বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নীলফামারী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১২:৩৭ এএম

‘ওরাও তো আমার সন্তান, ওদের একা রেখে কী করে চলে আসি’ মৃত্যুর আগে স্বামীকে বলেছিলেন মাহেরীন চৌধুরী

নীলফামারী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১২:৩৭ এএম

‘ওরাও তো আমার সন্তান, ওদের একা রেখে কী করে চলে আসি’ মৃত্যুর আগে স্বামীকে বলেছিলেন মাহেরীন চৌধুরী

২০ শিক্ষার্থীর জীবন বাঁচিয়ে নিজে দ্বগ্ধ হওয়া শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর আলী হেলাল দাফনকার্য শেষ করে চোখভেজা কান্নাজড়িত কণ্ঠে সংবাদকর্মীদের বলেন, “মৃত্যুর আগে আমি ওকে (মাহেরীনকে) জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি তোমার নিজের দুই সন্তানের কথা একবারও ভাবলে না? সে বলেছিল, ‘ওরাও তো আমার সন্তান। ওদের একা রেখে আমি কী করে চলে আসি?’ আমি আমার সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করেছি ওকে বাঁচাতে, কিন্তু পারিনি। আমার দুইটা ছোট ছোট বাচ্চা এতিম হয়ে গেল।”

রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ২০ শিক্ষার্থীর জীবন বাঁচিয়ে চিরবিদায় নেওয়া সেই শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকার বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।

মাহেরীনের স্বামী বলেন, ‘শেষ রাতে হাসপাতালে ওর সঙ্গে আমার শেষ দেখা। আইসিইউতে শুয়ে শুয়ে ও আমার হাত নিজের বুকের সঙ্গে চেপে ধরেছিল। বলেছিল আমার সঙ্গে আর দেখা হবে না। আমি ওর হাত ধরতে গিয়েছিলাম, কিন্তু শরীরটা এমনভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে ঠিকভাবে ধরতেও পারিনি।’

মনসুর হেলাল বলেন, ‘ও অনেক ভালো মানুষ ছিল। ওর ভেতরে একটা মায়া ছিল সবাইকে ঘিরে। আগুন লাগার পর যখন অন্যরা দৌড়াচ্ছিল, ও তখন বাচ্চাদের বের করে আনছিল। কয়েকজনকে বের করার পর আবার ফিরে গিয়েছিল বাকি বাচ্চাদের জন্য। সেই ফেরাটা আর শেষ হয়নি। সেখানেই আটকে পড়ে, সেখানেই পুড়ে যায় আমার মাহেরীন।’

জানা যায়, গত সোমবার দুপুরে প্রতিদিনের মতো শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছিলেন মাহেরীন। হঠাৎ করেই প্রশিক্ষণ বিমানটি ভবনে আছড়ে পড়ে, মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। দগ্ধ শরীর নিয়েও তিনি ২০ শিক্ষার্থীকে নিরাপদে বের করে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যান। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

মাহরিন চৌধুরী নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বগুলাগাড়ি চৌধুরীপাড়ার মরহুম মুহিত চৌধুরীর মেয়ে। মাহেরীন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা মিডিয়াম শাখার তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির কো-অর্ডিনেটর। সম্প্রতি গ্রামের বগুলাগাড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজে উন্নয়নমূলক কাজের স্বপ্ন নিয়ে তিনি সেখানে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন বলে জানান তার স্বামী মনসুর হেলাল।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর উত্তরায় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে বিধ্বস্ত হলে স্কুলের একটি ভবনে আগুন ধরে যায়। এ সময় ওই ভবনে ক্লাস করছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের মধ্যে অন্তত ২০ জনকে আগুন থেকে উদ্ধার করেন মাহেরীন চৌধুরী। তিনি নিজে আর বের হতে পারেননি।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!