অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখলেও বাংলাদেশের শ্রমবাজারে উদ্বেগজনক সংকেত দেখা দিয়েছে, এমন মন্তব্য করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশের জাতীয় দারিদ্র্যের হার ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেড়ে ২১.২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। দারিদ্র্যের হার ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২০.৫ শতাংশ ছিল। এ সময়ে প্রবৃদ্ধি টিকে থাকলেও কর্মসংস্থান কমছে, বিশেষ করে নারীদের অংশগ্রহণে বড় ধস নেমেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিসে আয়োজিত বাংলাদেশ আপডেট শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংস্থাটি বলছে, কর্মসংস্থান সংকট এখন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নীতিগত চ্যালেঞ্জ। তরুণ ও নারীদের জন্য উৎপাদনমুখী খাতে কর্মসংস্থান না বাড়লে দীর্ঘমেয়াদে সামাজিক বৈষম্য বাড়বে এবং প্রবৃদ্ধি টেকসই থাকবে না।
বাংলাদেশ আপডেটে বলা হয়েছে, ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশের শ্রমশক্তি অংশগ্রহণের হার ৬০.৯ শতাংশ থেকে কমে ৫৮.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। এর মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণ কমেছে সবচেয়ে বেশি। একই সময়ে কর্মসংস্থান-জনসংখ্যা অনুপাতও ২.১ শতাংশ পয়েন্ট হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬.৭ শতাংশে, আর বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ৩.৭ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের ভাষ্য, আরও ৩০ লাখ কর্মক্ষম মানুষ শ্রমশক্তির বাইরে ছিলেন, যাদের মধ্যে ২৪ লাখ নারী ছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিল্প ও সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি থাকলেও নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না, বরং বিদ্যমান চাকরিও কমছে। সব মিলিয়ে গড়ে ২.৬ শতাংশ চাকরি হ্রাস পেয়েছে, যার মধ্যে সেবা খাতে পতন ছিল সবচেয়ে বড়।
বিশ্বব্যাংক বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিল্প ও সেবা খাতে প্রবৃদ্ধির সঙ্গে চাকরির সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। অর্থাৎ জিডিপি বাড়লেও সেই হারে চাকরি বাড়ছে না। কেবল কৃষি খাতে কিছুটা উন্নতি দেখা যাচ্ছে, যেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি শ্রমিক যুক্ত হয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন