বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১২:৪৭ এএম

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি

শেষ বিদায়ে মেয়ের কফিনে বাবার চুমু

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৫, ১২:৪৭ এএম

শেষ বিদায়ে মেয়ের  কফিনে বাবার চুমু

নাড়ি ছেঁড়া বুকের ধন মেহেনাজ আফরি হুমায়রার (৯) চিরবিদায় মেনে নিতে পারছেন না মা সুমি আক্তার। তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। মাঝেমধ্যে চোখ খুলে চারদিকে অবাক তাকিয়ে থাকছেন, আবার মুহূর্তেই মূর্ছা যাচ্ছেন। বাড়ির উঠানে আর্তনাদ করছেন বৃদ্ধা দাদি। এদিকে মেয়ের কফিনে বারবার চুমু খেয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় জানাচ্ছিলেন বাবা দেলোয়ার হোসাইন রানা। 

গতকাল মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার হতেয়া কেরানীপাড়া হুমায়রার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে এমন করুণ দৃশ্য। গত সোমবার রাজধানীর উত্তরায় দিয়াবাড়িতে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মাইলস্টোন স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মেহেনাজ আফরি হুমায়রার মৃত্যু হয়। নিহত হুমায়রা ওই এলাকার দেলোয়ার হোসাইনের একমাত্র মেয়ে। দেলোয়ার হোসাইন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক। 

শিশু হুমায়রার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিমান দুর্ঘটনায় হুমায়রার মৃত্যুর খবর সোমবার বিকেলেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন সন্ধ্যার পর থেকেই গ্রামের বাড়িতে ভিড় করতে থাকেন। রাত আড়াইটার দিকে হুমায়রার লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এ সময় ওই বাড়িতে কান্না ও আহাজারির শব্দে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। সবার প্রিয় ছোট্ট হুমায়রার মৃত্যু যেন এলাকাবাসীও মেনে নিতে পারছে না। হুমায়রার বাবা দেলোয়ার ও মা সুমি আক্তারের চোখের পানি যেন ফুরিয়ে গেছে। পরিচিতজন বন্ধুবান্ধবদের কোনো সান্ত¡নার বাণী তাদের নিবৃত করতে পারছে না। 

হুমায়রার বৃদ্ধা দাদি আহাজারি করছেন, ‘আমার বোন (নাতনি হুমায়রা) ঈদের মধ্যে বাড়িতে আইছিল। বাড়ি জুইড়্যা কত দৌড়াদৌড়ি খেলাধুলা করল! ওইটাই ছিল আমার সঙ্গে শেষ দেহা। এরপরে গত সপ্তাহে মাত্র একবার ফোনে কথা কইছিলাম। গত সোমবার সকালেও ফোনে কথা কইতে চাইছিল, কিন্তু কবার পারি নাই। শেষ কথা না কইয়াই বোনে আমার চইল্যা গেল!’ 

হুমায়রার বাবা ও মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ‘হুমায়রার ছুটি হয়েছিল। তাকে বলছিÑ অপেক্ষা করো তোমার মা নিতে আসবে। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে- আমার স্ত্রী (সুমি) শ্রেণিকক্ষের কাছে যাওয়ার আগেই ওর সামনেই বিমানটি আমার মেয়ের শ্রেণিকক্ষের ভেতর ঢুকে পড়েছে। সব ঘটনা আমার স্ত্রীর চোখের সামনেই ঘটেছে, তাঁকে কীভাবে সান্ত¡না দেব’। তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান, শহরের ভেতরে যেন আর কখনো বিমানের প্রশিক্ষণ না হয়। 

এদিকে হুমায়রার দাদা আব্দুল বাছেদের আর্তনাদে উপস্থিত কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি। তিনি শুধু বলছেন, ‘এবার কোরবানির ঈদে দাদু এসেছিল। দাদু সারাক্ষণ আমার সঙ্গেই থাকত। দাদু আর কোনোদিন আসবে না! আর আমাকে দাদু ডাকবে না’! 

এর আগে গতকাল সকাল ৯টায় হতেয়া গাবলের বাজারে হুমায়রার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনের জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত সংসদ সদস্য প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শিকদার মুহাম্মদ সবুর রেজাসহ চার শতাধিক স্থানীয় মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে হুমায়রাকে দাফন করা হয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!