শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ১১:৫৭ পিএম

বললেন প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই সনদের সুর নিয়ে যাবে নির্বাচনের দিকে

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ১১:৫৭ পিএম

জুলাই সনদের  সুর নিয়ে যাবে  নির্বাচনের দিকে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আমরা যে ঐক্যের সুর তুলেছি, সেই সুর নিয়েই নির্বাচনে যেতে হবে। যারা আজ স্বাক্ষর করলেন, তারা প্রয়োজনে আবার বসুন, ঠিক করুন কীভাবে নির্বাচন সুন্দরভাবে করা যায়। যেনতেন নির্বাচন করে কোনো লাভ নেই।’

গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত ঐতিহাসিক ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আমরা বর্বরতা থেকে সভ্যতার জগতে এলাম। আর এই সনদের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো যে ঐক্যের নজির স্থাপন করেছে, তা শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা বিশ্বের জন্য এক বিরল উদাহরণ। এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো ও ঐকমত্য কমিশন। এই সনদ বিশ্বজুড়ে আলোচিত হবে, পাঠ্যপুস্তকে স্থান পাবে, শ্রেণিকক্ষে আলোচনা হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ছিল প্রথম অধ্যায় আর এই জুলাই সনদ তার দ্বিতীয় অধ্যায়। যারা সেই অভ্যুত্থানে প্রাণ দিয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন, কষ্ট সহ্য করেছেনÑ আজকের এই অর্জন তাদের আত্মত্যাগেরই ফসল। জাতি তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবে।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘জুলাই সনদের মাধ্যমে দেশ নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। আজকের দিনটি কেবল জাতির জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য এক মহান দিন। এটি চিন্তা করলেই গা শিউরে ওঠেÑ আমরা পুরোনো সব বিভাজন, বিদ্বেষ ও সংঘাতের রাজনীতি পেছনে ফেলে নতুন আলোয় পা রাখলাম।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আজ আমরা এক নবজন্মের সাক্ষী। জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করলাম। এই সনদের ভিত্তিতে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এটি দেশের রাজনীতি, প্রশাসন ও সমাজব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই সনদ শুধু রাজনৈতিক অঙ্গীকার নয়, এটি জাতির মানসিক রূপান্তরের প্রতীক। আমরা বর্বরতা, বিভাজন আর ক্ষমতার লড়াই থেকে সভ্যতা, সহযোগিতা ও ঐক্যের পথে এলাম।’

বক্তৃতায় তিনি বিশেষভাবে তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা উল্লেখ করে বলেন, ‘এই দেশ তরুণদের দেশ। ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে অর্ধেকই ২৭ বছরের নিচেÑ তারাই আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ।’

তিনি যোগ করেন, ‘আজকের পৃথিবীতে বহু দেশে তরুণদের অভাব। অথচ বাংলাদেশ তরুণ শক্তিতে পরিপূর্ণ। এই তরুণরাই শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো পৃথিবী পরিবর্তনের সক্ষমতা রাখে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই সনদের ঐকমত্য তরুণদের জন্য এক নতুন অনুপ্রেরণা। তারা যেন এই সনদের চেতনা ধরে রাখে, নেতৃত্ব দেয় এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব নেয়।’

ড. ইউনূস দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘এই সনদ শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসেও এক মাইলফলক হয়ে থাকবে। বহু দেশে এই মডেল নিয়ে গবেষণা হবে, আলোচনায় আসবে। আমাদের রাজনীতিবিদরা দেখিয়ে দিয়েছেনÑ সংলাপ, ত্যাগ ও বিশ্বাসের মাধ্যমে অসম্ভবকেও সম্ভব করা যায়।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘রাজনীতিবিদরা আজ দেশকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। সারা পৃথিবী দেখবেÑ বাংলাদেশ কেবল উন্নয়নের নয়, সভ্য রাজনীতিরও এক অনন্য উদাহরণ।’

বত্তৃতার শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে প্রাণদানকারী শহিদ ও আহতদের স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘তাদের আত্মত্যাগের কারণেই আজ আমরা দিনটি দেখছি। তারা বীজ বপন করেছিলেন, আজ আমরা তার ফল দেখছি। জাতি তাদের প্রতি চিরঋণী।’

তিনি যোগ করেন, ‘গণঅভ্যুত্থান আমাদের নতুন ভাবনার পথ খুলে দিয়েছে। সেই পথেই আজ আমরা এগিয়ে এসেছি জুলাই সনদে। এটা হলো, সেই আন্দোলনের পরিণতি, যা একদিন দেশকে বদলে দেবে।’

সংবিধান ও সরকার পরিচালনায় আসন্ন পরিবর্তনের প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পুরোনো অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক পেছনে ফেলে আমরা এখন নতুন বাস্তবতায় প্রবেশ করছি। সংবিধান সংশোধন, প্রশাসনিক কাঠামোর সংস্কার এবং জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণÑ এই তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে গড়বে নতুন বাংলাদেশ।’

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘এই ঐকমত্য যদি আমরা ধরে রাখতে পারি, তাহলে সামনের দিনগুলোয় বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক রাষ্ট্রে পরিণত হবে।’

বক্তৃতার শেষাংশে ড. ইউনূস বলেন, ‘এই জুলাই সনদ আমাদের পথ দেখাবেÑ কীভাবে আমরা নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রেখে রাষ্ট্রকে নতুনভাবে সাজাতে পারি। আজ আমরা সত্যিই বর্বরতা থেকে সভ্যতার জগতে এলাম।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!