ঢাকা শনিবার, ০৪ অক্টোবর, ২০২৫

রংপুরে ৩ উপজেলায় ২৮ জনের  শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ

রংপুর ব্যুরো
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৫, ১১:৫০ পিএম

রংপুরের মিঠাপুকুরে অ্যানথ্রাক্সে (তড়কা রোগ) আক্রান্ত সন্দেহে ৭ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত তাদের মধ্যে ৫ জনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এ রোগে আক্রান্ত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ২০ জনের মৃত্যুঝুঁকি থাকে।
অন্যদিকে সিভিল সার্জন ডাক্তার শাহিনা আক্তার জানিয়েছেন, রংপুরের তিনটি উপজেলা পীরগাছা, কাউনিয়া ও মিঠাপুকুরে এখন পর্যন্ত ২৮ জন ব্যক্তির শরীরে এনথ্রাক্স ধরা পড়েছে। প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা সচেতন রয়েছেন। আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কিছু নেই।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মিঠাপুকুর উপজেলার ইমাদপুর ইউনিয়নের আমাইপুর সোনারপাড়া গ্রামের চারজন- সোহরাব হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, মনির হোসেন ও মজিবর রহমানের শরীরে চর্মরোগ (ঘা) দেখা দিলে এলাকায় অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্তরা গত ২০ সেপ্টেম্বর রহমতপুর বাজার থেকে ক্রয় করা মাংস খেয়েছিলেন। পরে ফ্রিজে থাকা ওই মাংস উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের মাধ্যমে পরীক্ষায় জানা যায়, জবাই করা গরুটি অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত ছিল। খবরটি ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় ভীতি তৈরি হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রোগাক্রান্ত গরুর মাংস খাওয়া কয়েকজনের নমুনা পরীক্ষার জন্য রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়। পরীক্ষায় দুজনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ ধরা পড়ে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক (রোগনিয়ন্ত্রণ) এম এ হালিম লাভলু বলেন, ‘অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত সন্দেহে ৭ জনের চিকিৎসা চলছে। তাদের মধ্যে ৫ জন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছেন। সময়মতো চিকিৎসা নিলে এ রোগে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলতাব হোসেন বলেন, ‘রোগাক্রান্ত গরুর মাংস খাওয়া অনুচিত। এ রোগ মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত পশুর মৃতদেহ অন্তত ছয় হাত মাটির নিচে চাপা দিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জনসচেতনতা বাড়াতে উঠান বৈঠক, মাংস বিক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা এবং নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে উঠান বৈঠক, মাংস বিক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।