সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমতায় ফিরতে পারল না বাংলাদেশ। গতকাল সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশকে ১৪ রানে হারিয়ে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগামী ৩১ অক্টোবর সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ রয়েছে। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ক্যারিবীয়দের কাছে ১৬ রানে হেরেছিল স্বাগতিকরা।
জয়ের জন্য ১৫০ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। চতুর্থ ওভারেই উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায়। হোল্ডারের বলে ৫ রান করে আউট হন সাইফ হাসান। তবে লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম ৩৫ রান করে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। কিন্তু ২৩ রান করে অধিনায়ক লিটন উইকেট হারালে ইনিংস টেনে নেন তানজিদ ও তাওহিদ হৃদয়। তবে মেরে খেলতে গিয়ে তাওহিদ উইকেট হারান। তার ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। দলীয় ৮৫ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তানজিদ ও জাকের আলী মিলে। জয় থেকে ৩৩ রান দূরে আউট হন তানজিদ। ৪৮ বলে ৬১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন এই ওপেনার। তার ইনিংসে তিনটি করে চার ও ছক্কার মার রয়েছে। এরপর পরপর বলে জাকের ও শামীম আউট হলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তখন জয়ের জন্য ১১ বলে ২৬ রান প্রয়োজন হয় বাংলাদেশের। শেষ পর্যন্ত জয়ের সমীকরণ মেলাতে পারেনি বাংলাদেশ।
আগে ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসের শুরুতেই উইকেট হারায়। আগের ম্যাচে ৩৩ রান করা ব্র্যান্ডন কিংকে ফিরিয়ে ভালো সূচনা এনে দেন তাসকিন আহমেদ। তবে এরপর অধিনায়ক শাই হোপ ও আথানেজ জুটি দলকে এগিয়ে দেয়। এ দুজন মিলে মাত্র ৫৯ বলে গড়ে তোলেন ১০৬ রানের লম্বা এক জুটি। পাওয়ার প্লেতেই ৫০ রান পায় তারা। ১০.৫ ওভারে স্পর্শ করেন তিন অংকের ফিগার। ১২তম ওভারে নাসুম আহমেদ বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন। লং অনে বল পাঠাতে গিয়ে মিডউইকেটে তানজিদ হাসানের হাতে ধরা পড়েন আথানেজ। পরের বলেই রাদারফোর্ডকে বোল্ড করেন এই বাঁহাতি স্পিনার। দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে ছন্দপতন ঘটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এরপর পরের ওভারে বল হাতে নিয়ে সেট ব্যাটসম্যান শাই হোপকেও ফেরান মোস্তাফিজুর রহমান। তাতেই পুরো ম্যাচের মোমেন্টাম ঘুরে যায় বাংলাদেশের দিকে। ১৫তম ওভারে বোলিংয়ে ফিরে জোড়া আঘাত হানেন রিশাদ হোসেন। নিজের প্রথম ওভারে দুটি ছক্কা হজম করে দেন ১৫ রান। তবে এরপর উইকেটে টিকে থাকার লড়াইয়ে থাকা রভম্যান পাওয়েলকে ফেরানোর পর জেসন হোল্ডারকেও তুলে নেন রিশাদ।
১২ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ক্যারিবিয়ানরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছুটা সতর্কভাবে এগিয়ে যান রোস্টন চেজ ও রোমারিও শেফার্ড। ২৭ বলে ২৬ রানের ছোট একটি জুটি গড়েন তারা। তবে শেষ ওভারে মোস্তাফিজকে আক্রমণ করতে গিয়ে আউট হন শেফার্ড। পরের বলেই খেরে পিয়েরে বোল্ড হন। আর শেষ বলে রানআউট হয়ে ফেরেন আকিল হোসেন। ফলে দেড়শ রানের আগেই থেমে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন অধিনায়ক হোপ। ৩৬ বলের ইনিংসে ৩টি করে চার ও ছক্কা মারেন তিনি। আথানেজের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ বলে ৫২ রান। তার ইনিংসে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা রয়েছে। রোস্টন চেজ অপরাজিত থাকেন ১৭ রানে। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল মোস্তাফিজুর রহমান। ২১ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন তিনি। নাসুম আহমেদ ও রিশাদ দুটি করে উইকেট নেন।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন