কোমর ব্যথা একটি অত্যন্ত সাধারণ সমস্যা, যা প্রায় সব বয়সের মানুষকে প্রভাবিত করে। এটি দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করে এবং জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দিতে পারে। কোমর ব্যথার কারণ এবং চিকিৎসা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এই আর্টিকেলে কোমর ব্যথার সাধারণ কারণ এবং সমাধান সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
কোমর ব্যথার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:
মেরুদ-ের ডিস্ক সরে গেলে বা ফেটে গেলে ¯œায়ুর ওপর চাপ পড়ে, যা কোমরে তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে।
লক্ষণ: পায়ে ব্যথা, অসাড়তা বা দুর্বলতা।
মাংসপেশিতে টান
অতিরিক্ত কাজ, ভুল ভঙ্গি বা আঘাতের কারণে মাংসপেশিতে টান পড়ে।
লক্ষণ: কোমরে ব্যথা এবং ফোলা।
অস্টিওআর্থ্রাইটিস
মেরুদ-ের জোড়ার কার্টিলেজ ক্ষয় হলে ব্যথা এবং শক্ত হয়ে যাওয়ার
অনুভূতি হয়।
লক্ষণ: সকালে জোড়া শক্ত লাগা এবং ব্যথা।
স্পাইনাল স্টেনোসিস
মেরুদ-ের সংকীর্ণতা স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
লক্ষণ: হাঁটার সময় ব্যথা এবং পায়ে দুর্বলতা।
অস্টিওপোরোসিস
হাড়ের ঘনত্ব কমে গেলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে এবং ব্যথা সৃষ্টি করে।
লক্ষণ: হাড় ভাঙার প্রবণতা।
কোমর ব্যথার চিকিৎসা
কোমর ব্যথার চিকিৎসা নির্ভর করে কারণ এবং তীব্রতার উপর।
ফিজিওথেরাপি
বিশেষ ব্যায়াম এবং থেরাপির মাধ্যমে পেশি এবং জোড়ার শক্তি বাড়ানো হয়। স্ট্রেচিং এবং এরোবিক এক্সারসাইজ ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
ওষুধ
ব্যথানাশক: প্যারাসিটামল এবং আইবুপ্রোফেন।
মাসল রিলাক্স্যান্ট: পেশির টান কমাতে।
কর্টিকোস্টেরয়েড: প্রদাহ এবং ব্যথা কমাতে।
ইনজেকশন
এপিডুরাল ইনজেকশন: মেরুদ-ের স্নায়ুর চারপাশে স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হয়।
ফেসেট জয়েন্ট ইনজেকশন: জোড়ার ব্যথা কমাতে।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন
সঠিক ভঙ্গি: বসা, দাঁড়ানো এবং শোয়ার সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন।
ওজন কমানো: অতিরিক্ত ওজন কোমরে চাপ বাড়ায়।
নিয়মিত ব্যায়াম: কোমরের পেশি শক্তিশালী করার জন্য ব্যায়াম করুন।
সার্জারি
ডিস্কেক্টমি: ডিস্ক প্রোল্যাপসের চিকিৎসায়।
স্পাইনাল ফিউশন: মেরুদ-ের স্থিরতা বাড়াতে।
কোমর ব্যথা প্রতিরোধের উপায়
- নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্ট্রেচিং করুন।
- ভোরী জিনিস তোলার সময় সঠিক
- টেকনিক ব্যবহার করুন।
- সেঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন।
- স্বোস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন।
কোমর ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা, তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ফিজিওথেরাপি, ওষুধ এবং ইনজেকশনের মাধ্যমে ব্যথা কমিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায়।
প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসা নিলে জটিলতা এড়ানো যায়।
ডা. মো. নাইমুল আলম
এমবিবিএস, এমএস (অর্থোপেডিক্স)
এটেন্ডিং কনসালটেন্ট, অর্থোপেডিকস এবং জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি এভারকেয়ার হাসপাতাল, চট্টগ্রাম।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন