বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসান আরিফ

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০১:২৮ এএম

বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যে অচলাবস্থা

হাসান আরিফ

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ০১:২৮ এএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও কূটনীতিতে চলছে একপ্রকার অচলাবস্থা। বাংলাদেশ একের পর এক প্রস্তাব পাঠালেও ভারতের পক্ষ থেকে নেই কোনো সাড়া। ঢাকার উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক যোগাযোগের চেষ্টা, চিঠি প্রেরণ ও সম্ভাব্য বৈঠকের তারিখ প্রস্তাব সবই মুখ থুবড়ে পড়ছে নয়াদিল্লির নীরবতায়।

সীমান্তে স্থবির হাট, অনিয়মিত যৌথ বৈঠক এবং সেপা বা ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি নিয়ে গতিশূন্য আলোচনার ফলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য অংশীদারত্ব নতুন করে মূল্যায়নের সময় এসেছে।  

বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বসবাসরত সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য সহজলভ্য করার লক্ষ্যে চালু হওয়া বর্ডার হাট বর্তমানে পুরোপুরি বন্ধ। বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে স্থবিরতা দেখা যাচ্ছে।

বন্ধ হয়ে আছে যৌথ বাণিজ্য বৈঠকগুলো, আর সেপা আলোচনাও এগোয়নি। বাংলাদেশের পক্ষ্য থেকে প্রত্যাশিত গতিতে এগোলেও ভারত তা স্থবির করে রেখেছে। ফলে ঢাকা এখন দ্বিপক্ষীয় গতি ফিরিয়ে আনতে নতুন উদ্যোগের খোঁজ করছে।

সীমান্ত হাট: এক সম্ভাবনার অপমৃত্যু

২০১০ সালের ২২ অক্টোবর স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) আওতায় ২০১১ সালে কুড়িগ্রামের বালিয়ামারিতে প্রথম সীমান্ত হাট চালু হয়। এরপর ২০১৫ সালের মধ্যে ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জ ও সিলেটে আরও ছয়টি হাট চালু হয়। ২০২১ সালে চালু হয় সুনামগঞ্জের সায়েদাবাদ, বাগানবাড়ি এবং সিলেটের ভোলাগঞ্জ হাট। এ ছাড়া আরও তিনটি হাটের অবকাঠামো নির্মাণ চলমানসহ ছয়টি নতুন হাটের প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছিল। 

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং তার ভারতে পলায়নের পর থেকে এ উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় যারা এসব হাটের ইজারা নিয়েছিলেন, তাদের অধিকাংশই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। পট পরিবর্তনের পর তারা সবাই আত্মগোপনে রয়েছেন।

ফলে সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত অজুহাতে সব বর্ডার হাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা সীমান্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জন্য বড় ধাক্কা। ত্রিপুরা ও মেঘালয় সীমান্তে ভারতের দশটি হাটের বেশির ভাগই অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ভারতের অনাগ্রহ ও পরিচালনায় জটিলতা হাটগুলোকে কার্যত অচল করে দিয়েছে। ভারতের দিক থেকে ধারাবাহিক অসহযোগিতা করায় বাংলাদেশের যেসব জেলায় এই হাট ছিল, সেসব জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তা আনুষ্ঠানিক বন্ধ ঘোষণা করেন। 

বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই হাটগুলো শুধু পণ্য বিনিময়ের কেন্দ্র নয় বরং সীমান্ত অঞ্চলে পারস্পরিক আস্থা, সামাজিক সম্প্রীতি ও আঞ্চলিক অর্থনীতির চালিকাশক্তি হতে পারত।

ভারতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিইউটিএস ইন্টারন্যাশনালের তথ্য মতে, বন্ধ থাকা বালাত ও কালাইচর হাটের সম্মিলিত বাণিজ্য ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫৪৬ মিলিয়ন এবং ত্রিপুরার হাটগুলোতে বার্ষিক প্রায় ১৪৮ মিলিয়ন লেনদেন হতো। কিন্তু বর্তমানে তা শূন্যের কোঠায়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সীমান্ত হাটগুলো স্থানীয় জনগণের জন্য অত্যন্ত কার্যকর ছিল। এখন এগুলো বন্ধ থাকায় স্থানীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভারতীয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে খুব দ্রুত পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হলেও তারা মূলত নীরব ভূমিকা পালন করছে।

