নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া না-পাওয়া প্রার্থী বিবেচনায় না নিয়ে দলের পক্ষে কাজ করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নতুন করে আবারও খাল খনন কর্মসূচি হাতে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ছাড়া বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রথম দিকে ৫০ লাখ পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ড এবং ১ কোটি মানুষের জন্য কর্মসংস্থান তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি। গতকাল সোমবার ঢাকার ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনার কর্মসূচি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভিডিওকলে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন তিনি।
তিনি বলেছেন, আমাদের বসে থাকার সময় নেই। বিভিন্ন এলাকায় আমাদের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। হয়তো এমনও হতে পারে তোমার এলাকায় যেই প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে, হয়তো তুমি একজনকে পছন্দ করতে সে হয়তো পায়নি। যে পেয়েছে তার সঙ্গে হয়তো তোমার সম্পর্ক আছে একটু কম। ‘ভাইরে তুমি তো প্রার্থীর জন্য কাজ করছ না, তুমি তো তোমার ধানের শীষের জন্য কাজ করছ। এখানে প্রার্থী মুখ্য নয়, এখানে মুখ্য হচ্ছে তোমার দল বিএনপি, এখানে মুখ্য হচ্ছে ধানের শীষ, এখানে মুখ্য হচ্ছে দেশ। মানুষ ধানের শীষের পক্ষে রায় দিলে দেশ গড়ার প্রত্যেকটা পরিকল্পনা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব এবং করব ইনশাল্লাহ। তারেক বলেন, দেশ গড়ার পরিকল্পনাগুলো এগুলো আমরা পরিকল্পনার মধ্যে রাখব না। এগুলোকে আমরা যেকোনো মূল্যে ইনশাআল্লাহ বাস্তবায়ন করব জনগণকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে। আমাদের আজকে প্রতিজ্ঞা, আমাদের আজকের কর্মপন্থা হলো আমাদের এই পরিকল্পনাগুলোর সঙ্গেই আমরা বাংলাদেশের জনগণকে সম্পৃক্ত করব। এটাই হচ্ছে আমাদের পরবর্তী দুই মাসের কাজ। এর বাইরে আর কোনো কাজ নেই।’
খাল খনন, বায়ুদূষণ রোধ, পরিবেশের উন্নয়ন, বর্জ্য অপসারণ, সারা দেশে ক্রীড়ার উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বেকারত্ব দূর, ফ্যামিলি কার্ড, ফার্মাস কার্ড, স্বাস্থ্য কার্ডসহ বিএনপির পরিকল্পনাগুলো বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে নেতাকর্মীদের তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে ‘আমি ভালো আর সব খারাপ’ এ রকম একটি বিষয় আমরা দেখেছি। দুঃখজনক হলেও ২০২৪ সালের ৫ তারিখের পরে কেন জানি মনে হচ্ছে সেটির বোধ হয় পরিবর্তন হয়নি। এটির পরিবর্তন হওয়া বাঞ্ছনীয়, এটির পরিবর্তন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। বহুদলীয় গণতন্ত্রে মানুষ বিভিন্ন মতামত দেবে, মতামত দেওয়ার অধিকার তার আছে, বক্তব্য দেওয়ার অধিকার তার আছে। কিন্তু বিশেষ একজন ভালো আর বাকি সবাই খারাপ, এটি কোনোভাবে কাম্য হতে পারে না। এই ধারণার পরিবর্তন হতে হবে। এটি গণতন্ত্রের জন্য হুমকি, এটা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।
গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কেন নেই? বিগত যে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছি। কেন আন্দোলন করেছি? কারণ সেখানে কোনো জবাবদিহিতা ছিল না। মানুষ বেঁচে আছে কী মরে যাচ্ছে তার কোনো জবাবদিহিতা ছিল না। একমাত্র গণতন্ত্র সমাজে দেশে ও রাষ্ট্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারে। সাধারণ মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে একমাত্র নির্বাচিত একটি গণতান্ত্রিক সরকার।’ তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইমিডিয়েট ভবিষ্যৎ তোমাদের ওপরে। তোমরা যদি এগিয়ে আসো, তোমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হও তাহলে এ দেশের সামনে একটি ভবিষ্যৎ আছে। তা না হলে একটি ভয়াবহ কিছু হয়তো অপেক্ষা করছে। আমরা যদি আজকে ঐক্যবদ্ধ হই, আমরা যদি যে যার অবস্থান থেকে কাজ করি দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। আজকে আমাদের আর বসে থাকার সময় নেই। দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় দলটির নেতারা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

