শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


স্বপ্না চক্রবর্তী

প্রকাশিত: মে ৩০, ২০২৫, ০৪:২৭ এএম

অর্থনীতির নীরব যোদ্ধা নারী

স্বপ্না চক্রবর্তী

প্রকাশিত: মে ৩০, ২০২৫, ০৪:২৭ এএম

ছবি-রূপালী বাংলাদেশ

ছবি-রূপালী বাংলাদেশ

পঞ্চাশোর্ধ্ব নারী তাসনিয়া আজাদ। এই বয়সটায় সাধারণত নারীরা নিজেদের গুটিয়ে রাখেন সংসারের চারদেয়ালে। বেসরকারি কর্মকর্তা স্বামী অফিসে চলে যান সকাল বেলা। দুই ছেলে দেশের ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছেন। 

এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে ব্যস্ত রাখার ভাবনায় শুরু করলেন সীমিত পরিসরে নানান ধরনের প্রসাধনী ও কসমেটিকসের ব্যবসা। রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা থেকে ঘুরে ঘুরে ভালো মানের পণ্য কিনে সীমিত লাভ রেখে পরিচিত বন্ধুদের কাছে বিক্রি করেন। প্রথম প্রথম নিজের জমানো টাকা থেকেই বিনিয়োগ করলেও পরে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে দেন একটি ছোট দোকান। দোকান পরিচালনার জন্য নেন একজন কর্মচারীও। 

একসময় খবর পান রাজধানীর মহিলা সমিতির উদ্যোগে একটি মেলা হবে। নিজের পণ্য নিয়ে মেলায় নেন স্টলও। মেলায় পণ্য বিক্রি করে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেন। তারপর থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। কর্মচারী দোকান সামলান আর তাসনিয়া আজাদ দেশের নানান প্রান্তে নারী উদ্যোক্তাদের মেলায় স্টল দেন। 

এক বছরের মাথায় লাভের টাকা দিয়ে গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধায় ২ একর জমি কিনেছেন, যা দুই বছর আগে কল্পনাও করতে পারেননি উল্লেখ করে তাসনিয়া আজাদ বলেন, ‘বলা যায়, সারা জীবনই স্বামী-সন্তানের জন্য নিজের জীবনটা কাটিয়ে দিয়েছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ভুল করেছি। আমার মতো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারাও যে অর্থনীতির অংশ হতে পারে, তা নিজে ব্যবসায় না নামলে বুঝতেই পারতাম না। ৫০ বছর বয়সে এসে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি। কারো কাছে হাত পাততে হচ্ছে না। এর চেয়ে আনন্দের কী হতে পারে বলেন!’

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে লাবণ্য হকের গল্পটা একটু অন্যরকম। দুই চোখেই গ্লুকোমা সম্পর্কিত কিছু জটিলতায় দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে বছর দুই আগে। চরম হতাশা আঁকড়ে ধরে ২৫ বছরের এই তরুণীকে। একটা সময় হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা পর্যন্ত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখনই যেন আলোর পথ দেখান এক বন্ধু। নিজে বিদেশে চলে যাবেন, তাই ছোট্ট শোপিসের দোকানের দায়িত্বটা বুঝিয়ে দেন লাবণ্যকে। 

ক্ষীণদৃষ্টির লাবণ্যের হাতে যেন নতুন জীবনের ডাক আসে। সেই শোপিসের দোকানে প্রথমে বিক্রি শুরু করেন দেশীয় কিছু হাতে তৈরি পণ্য। গ্রামের বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন ঝাড়ু, বেতের ঝুড়ি আর নকশিকাঁথা। নগরজীবনে ঝাড়ু আর বেতের ঝুড়ির চাহিদা বাড়তেই থাকে। গ্রামে যে নারী এগুলো তৈরি করে দিতেন, তাকে মাসে অন্তত ৫০টি ঝাড়ু তৈরি করে দিতে বলেন। একই রকমভাবে বাড়তে থাকে বেতের ঝুড়ি এবং নকশিকাঁথার চাহিদাও। 

একে একে হাতে তৈরি মাটির ও কাঠের গয়না, বিভিন্ন রঙে অঙ্কিত মগÑ এসবও রাখতে শুরু করেন দোকানে। চাহিদা দিনে দিনে বাড়তে থাকলেও দোকানের পরিধি বাড়াতে পারছিলেন না নগদ টাকার অভাবে। তখন বেছে নিলেন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ‘চারুপণ্য’ নামের একটি পেজ খোলেন। তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি লাবণ্যকে। দেশের গ্রাহকের পাশাপাশি লাবণ্যের নকশিকাঁথা আর শলার ঝাড়ুর চাহিদা এখন বিদেশেও। 