সুনামগঞ্জের ছাতকের স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিক মিয়া বলেন, আমরা ভেবেছিলাম- এই হাট চালু থাকলে আমাদের পণ্য বিক্রির সুযোগ বাড়বে। কিন্তু হঠাৎ বন্ধ হওয়ায় এখন আমরা আবার পুরোনো কষ্টে ফিরে গেছি।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিলস) গবেষক ড. ফারহানা হক বলেন, বর্ডার হাট ছিল একটি মানুষ-নির্ভর কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংযোগের মডেল। ভারতের অনাগ্রহ সেই মডেলকে ধ্বংস করেছে।

বিলস-এর ২০২৪ সালের গবেষণায় বলা হয়েছে, সীমান্ত অঞ্চলে সামাজিক ও ভাষাগত মিল থাকা সত্ত্বেও ভারতের পক্ষ থেকে গঠনমূলক অগ্রগতি না থাকায় সীমান্ত হাট কার্যত বন্ধ। সমস্যা সমাধানে উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক উদ্যোগ, সমন্বিত বাণিজ্যনীতি এবং স্থানীয় উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়ার মাধ্যমে তা ফিরিয়ে আনা উচিত। তবে সীমান্তে আস্থা ও সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনার এই প্রক্রিয়ায় ভারতের সক্রিয় অংশগ্রহণই হতে পারে সমস্যার সমাধান।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডেকান হেরাল্ড জানিয়েছে, সীমান্ত হাট কেবল বাণিজ্য নয়, বরং মানবিক সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হতে পারত।

বাণিজ্য আলোচনায় দীর্ঘ প্রতীক্ষা ও ভারতীয় নীরবতা

বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যসচিব পর্যায়ের সর্বশেষ বৈঠক (সিএসএলএম) হয়েছিল ২০২২ সালের ৪ মার্চ নয়াদিল্লিতে। পরবর্তী সভার জন্য বাংলাদেশ ২০২৩ সালে তিনটি সম্ভাব্য তারিখ প্রস্তাব করলেও ভারত কোনো সাড়া দেয়নি। সর্বশেষ ২০২৫ সালের জুন-জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসের জন্য ভার্চুয়াল অথবা সরাসরি বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়, কিন্তু সেখানেও ভারতীয় পক্ষ নীরব রয়েছে।

একইভাবে বাণিজ্যবিষয়ক যৌথ কার্যনির্বাহী দল (জেডডব্লিওজি)-এর ১৫তম সভা হয়েছিল ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায়। ১৬তম সভার জন্য ভারতকে আয়োজক হিসেবে প্রস্তাব করা হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা। এ বিষয়ে গত ২০ মে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় জানানো হয়, বৈঠক না হলে বাণিজ্যিক অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হবে।

বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য ড. আবদুল লতিফ বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে কোনো প্রতিবন্ধকতা হলে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা দরকার। সিএসএলএম ও জেডব্লিওজির মতো বৈঠকগুলোই সে জায়গা তৈরি করে।

বাংলাদেশ ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি ড. মাসুদা হক বলেন, ভারতীয় পক্ষ যদি বারবার প্রস্তাবে সাড়া না দেয়, তাহলে আমাদের কূটনৈতিক পর্যায়ে চাপ তৈরি করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

সেপা আশা দেখালেও নেই গতি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯৭২ সালে স্বাক্ষরিত বাণিজ্য চুক্তি ২০১৫ সালে নবায়ন হয়। সাপটা ও আপটা দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল ও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বাণিজ্য চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে সেপা (ঈঊচঅ) সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত হয় এবং ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এই আলোচনার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।

২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য তথ্য বিনিময় হলেও এখন পর্যন্ত ভারতের পক্ষ থেকে আলোচনার পরবর্তী ধাপে কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের কূটনৈতিক মহলে এটি হতাশার জন্ম দিয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সেপা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। আমরা চাই একটি শক্তিশালী ও বাস্তবসম্মত চুক্তি হোক। তবে আলোচনার গতি নির্ভর করে দুই পক্ষের প্রস্তুতির ওপর। এদিক দিয়ে বাংলাদেশ নিজেদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ভারতকে জানানো হয়েছে। কিন্তু ভারত এই বিষয়ে কোনো সাড়া দিচ্ছে না।

