বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০১:৫২ এএম

প্রশাসনিক জটিলতায় সরবরাহ করা যাচ্ছে না এমআরএম কিট : সায়েদুর রহমান

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০১:৫২ এএম

প্রশাসনিক জটিলতায় সরবরাহ করা যাচ্ছে না এমআরএম কিট : সায়েদুর রহমান

ওষুধের মাধ্যমে মাসিক নিয়মিতকরণ বা এমআরএম সেবা না পাওয়ায় দেশে প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। অপরিকল্পিত গর্ভধারণের কারণে মাসিক বন্ধ থাকলে সর্বশেষ মাসিক হওয়ার ৭০ দিন পর নিয়ম মেনে এই ওষুধ খেলে মাসিক শুরু হয়। কিন্তু সচেতনতা, প্রচারণা ও সেবা প্রদানে অনীহার কারণে এমআরএম সেবা না পাওয়ায় দেশে অনেক প্রসূতিই ভুল পদ্ধতিতে গর্ভনিরোধ করতে গিয়ে মৃত্যুর শিকার হন।

আর এর অন্যতম কারণ এমআরএম শনাক্তকরণ কিট, যা প্রশাসনিক জটিলতার কারণে ঠিকমতো সরবরাহ করা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, কিছু নীতিগত ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে, এমআরএম কিট সরবরাহ না থাকার কারণে পরিকল্পনা থাকা সত্ত্বেও  অনিরাপদ গর্ভপাত রোধ কাক্সিক্ষত সফলতা অর্জন সম্ভব হয়নি। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সমন্বিতভাবে কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি। 

গতকাল বুধবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ওয়াইডব্লিউসিএ মিলনায়তনে ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স : ডিসকাশন অন অ্যাকসেসেবল অ্যান্ড ডিগনিফাইড এমআর সার্ভিস’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান আরও বলেন, মাসিক নিয়মিতকরণের ওষুধ সরবরাহে ওষুধ বিক্রেতাদের যুক্ত করার ক্ষেত্রে আরও ভাবার প্রয়োজন আছে। কারণ যথাযথ প্রশিক্ষণ, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ছাড়া এই প্রক্রিয়ায় তাদের যুক্ত করা ঝুঁকিপূর্ণ। নানাবিধি সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আগামী তিন মাসের মধ্যে মাসিক নিয়মিতকরণ উপকরণ এবং ওষুধের সবরাহ স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনগুলোর কার্যক্রম ও গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে যেসব সুপারিশ উঠে আসে, তা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপান্তর পরিকল্পনায় যুক্ত করা হবে বলে আশ^স্ত করে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ আহ্বান করেন।সভায় স্বাস্থ্যবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধি, সিএসও প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী এবং নারীপক্ষের সদস্য ও কর্মীসহ মোট ৭০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন নারীপক্ষের সভানেত্রী গীতা দাস। সভাটি সঞ্চালনা করেন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. নিলুফার পারভীন।

আলোচনায় জানা যায়, দেশে এমআর চিকিৎসা পদ্ধতি ১৯৭২ সাল থেকে সরকার স্বীকৃত। দেশের সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে এই সেবা পাওয়া যায়। ২০১৮ সালের তথ্য অনুযায়ী দেশে ১২টি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এমআরএম ওষুধ তৈরি করে। কিন্তু সহজলভ্য ও কার্যকর হওয়া সত্ত্বেও ঔষধ প্রশাসন ও ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির অবহেলার কারণে এমআরএম নিয়ে প্রচারণা কম। অনেক ক্ষেত্রে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান এ ধরনের সেবা দেওয়ার সামাজিক, ধর্মীয় ইত্যাদি কারণে অনীহাও দেখায়। ফলে অপরিকল্পিত গর্ভধারণ থেকে মুক্তি পাওয়ার নিরাপদ পদ্ধতি থাকা সত্ত্বেও অনেক নারীই হাতুড়ে চিকিৎসক, কবিরাজ, অদক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে গর্ভপাত করাতে যান। ফলে অনেকেরই মৃত্যু হচ্ছে। আবার কেউ কেউ প্রাণে বেঁচে গেলেও ভুগছেন দীর্ঘ শারীরিক জটিলতায়। ছয়টি জেলার ১৫টি উপজেলা ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে এই জরিপ পরিচালনা করে তারা।

এ সময় এক জরিপের বিষয়ে উল্লেখ করে জানানো হয়, বেশির ভাগ সন্তান ধারণক্ষম নারী এবং কম বয়সি ও নতুন যৌনকর্মীরা এমআরএম বিষয়ে জানেন না। অনেকেই এর-ওর মুখে শুনে এই ওষুধ কিনতে আসেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারী নিজে নন, পুরুষ বা পরিবারের অন্যান্য সদস্য এটি কেনেন। স্বাস্থ্য সেবাদানকারীদের এমআরএম-বিষয়ক নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিলেও সামাজিক ও ধর্মীয় নানা কারণ দেখিয়ে সেবা দিতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া ওষুধ বিক্রেতাদের এমআরএম বিষয়ে কোনো প্রশিক্ষণ এবং জাতীয় এমআরএম নির্দেশিকা সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই।

সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে এমআরএম ওষুধ সরবরাহ অপর্যাপ্ত এবং সেবাদানকারীদের আচরণও নেতিবাচক। এ ছাড়া সরকারি পর্যায় থেকে পর্যবেক্ষণ ও জবাবদিহির ঘাটতি রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে নেই কাউনসেলিংয়ের ব্যবস্থা। গর্ভধারণের ১৬ সপ্তাহ পর পর্যন্ত জরায়ুতে একটি রক্তপি- হিসেবে থাকে। ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শে এসব ওষুধ খাওয়া নিরাপদ। তবে তা নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে খেতে হবে। কিন্তু দেশে অনেক জরুরি ওষুধের মতো এটিও প্রেসক্রিপশন ছাড়াও বিক্রি হয়। ঠিকমতো গাইডলাইন মেনে এ ধরনের ওষুধ না খেলে অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে অনেকেই মারা যান এবং অন্যান্য শারীরিক জটিলতার মুখোমুখি হন।

এ সময় বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এমসিএইচ-সার্ভিসেস (এ অ্যান্ড আরএইচ) ইউনিটের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. মনজুর হোসেন, আইপাস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. সাঈদ রুবাযেত, বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার প্রোগ্রাম অফিসার ড. মো. নুরুল ইসলাম খান। এ ছাড়া প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জোবায়দা বেগম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফি আহমেদসহ আরও অনেকে।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!