গ্রাহকদের ক্রয়াদেশ ডেলিভারি দিয়ে কুলাতে পারছেন না। আয়ের টাকা দিয়ে নিজের চোখের চিকিৎসাও করাচ্ছেন দেশের বাইরে। কণ্ঠে তাই আনন্দের ধারা। বলেন, যেখানে বেঁচে থাকার আশাই বাদ দিয়েছিলাম, সেখানে এই ছোট্ট চারুপণ্য যে এভাবে আমাকে নতুন পথ দেখাবে, তা স্বপ্নেও ভাবিনি। যদি কিছু বিনিয়োগ পেতাম, তাহলে এই চারুপণ্যের পরিধি আরও অনেক দূর নিয়ে যেতে পারতাম।

শুধু লাবণ্য বা তাসনিয়া আজাদ নন, সীমিত পুঁজি, অক্লান্ত পরিশ্রম এবং অদম্য উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে পুরুষদের পাশাপাশি দেশে অর্থনীতি চাঙা রাখছেন নারী উদ্যোক্তারাও। ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্প খাতের নারী উদ্যোক্তারা নীরবে চালিয়ে যাচ্ছেন অর্থনীতির চাকা। একজন নারী উদ্যোক্তা তার নিজ গ্রামে বা ঘরে কারুশিল্প শুরু করেছেন, তখন আরেকজন ছোট দোকান থেকে ব্যাগ তৈরি করে এখন বিদেশে রপ্তানির স্বপ্ন দেখছেন।

নারী উদ্যোক্তা তৈরির ক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের মধ্যে নারীর সংখ্যা হিসাবে ৫৪টি স্বল্প আয়ের দেশের মধ্যে ৬ নম্বর অবস্থানে বাংলাদেশ। ‘মাস্টারকার্ড ইনডেক্স অব উইমেন এন্টারপ্রেনিউর’ (এমআইডব্লিউই) জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। 

জরিপে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমানে উদ্যোক্তার ৩১ দশমিক ৬ শতাংশই নারী। প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেই কাজ করে এ দেশের নারীরা নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলছেন। জরিপের ফলাফলে উল্লেখ করা হয়েছে, উগান্ডায় নারী উদ্যোক্তা ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ, বাংলাদেশে ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ভিয়েতনামে ৩১ দশমিক ৪ শতাংশ।

পরিসংখ্যান বলছে, দেশে প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ এসএমইর মধ্যে মাত্র ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ নারীর মালিকানাধীন হলেও উদ্যোক্তা সৃষ্টির হারে নারীর অংশগ্রহণ দিনে দিনে বাড়ছে। বর্তমানে দেশে প্রায় ৩ কোটি ৭ লাখ কর্মজীবীর মধ্যে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশই নারী, যাদের বড় অংশ জড়িত ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা কার্যক্রমে। 

এই অবদানের স্বীকৃতি উঠে এসেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পর্যালোচনা জরিপে। সংস্থাটির তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের তুলনায় ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসে ১ লাখ ৬০ হাজার পুরুষ দরিদ্র হলেও এই সময়ে একজন নারীও নতুন করে দারিদ্র্যসীমায় পড়েননি।

এসএমই ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় নতুন উদ্যোক্তার ৬০ শতাংশই নারী। ফাউন্ডেশনটি ৫০ হাজারের বেশি উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, যাদের মধ্যে ৬০ শতাংশই নারী। গত অর্থবছরে এসএমই ফাউন্ডেশনের নানা কর্মসূচির আওতায় সরাসরি সুবিধা ভোগ করেন ৩৪ হাজার ৭২০ জন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা। 

এর মধ্যে ১৭ হাজার ১ জন পুরুষ ও ১৭ হাজার ৭১৯ জন নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা সাপ্লায়ার প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা, করপোরেট বায়ারের সঙ্গে সংযোগ তৈরি, ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণÑ এসব উদ্যোগ নারীর ব্যাবসায়িক সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। এ ছাড়া মাইক্রোফাইন্যান্স, সরকারি সুবিধা বা এনজিও মাধ্যমে ঋণ নারী উদ্যোক্তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং উদ্যোগ সম্প্রসারণে সাহায্য করে আসছে। 

বাংলাদেশে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৪ অনুযায়ী, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক ইউনিটগুলোয় মোট ৩০ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন জনবল কর্মরত, যার ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ (৫.১ মিলিয়ন) নারী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী শ্রমবাজারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলোর একটি হচ্ছে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারীর অংশগ্রহণ। ইতিবাচক বিষয় হচ্ছে, গ্রামীণ নারীর শ্রমবাজারে অংশগ্রহণের হার শহরের নারীর তুলনায় বেশি।

নারীরা ঋণ নিয়ে বাঁশ ও মাটির তৈরি তৈজসপত্র, ব্লক-বুটিকের কাজ ইত্যাদি ক্ষেত্রে তাদের অর্থ লগ্নি করছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এক বছরে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৫২২টি এসএমই উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছে ১৫৯৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন টাকা, যা স্বনির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ১৬১০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন টাকার ৯৯ দশমিক ১ শতাংশ। 

আর এই ঋণের অধিকাংশই নিচ্ছেন নারী উদ্যোক্তারা। নারী উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ পাওয়া সহজ করতে জামানত ছাড়াই ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের। জাতীয় শিল্পনীতি ২০১৬-এ বলা হয়েছে, এসএমই খাতে ঋণের কমপক্ষে ১৫ শতাংশ নারী উদ্যোক্তার মধ্যে বিতরণ করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও নির্দেশনা রয়েছে, পুনঃঅর্থায়ন ঋণের কমপক্ষে ১০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাদের দিতে হবে।

