এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে শুক্রবার তিমুর-লেস্তেকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছেন তৃষ্ণা রানী। এ ছাড়া সিনহা জাহান শিখা, শান্তি মার্ডি, নবীরণ খাতুন, মুনকি আক্তার ও মোসাম্মৎ সাগরিকা গোল পান। এর আগে স্বাগতিক লাওসের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা।
আগামী রোববার (১০ আগস্ট) গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া।
ভিয়েনতিয়েনের নিউ লাওস ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে খেলার প্রথমার্ধে ৪টি এবং পরের অর্ধে বাকি ৪টি গোল করে বাংলাদেশ। খেলার প্রথম দিকে গোল পায়নি মেয়েরা। গোলের জন্য ২০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে তাদের।
কেননা, আক্রমণভাগের খেলোয়াড়েরা অনেক সুযোগ হাতছাড়া করেন। আক্রমণে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেন। একের পর এক সুযোগ নষ্ট করার পর দলকে আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন সিনহা জাহান শিখা। ২০ মিনিটে স্বপ্নার কর্নার থেকে বল পেয়ে হেডে গোল করেন এই মিডফিল্ডার। ৩৩ মিনিটে স্কোরলাইন ২-০ করেন শান্তি মার্ডি। তার নেওয়া কর্নার থেকে উড়ে আসা বল তিমুর-লেস্তের পোস্টে লেগে জালে চলে যায়।
এরপর মার্ডির কর্নার থেকে হেডে গোল করেন নবীরণ খাতুন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে মোসাম্মৎ সাগরিকার বাড়ানো বল আলতো শটে জালে জড়ান তৃষ্ণা রানী। দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে কোণঠাসা হয়ে পড়ে তিমুর-লেস্তে। বাংলাদেশের আক্রমণ ঠেকিয়েই সময় পার করতে হয়েছে তাদের। ৫৭ মিনিটেই পঞ্চম গোল পেয়ে যায় বাংলাদেশ।
গোলমুখে জটলা থেকে নেওয়া শিখার শট রুখে দিলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি তিমুর-লেস্তের গোলকিপার হালিনা মার্চি। বক্সের মধ্যে বল পেয়ে ফিরতি শটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের পঞ্চম গোল আদায় করে নেন তৃষ্ণা। ৭৩ মিনিটে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বল কেড়ে গোলমুখের দিকে এগিয়ে যান সাগরিকা। বক্সের সামনে তখন তিমুর-লেস্তের গোলকিপার মার্চি ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।
তাকে কাটিয়েই স্কোর লাইন ৬-০ করেন এই ফরোয়ার্ড। ৮২ মিনিটে ডান পাশ ধরে আক্রমণে ওঠা সাগরিকার বাড়ানো বল জালে ঠেলে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন তৃষ্ণা। আর রেফারির শেষ বাঁশি বাজানোর আগে অষ্টম গোলটি উপহার দেন মুনকি। সম্প্রতি মিয়ানমারে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে অসাধারণ খেলেছে বাংলাদেশ সিনিয়র নারী দল। তারা প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করার ইতিহাস গড়েছে।
সিনিয়র দলের পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে জুনিয়র নারী দলও। লাওসে অনূর্ধ্ব ২০ এশিয়ান বাছাইপর্ব উতরাতে পারলে নতুন ইতিহাস গড়বে বাংলাদেশের মেয়েরা। বাছাইপর্বে ‘এইচ’ গ্রুপে থাকা বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দল দুই ম্যাচ খেলে ৬ পয়েন্ট অর্জন করেছে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠবে বাংলাদেশ।
আর গ্রুপের রানার্সআপ হলেও টুর্নামেন্টের মূল পর্বে টিকিট কাটার সুযোগ থাকবে তাদের। কারণ, বাছাইপর্বের আট গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল ও শীর্ষ তিন রানার্সআপ দল এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলবে। আগামী বছর থাইল্যান্ডে হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্ব।