রংপুর নগরের সিও বাজারে একটি এলপিজি অটো গ্যাস ও কনভারশন সেন্টারের গ্যাস ট্যাংকারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে একজন নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রংপুর বিজিবি ক্যাম্পের বিপরীত পার্শে¦র মেসার্স সিও বাজার এলপিজি অটো গ্যাস অ্যান্ড কনভারশন সেন্টারে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত ৩০টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও বেশ কয়েকটি বাড়ি এবং দোকানপাটের দরজা-জানালা ধসে পড়েছে।
এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির নাম সোহাগ। তিনি এলপিজি স্টেশনের প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান বলেন, নিহত ব্যক্তি এলপিজি স্টেশনের প্রকৌশলী। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের কোলঘেঁষা সিও বাজারের ফারুক আহমেদ বিপুলের ওই গ্যাস স্টেশনটিতে লিকেজ থাকার কারণে কয়েক দিন ধরে বন্ধ ছিল। স্টেশনটি বন্ধ থাকায় সেখানে ৩০-৪০টি গাড়ি রাখা হয়েছিল। গতকাল ওই গ্যাস স্টেশনে মেরামতের কাজ চলছিল। তা দেখতে সেখানে মালিক ফারুক আহমেদ বিপুলও যান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে। স্টেশনে থাকা গাড়িগুলো দুমড়ে-মুচড়ে যায়। আশপাশের বাড়িঘরের চাল উড়ে যায়, গ্লাসসহ আসবাবপত্রের ক্ষতি হয়। আশপাশের দোকানগুলোতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে গ্যাস না থাকায় অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেনি।
স্টেশনের পাশে থাকা কলাপাতা খাবার হোটেলের মালিক সোমা ইসলাম বলেন, ‘ঠিক দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে পুরো দোকান কেঁপে ওঠে। কাস্টমারসহ আমরা দোকান থেকে বেরিয়ে পড়ি। এ সময় আমার দোকানের সিলিং ফ্যান ভেঙে পড়ে যায়। র্যাকে থাকা জিনিসপত্র পড়ে গিয়ে নষ্ট হয়। চলন্ত একটি বাসের সমস্ত গ্লাস ভেঙে যায়, যাত্রীরা আহত হয়। গ্যাস না থাকায় আগুন লাগে নাই।’
সরেজমিনে দেখা যায়, গ্যাসের ট্যাংকার ফেটে ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশে। স্টেশনে থাকা গাড়িগুলো দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। আশপাশের বাড়িঘরের গ্লাস দরজা-জানালা সিলিং ফ্যান ভেঙে পড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সেনাবাহিনীর উপস্থিতি দেখা যায়।
রংপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. বাদশা মাসুদ আলম বলেন, গ্যাস স্টেশনের লিকেজ মেরামতের সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পরিমাণটা জানা যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো হবে।
রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, গ্যাস লাইনে লিকেজ থাকার কারণে গত সাত দিন এলপিজি স্টেশনটি বন্ধ ছিল। আজ (গতকাল) সংস্কার করা হচ্ছিল। এ অবস্থায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় স্টেশনে আশপাশে থাকা গাড়ি এবং বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :