রবিবার, ১১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসান আরিফ

প্রকাশিত: মে ১১, ২০২৫, ০১:২২ এএম

সেবা খাতে আয়ের লক্ষ্য ৪৬ হাজার কোটি টাকা

হাসান আরিফ

প্রকাশিত: মে ১১, ২০২৫, ০১:২২ এএম

সেবা খাতে আয়ের লক্ষ্য ৪৬ হাজার কোটি টাকা

সেবা খাতে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে আয় বাড়াতে বাড়তি চাপ দেওয়া হলেও লক্ষ্যমাত্রা বাড়াবে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কারণ, প্রতি অর্থবছরেই লক্ষ্যমাত্রা বেশি ধরা হলেও বাস্তবায়ন হয় তার তুলনায় অনেক কম। ফলে কাগজে-কলমে খরচ না বাড়লেও আয় বাড়াতে মানুষের ওপর কিছুটা চাপ প্রয়োগ করা হবে। যদিও আগামী অর্থবছরের বাজেটে বিভিন্ন ধরনের মাসুল (ফি), সুদ, মুনাফা, স্ট্যাম্প বিক্রি, টোল, ইজারা বা ভাড়া ইত্যাদির হার বৃদ্ধি করা হবে না। কিন্তু আদায় বাড়াতে চায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সরকারের রাজস্ব আয়ের প্রধান তিনটি উৎস হচ্ছে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) ও শুল্ক। এ উৎসগুলো থেকে আয় সংগ্রহের দায়িত্ব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। এর বাইরেও অন্যতম একটি খাত রয়েছে সরকারের রাজস্ব আয় সংগ্রহের, যেটাকে সরকার বলে কর ছাড়া প্রাপ্তি (নন-ট্যাক্স রেভিনিউ), সংক্ষেপে যা এনটিআর নামে পরিচিত।

আগামী অর্থবছরের জন্য এনটিআর খাতের লক্ষ্যমাত্রা ৪৬ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে। যা চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও ৪৬ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকা করা হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এনটিআর প্রস্তাব করা হয়েছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে কমিয়ে ৪৯ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছিল। তবে প্রকৃত আয় হয়েছিল মাত্র ৩৯ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে এনটিআর প্রস্তাব করা হয়েছিল ৪৫ হাজার কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটেও একই রাখা হয়েছিল। তবে প্রকৃত আয় হয়েছিল ৩৮ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তবে এই খাত থেকে শেষ পর্যন্ত কত রাজস্ব আদায় করা সম্ভব, তা জানার জন্য অর্থবছর শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ, অতীতের সব অর্থবছরেই প্রস্তাবিত অর্থের পরিমাণ কমিয়ে সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাও বাস্তবায়ন হয়নি।

সূত্রগুলো জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে তৃণমূল থেকে জেলা পর্যায় পর্যন্ত হাট-বাজারের ইজারামূল্য না বাড়িয়ে আদায় বাড়তে পারে। মোবাইল কোর্টসহ যেসব খাতে সরকার জরিমানা ও দণ্ড আরোপ করে, এসব জরিমানার হার বাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। এক্সপ্রেসওয়ে, উড়ালসড়কসহ বিভিন্ন সেতু পারাপারের টোল, সেবা ও প্রশাসনিক মাসুল ইত্যাদির হার বর্তমান সময়ের মতোই থাকতে পারে।

অর্থ বিভাগ সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে চিঠি দিয়ে বলেছে, সেবা মাসুল তিন বছর পর পর অথবা প্রয়োজনের নিরিখে যথাসময়ে হালনাগাদ হবে। তবে সেগুলো করা হবে- সেবা দেওয়ার খরচ, জীবনযাত্রার মান, মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনায় রেখে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দিক থেকে বাজেটে রাজস্ব বৃদ্ধির চাপ রয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় রাজস্ব সংগ্রহের হার ৮ শতাংশের কম। দেশে ডলার-সংকট দেখা দিলে ২০২২ সালে আইএমএফ থেকে ঋণ নেওয়ার উদ্যোগ নেয় ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। সরকারের আবেদনে ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। ঋণ কর্মসূচি অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশকে রাজস্ব-জিডিপির হার বছরে দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়াতে হবে। এনটিআরের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করার সময় আইএমএফের এই শর্তের কথাও বিবেচনায় রাখা হয়েছে বলে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এনটিআর থেকে ভালো রাজস্ব আদায় করতে পারছে না সরকার। এ ব্যাপারে সংস্থাগুলোর যেমন অসহযোগিতা আছে, তেমন মন্ত্রণালয়গুলোরও তাগিদ নেই। বিষয়টি নিয়ে অর্থ বিভাগ অসন্তুষ্ট। কারণ, অন্য মন্ত্রণালয় শুধু অর্থ বরাদ্দ পেতে চায়, অর্থ সংগ্রহের ব্যাপারে তাদের আগ্রহ নেই বললেই চলে।

তারা বলছেন, কাঁচা পাট ও পাটপণ্য রপ্তানিতে সামান্য রাজস্ব মাসুল ছিল, যা ৩০ বছর আগে ধার্য করা। সম্প্রতি হার বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়ায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় নিজেই তা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছে। অথচ আগামী বাজেট প্রণয়নের অংশ হিসেবে কয়েক মাস ধরেই বিভিন্ন টোল ও মাসুল বৃদ্ধির বিষয়ে অর্থ বিভাগ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করেছে।

জানা গেছে, এনটিআরের মধ্যে বড় ১০টি উৎস রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লভ্যাংশ ও মুনাফা। ব্যাংক-বিমাসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের বিপরীতে সরকার লভ্যাংশ ও মুনাফা পায়। চলতি অর্থবছরে লভ্যাংশ ও মুনাফা থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হলো ৭ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা।

সরকার, সরকারি কর্মচারী, বিভিন্ন আর্থিক ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া ঋণের বিপরীতে সুদ পাওয়া যায়। চলতি অর্থবছরে এই খাত থেকে ৬ হাজার ১১৪ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আগামী অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়াতে চায় সরকার।

আইন ও নিয়মনীতির পরিপন্থি বিভিন্ন কাজের জন্য সরকার জরিমানা, দণ্ড ও বাজেয়াপ্তকরণ করে প্রতিবছর কিছু অর্থ আয় করে থাকে। চলতি অর্থবছরে ৬৪৩ কোটি টাকা আদায় লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও আগামী অর্থবছরে এ খাত থেকেও আয় বাড়ানোর কৌশল নেবে সরকার।

সরকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণকে দেওয়া সেবার বিপরীতে আয় করে। যেমন আমদানি-রপ্তানি সনদের মাসুল, কোম্পানি নিবন্ধন মাসুল, বিমা প্রিমিয়াম, সমবায় সমিতিগুলোর নিরীক্ষা মাসুল, নিবন্ধন ও নবায়ন মাসুল ইত্যাদি। এসব সেবার বিপরীতে সরকার আগামী অর্থবছরে নতুন কৌশন নিতে পারে।

এ ছাড়া সরকার আগামী অর্থবছরে হাট-ঘাট ভাড়া ও ইজারা দিয়ে হাজার কোটি টাকা, টোল ও লেভি আদায়, মূলধন রাজস্ব অর্থাৎ পুরোনো গাড়ি বা আসবাব নিলামে বিক্রি থেকে আয় বাড়ানোর লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!