এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ফিরতি ম্যাচে গতকাল হংকংয়ের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করল বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে পেনাল্টি থেকে গোল হজমের পর দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের হয়ে গোল করেন ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন। এর আগে গত ৯ অক্টোবর জাতীয় স্টেডিয়ামে হংকংয়ের বিপক্ষে ৪-৩ গোলে হেরেছিল হামজা-জামালরা। আগামী ১৮ নভেম্বর ভারত ও ৩১ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাছাই পর্বের বাকি দুটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ।
বাছাই পর্বে ‘সি’ গ্রুপের টেবিলে ২ পয়েন্ট নিয়ে এখন টেবিলের তলানিতে রয়েছে বাংলাদেশ। ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে হংকং। বাছাই পেরুনোর সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে ফিরতি ম্যাচে হংকংয়ের বিপক্ষে জয় প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু শেষ দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে কিছুটা আশার সঞ্চার করলেও পূর্ণতা দিতে পারলেন না হামজা-শমিতরা। খেলার শুরু থেকেই দুদল রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে। শুরুর প্রতিরোধ ভাঙে ৩৬ মিনিটে। বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে গড়বড় করে বক্সেই ফাউল করে বসেন কাজী তারিক। পেনাল্টি সুযোগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় হংকং। রাকিব হোসেনের শেষ দিকের গোলে সমতায় ফিরে ম্যাচ জমিয়ে তুলে বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়ের চাওয়া পূরণ হলো না কোচ হাভিয়ের কাবরেরার দলের।
শুরুর একাদশে জায়ান আহমেদ, শমিত সোম ও তপু বর্মণ রাখেন কোচ কাবরেরা। রক্ষণের দৃঢ়তা ধরে রাখার ছকেই শুরু করে বাংলাদেশ। তাতে রক্ষণে কয়েক দফা হানা দিলেও মিতুল মারমাকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলতে পারছিল না হংকং। ২২ মিনিট বল নিয়ে দারুণ ক্ষিপ্রতায় এগিয়ে যাওয়া শমিতকে পেছন থেকে জার্সি ধরে টেনে ফেলে দেন হংকংয়ের এক ডিফেন্ডার। বক্সের একটু ওপর থেকে হামজার নেওয়া ফ্রি-কিক রক্ষণ দেয়ালে লেগে বাইরে যায়। তালগোল পাকিয়ে ৩৬ মিনিটে বিপদ ডেকে আনেন তারিক।
সতীর্থের পাস ধরতে গিয়ে বলে স্পর্শ জোরে হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারান। এরপর পা কিছুটা পিছলে যাওয়ায় তাড়াহুড়া করে নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে ফের্নান্দো পেরেইরাকে বক্সে ফাউল করে বসেন তিনি। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। মিতুলকে বিপরীত দিকে ছিটকে দিয়ে স্পট কিক থেকে হংকংকে এগিয়ে নেন ম্যাট অর। ৪৪ মিনিটে আরও বাড়তে পারত বিপদ। মিতুলের গ্লাভস গলে বল পেরিয়ে যাওয়ার পর এক ডিফেন্ডার দ্রুত ক্লিয়ার করেন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সাদ উদ্দিনের ক্রস বক্সের ভেতর থেকে হামজা হেড করে দিতে চেয়েছিলেন শমিতকে।
তবে কানাডাপ্রবাসী এ মিডফিল্ডার বলের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার আগেই ক্লিয়ার করেন এনগান চেউক পান। ৬৪ মিনিটে দুটি পরিবর্তন আনেন বাংলাদেশ কোচ। জায়ান ও সোহেল রানাকে তুলে জামাল ভূঁইয়া ও ফাহামিদুল ইসলামকে নামান। তিন মিনিট পর ফাহামিদুলের জোরালো শট সরাসরি যায় গোলরক্ষকের কাছে।
৭৯ মিনিটে মোরসালিনের বদলি নামেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। হংকং বড় ধাক্কা খায় ৭৫ মিনিটে, দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার অলিভার গারবিগ। এর আট মিনিট পর সমতার স্বস্তি ফিরে বাংলাদেশ শিবিরে। বাম দিক থেকে ফাহিমের ক্রসে ফাহামিদুলের হেডে বল যায় রাকিবের পায়ে। নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন এ ফরোয়ার্ড। কিন্তু পরে আর জয়সূচক গোল না পাওয়ায় প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে পয়েন্ট নিয়ে ফেরার তৃপ্তিই সঙ্গী হলো বাংলাদেশের।