নারী উদ্যোক্তারা ফ্যাশন, ওষুধ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্লাস্টিক, তৈরি পোশাক, চামড়া, ফার্নিচার, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হালকা প্রকৌশল, সফটওয়্যার ও ইলেকট্রনিকস খাতের পণ্য বেশি তৈরি করেন। নারী উদ্যোক্তারা শুধু পণ্য বা সেবা সরবরাহ করছেন তা নয়, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করেছেন। নারীর উৎপাদিত পণ্য দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের বাজারে যাচ্ছে। ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এমআরএর তথ্যমতে, দেশের ক্ষুদ্রঋণের ৩ কোটি ৪৫ লাখ নারী গ্রাহক প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ পরিচালনা করছেন। এ ছাড়া দেশব্যাপী অনেক নারী ছোট ছোট দোকান পরিচালনা করে সংসার চালাচ্ছেন।

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও ই-কমার্স খাতেও নারীরা উল্লেখযোগ্যভাবে অংশ নিচ্ছেন। বর্তমানে অনলাইন উদ্যোক্তাদের প্রায় অর্ধেকই নারী, যারা ঘরে বসেই মাসে হাজার টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকার ব্যবসা পরিচালনা করছেন। 

এ প্রসঙ্গে সিপিডির বিশেষ ফেলো ও জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘যুগের পরিবর্তনে নারীরা এখন ঘরে বসেই আয় করতে পারছেন। সরকারের উচিত ইন্টারনেট সেবা আরও সহজলভ্য করা।’

এ বিষয়ে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তার জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন সব সময় তৎপর। এসএমই ফাউন্ডেশন নতুন নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং বিদ্যমান নারী উদ্যোক্তাদের সার্বিক ব্যাবসায়িক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তাদের উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করছে। 

এরই পরিপ্রেক্ষিতে এসএমই ফাউন্ডেশনে ‘নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন’ নামে একটি বিশেষায়িত উইং বিভাগ তৈরি করা হয়। নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন উইংয়ের প্রধান উদ্দেশ্য হলো মূলধারার অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নারীকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে তাদের আর্থসামাজিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা। এসএমই নীতিমালা এবং জাতীয় শিল্পনীতি বাস্তবায়নে প্রধান বাস্তবায়নকারী সংস্থা-সহযোগী বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন উইংয়ের প্রাধিকারভুক্ত কাজ। 

এ ছাড়া এসডিজি, শিল্পনীতি ও এসএমই নীতিমালার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের সঙ্গে সংগতি রেখে নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন সম্পর্কিত কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন উইং।’

এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে ইতিমধ্যে ১১টি জাতীয় এসএমই পণ্যমেলা এবং ৯০টি আঞ্চলিক পণ্যমেলার আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৬০ শতাংশ ছিলেন নারী উদ্যোক্তা। ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নারী উৎপাদিত ঐতিহ্যবাহী পণ্যের মানোন্নতকরণ করা হয় এবং ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মিলনের মাধ্যমে পণ্যের বাজার সংযোগ করা হয়। 

এ ছাড়া ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় কিছু কিছু নারী উদ্যোক্তাকে আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া হয় এবং এর ফলে নির্বাচিত নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে বায়ার সংযোগ বেড়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফাউন্ডেশন অদ্যাবধি স্বল্প সুদে প্রায় ৯৬৬ কোটি টাকা প্রায় সাড়ে ৯ হাজার উদ্যোক্তার মধ্যে বিতরণ করেছে, যেখানে অন্তত ২৫ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা ঋণ পেয়েছেন।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এ বিষয়ে বলেন, ‘নারী নেতৃত্বাধীন এসএমই উদ্যোগের অর্থায়ন কর্মসূচির জন্য নির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ করা, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য কমপক্ষে ১৫ শতাংশ এসএমই ঋণ বরাদ্দের বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা কার্যকর, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য জামানতবিহীন ঋণ প্রকল্প প্রসার এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক জ্ঞান ও ব্যবসায় উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সমর্থন করা আবশ্যক। 

নীতি ও নিয়ন্ত্রক পরিবেশের উন্নয়নে, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে এসএমইদের জন্য লাইসেন্সিং, নিবন্ধন ও নবায়ন প্রক্রিয়া সরলীকরণের জন্য সম্পদ বরাদ্দ করা, বিদ্যমান আইন ও প্রবিধানের ব্যাপক পর্যালোচনা পরিচালনা করা এবং অপ্রয়োজনীয় জটিলতা ও বাধা দূর করা, এসএমই উন্নয়নে জড়িত সরকারি মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর মধ্যে উন্নত সমন্বয় ও যোগাযোগ নিশ্চিত করা এবং এসএমই নীতি বাস্তবায়ন ও প্রভাবের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা 

Link copied!