জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ, আহত ৫০

রাজধানীর প্রেসক্লাব এলাকায় ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে জাতীয়করণসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের মাধ্যমে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন আন্দোলনরতরা।

গতকাল বুধবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে তারা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে ভুখা মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে রওনা দেন। একটু সামনে এগোতেই তারা পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। সোয়া ২টার দিকে তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ তাদের জলকামান ও সাউন্ডে গ্রেনেড ছোড়ে। পরে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে আশপাশ এলাকায় অবস্থান নেন। এ ঘটনায় আহত শিক্ষকেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

পুলিশ জানায়, প্রেসক্লাব এলাকায় অবস্থান নিয়ে তারা ভুখা মিছিল করছিলেন। কিছুক্ষণ পর মেট্রোরেল স্টেশনের নিচ থেকে সচিবালয়ের দিকে রওনা দেন তারা। এ সময় পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে তারা সেটি না মেনে জোর করেই সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ব্যারিকেড ভাঙার সময় তাদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ করা হয়। পাশাপাশি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার প্যাট্রোল ইন্সপেক্টর সরদার বুলবুল আহমেদ বলেন, ইবতেদায়ি শিক্ষকেরা জোর করে সচিবালয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময় তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়। 

ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের সূত্রে জানা গেছে, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশের জলকামান, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও লাঠিচার্জে ৫০ জনের মতো আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। 

ময়মনসিংহ থেকে আসা শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আহত শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার জাতীয়করণের দাবিতে ১৭ দিন ধরে আমরা ন্যায্য দাবি নিয়ে অবস্থান করছিলাম। গতকাল বুধবার দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থানের সময় পুলিশ আমাদের শিক্ষকদের ওপর অতর্কিতভাবে জলকামান, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে এবং লাঠিচার্জ করে। এতে আমাদের অর্ধশতাধিক শিক্ষক আহত হন।’ 

এদিকে সংঘর্ষে আহত অন্তত ৫০ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক।

এর আগে ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকেরা তাদের পাঁচ দফা দাবি জানান। সেগুলোর মধ্যে আছেÑ ধাপে ধাপে সব ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণ ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন, এমপিওভুক্তির জন্য ইতিমধ্যে যাচাইকৃত ১ হাজার ৮৯ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন ও গেজেট প্রকাশ, স্বীকৃত কিন্তু অনুদানবিহীন ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোর এমপিও আবেদন আহ্বান করে প্রজ্ঞাপন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক পদ সৃষ্টি এবং ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোর জন্য পৃথক অধিদপ্তর গঠন।