ভুয়া তথ্য দিয়ে ‘জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে সরকারি তালিকায় নাম দিয়েছেনÑ এমন অভিযোগ যাচাইয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতনের অভিযোগে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ১০ সদস্যসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ১১ নভেম্বরের মধ্যে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন ভুক্তভোগী সাবিনা ইয়াসমিন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. জাকির হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আসামিরা হলেন, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ভেরিফিকেশন অফিসার ইফতেখার হোসেন, কর্মকর্তা সাগর, মেহেদী হাসান প্রিন্স, আফজালুর রহমান সায়েম, সাইদুর রহমান শাহিদ, ফাতেমা আফরিন পায়েল, রেজা তানভীর, আলিফ, জাহিদ, এক্সিকিউটিভ মেম্বার সাবরিনা আফরোজ শ্রাবন্তী, সোনিয়া আক্তার লুবনা, শামীম রেজা খান ও রাকিন।
মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, তার স্বামী ও সন্তানরা গত ১৯ জুলাই চিটাগং রোড এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন। ওইদিন তার স্বামীর হাঁটুর নিচে গুরুতর আঘাত লাগে ও ছেলের পা ভেঙে রগ ছিঁড়ে গেছে। বিগত সরকারের পতনের পর জুলাই যোদ্ধাদের মূল্যায়নের জন্য জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠিত হয়। চলতি বছরের ২০ মার্চ বেলা ১১টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালসংলগ্ন কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের’ অফিসে গেলে ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন ও অন্যান্য আসামি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বাদী সাবিনা ইয়াসমিনের স্বজনরা কীভাবে আহত হন জানতে চান।
তারা আহত হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন। তাদের জানানো হয়, তাদের ছেলে সেখান থেকে এক লাখ টাকার চেক নিয়ে গেছে। বুলবুল জুলাই যোদ্ধা গেজেট নম্বর এবং মেডিকেল কেস আইডি দেখালে ইফতেখার সাগর ও মেহেদীকে ডেকে আনে। তারা সাবিনা ইয়াসমিনকে বসিয়ে রেখে তার স্বামী বুলবুলকে একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। কয়েক ঘণ্টা পার হয়ে গেলে স্বামীকে না পেয়ে ফোন দেন সাবিনা। সাগর রিসিভ করে বলেন, ভুয়াযোদ্ধাকে জামাই আদর চলতেছে। সাগর সাবিনাকেও ভেতরে যেতে বলেন। তারা তাকেও মারধর করেন।
সাবিনার অভিযোগ, আসামিরা তাদের ‘ভুয়া জুলাই যোদ্ধা’ বলে হুমকি দেন, জোরপূর্বক মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন এবং তার ব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেন। নির্যাতনের ফলে তার স্বামী মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।