সীমান্ত উত্তেজনা ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ

সীমান্ত এলাকায় বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও উত্তেজনা বাড়ছে। ভারতের সংসদে জানানো হয়েছে, এখনো প্রায় ৮৬৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার সীমান্ত ফেনসিং অসম্পূর্ণ, যার বেশির ভাগ অংশ জটিল এলাকাভিত্তিক এবং জমি অধিগ্রহণ ও নিরাপত্তা বাধায় আটকে আছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ৫৫তম ডিজি পর্যায়ের সীমান্ত বৈঠকেও কাঁটাতারের বেড়া, অনুপ্রবেশ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানা ইস্যু আলোচনায় এলেও অগ্রগতি খুবই সীমিত। অন্যদিকে, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে (হরিয়ানা, রাজস্থান, আসাম) বাংলাদেশি সন্দেহে বহু বাংলা ভাষাভাষী আটক ও ফেরত পাঠানোর ঘটনা নতুন সংকট তৈরি করেছে। দ্য গার্ডিয়ান এবং ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে ভারতীয় নাগরিকদের জোর করে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।

বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য

বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বরাবরই ভারত এগিয়ে। যার মানে, ভারত থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করে, তার তুলনায় রপ্তানি খুবই নগণ্য। সর্বশেষ গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশ ৯০০ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। তার বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র পাওয়া গেছে। ২০১১ সালে ভারত বাংলাদেশকে অস্ত্র ও মাদক বাদে সব পণ্যে শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুবিধা দেয়। যদিও তা কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে ধীরে ধীরে দেশটিতে রপ্তানি বাড়তে থাকে। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানি ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়।

তবে সম্প্রতি ভারতের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি ফের হোঁচট খেয়েছে। চলতি বছরের মে মাসে নতুন করে স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে ভারত সরকার।

এর মধ্যে স্থলবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি করা যাবে না বলে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করে। ওই আদেশে বলা হয়, এখন থেকে শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন।

এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামে ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন (এলসিএস) বা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত ও আসবাব রপ্তানি করা যাবে না।

পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন বা এলসিএসের জন্যও এটি প্রযোজ্য হবে। ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত আদেশ জারির পর দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে বিধি-নিষেধের আওতায় থাকা পণ্য রপ্তানি বন্ধ রয়েছে বলে স্থলবন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

এদিকে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তারা বিষয়টি নিয়ে সরকারি পর্যায়ে আলাপ-আলোচনার পাশাপাশি ভারতের সঙ্গেও এ নিয়ে আলোচনা করেছে, কিন্তু বরাবরের মতোই যার ফলাফল ছিল শূন্য।

এর আগে গত এপ্রিলে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে নিজ দেশের বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশের পণ্য যাওয়ার ব্যবস্থাও প্রত্যাহার করে ভারত। এপ্রিল মাসে ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) এ সুবিধা বাতিলে আদেশ জারি করে। ২০২০ সালের ২৯ জুন এ-সংক্রান্ত এক আদেশে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল।

বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে ভারতে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় তৈরি পোশাক। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতে ৫৪ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা। ভারত স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করায় এ ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশের রপ্তানিকারকেরা।

এ ছাড়া ভারতের নতুন বিধি-নিষেধের কারণে কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য রপ্তানিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। গত অর্থবছর ভারতে ১৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলারের প্লাস্টিক পণ্য, ৩ কোটি ১৩ লাখ ডলারের তুলা ও তুলার সুতার ঝুট এবং ৬৫ লাখ ডলারের আসবাব রপ্তানি হয়। স্থলবন্দর ব্যবহার করে এসব পণ্য বেশি রপ্তানি হতো। এখন স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানিতে বিধি-নিষেধ দিয়েছে ভারত। ফলে এসব পণ্যের রপ্তানিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

Shera Lather
Link copied!