরদেহ সিএমএইচে আছে। তিনি দ্রুত সেখানে ছুটে যান। দূর থেকে শাড়ি দেখে চিনতে পারেন, মরদেহটি রজনীর। জহুরুল বলেন, ‘যতটুকু দেখেছি, তাতে রজনীর মাথার পেছনে আঘাত। শরীরের কোথাও পোড়া চিহ্ন নেই। ধারণা করছি, দুর্ঘটনার সময় বিমানের কোনো অংশ তার মাথায় গিয়ে লেগেছে। এটা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। মেনে নেওয়া যায় না। আবার না মেনেও উপায় নেই।’ রজনী তিন ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার বিষয়ে খুবই আন্তরিক ছিলেন জানিয়ে জহুরুলের বড় ভাই আহসানুল ইসলাম বলেন, মেয়ে জুমজুমকে আনতে স্কুলটিতে গিয়েছিলেন রজনী। বেলা ১টার দিকে ক্লাস শেষ করে জুমজুম ক্যান্টিনে ছিল। স্কুলে মায়ের সঙ্গে তার দেখা হয়নি, কথাও হয়নি। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে জুমজুমের খোঁজে পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য স্কুলে ছুটে যান। 

রজনীর দাফনে উপস্থিত ছিলেন দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল হাই সিদ্দিকী। তিনি বলেন, একটা পরিবারের যে ক্ষতি হলো, সেটি কখনোই পূরণ হওয়ার নয়। মায়ের কোনো বিকল্প হতে পারে না। সন্তানেরা যাতে ভালো থাকে, সেই দোয়া থাকবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!