শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসান আরিফ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ১১:৫৩ পিএম

অর্থঋণ মামলায় কার্যকর হয়নি, ১০২৫ পরোয়ানা

হাসান আরিফ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ১১:৫৩ পিএম

অর্থঋণ মামলায় কার্যকর  হয়নি, ১০২৫ পরোয়ানা

  • স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চেয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের চিঠি
  • আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও তা কার্যকর হয়নি
  • মামলাগুলোর বেশির ভাগই উচ্চ আদালতে স্থগিত বা শুনানির অপেক্ষায়
  • ১১ প্রতিষ্ঠানের ১০০ মামলার বিপরীতে আটকে আছে ৩৮ হাজার ৬৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা

খেলাপি ঋণ আদায়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থঋণ আদালতের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল না হওয়া। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতাধীন আটটি দপ্তর ও সংস্থার দায়ের করা ১ হাজার ২৫টি মামলায় আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও তা এখনো কার্যকর হয়নি। ফলে কোটি কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায় প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল সংক্রান্ত’ শীর্ষক ওই চিঠি আইন-১ শাখা থেকে সম্প্রতি পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আটটি দপ্তর/সংস্থার দায়ের করা ১ হাজার ২৫টি অর্থঋণ মামলায় আদালত কর্তৃক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। কিন্তু পরোয়ানাগুলো তামিল না হওয়ায় খেলাপি ঋণের টাকা আদায়ে বিলম্ব ঘটছে।’

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মামলাগুলোর বিস্তারিত তথ্য সংযুক্ত করে প্রতিবেদন আকারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, যাতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এ বিষয়ে স্বাক্ষর করেছেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব ফরিদা ইয়াসমিন। চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে।

চিঠির সঙ্গে সংযুক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল না হওয়ায় সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করতে পারছে না। সংশ্লিষ্ট মামলাগুলোর অগ্রগতি ধীরগতির হওয়ায় অনেক ঋণখেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে দায়মুক্তভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিভাগটির আওতাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি (বিডিবিএল), বেসিক ব্যাংক, সাধারণ বীমা করপোরেশন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের বিপক্ষে এবং পক্ষ থেকে দায়ের করা অর্থঋণ মামলাগুলোতে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

সূত্র জানায়, এই মামলাগুলোর বেশির ভাগই উচ্চ আদালতে স্থগিত বা শুনানির অপেক্ষায় পড়ে আছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে অর্থঋণ আদালতের জারি করা পরোয়ানা কার্যকর করতে পুলিশি তৎপরতা নেই বললেই চলে। আদালত নির্দেশ দিলেও আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না, আবার কেউ কেউ একের পর এক রিট পিটিশন করে মামলাকে দীর্ঘসূত্রতায় ফেলে দিচ্ছেন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘অনেক ঋণখেলাপি আদালতের রায় কার্যকর হওয়ার আগেই উচ্চ আদালতে গিয়ে রিট করেন। এতে মূল মামলার অগ্রগতি বন্ধ হয়ে যায়। তা ছাড়া আদালতের দেওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনিক সহযোগিতা না থাকায় মামলাগুলো ঝুলে থাকে।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা মিলিয়ে ১১টি প্রতিষ্ঠানের ১০০ মামলার বিপরীতে প্রায় ৩৮ হাজার ৬৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা আটকে আছে। এসব মামলার নিষ্পত্তি ও টাকা আদায়ে সরকার আটটি পদক্ষেপ নিয়েছে।

সেই প্রেক্ষাপটে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের বিষয়টি এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় ঋণ আদায় কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্থবির হয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব ফরিদা ইয়াসমিন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা দেখছি মামলাগুলোর নিষ্পত্তি দ্রুত হচ্ছে কি না এবং প্রয়োজন হলে কোথায় সহযোগিতা দরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় পরোয়ানা তামিল নিশ্চিত হলে অনেক স্থগিত মামলা এগিয়ে যাবে, ফলে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার সম্ভব হবে।’

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল না হওয়া মানে শুধু প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, বরং এটি ব্যাংকিং ব্যবস্থার ন্যায্যতা ও জবাবদিহির ওপর আঘাত। অর্থঋণ আদালতের আদেশ কার্যকর না হলে আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি মানুষের আস্থা ক্ষুণœ হয়। তাই এখন প্রয়োজন আদালত, প্রশাসন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উদ্যোগ, যাতে এই ১ হাজার ২৫টি মামলার পরোয়ানা দ্রুত কার্যকর হয় এবং রাষ্ট্রের রাজস্ব পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত হয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!