বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৫, ১২:১২ এএম

থানার কাছেই সন্ত্রাসী আস্তানা পুলিশ জানে না

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৫, ১২:১২ এএম

থানার কাছেই সন্ত্রাসী আস্তানা পুলিশ জানে না

সোর্সের মাধ্যমে অসামাজিক কার্যকলাপের সংবাদ ঠিকই পান চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিয়মিত অভিযানও চালান সেসব জায়গায়। টু-নাইনটির অভিযোগে সেসব তরুণ-তরুণীকে আটক করে তার ভিডিও আপলোড করেন ফেসবুকের নিজের ওয়ালে এবং থানার পেজে। আবাসিক এলাকা কিংবা আবাসিক হোটেলে বেশ্যাবৃত্তির গোপন তথ্য সোর্সের মাধ্যমে পেলেও থানা পুলিশের এক কিলোমিটারের মধ্যে মাসের পর মাস ধরে গড়ে ওঠা টর্চার সেল এবং সন্ত্রাসী আস্তানার তথ্য আসে না এই ওসির কাছে। নজরে রাখেন না স্থানীয় সন্ত্রাসীদের গতিবিধিও। গোপন সংবাদদাতার মাধ্যমে এসব খবর পৌঁছায় না তার কাছে। যদিও গলির পাতি নেতা থেকে শুরু করে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের খবর সবার আগে তার নখদর্পণে থাকার কথা। 

গত সোমবার সন্ধ্যায় চান্দগাঁও থানার খতিবের হাট এলাকায় আধিপত্য জানান দিতে সংঘর্ষে জড়ায় একই থানার তালিকাভুক্ত ৩১ মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী ইসমাইল হোসেন টেম্পো এবং ২০ মামলার আসামি শহিদুল ইসলাম বুইশ্যা ও তার বাহিনী। একসময় প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি ছোড়েন তারা। ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও প্রকাশ্যে গোলাগুলির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। গোলাগুলির ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে টনক নড়ে থানা পুলিশের। অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালানো হয় বেশ কয়েকটি জায়গায়। অভিযান চালাতে গিয়ে বহদ্দারবাট কাঁচাবাজারসংলগ্ন মাছ বাজারের তিন তলায় সন্ত্রাসীদের একটি আস্তানা ও টর্চার সেলের সন্ধান পায় পুলিশ। সেখান থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় থানা পুলিশ থেকে লুট হওয়া অস্ত্রের খোসাসহ দেশীয় অস্ত্র। স্থানীয়দের অভিযোগ, টেম্পো ও বুইশ্যা দুজনই পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। সম্প্রতি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পায় তারা। জেল  থেকে বেরিয়ে অধিপত্য জানান দিতেই তাদের এই অস্ত্রের মহড়া।  

বিষয়টি নিজেও স্বীকার করেছেন ওসি আফতাব উদ্দিন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, সন্ত্রাসী এই আস্তানা সম্পর্কে আমাদের কাছে তথ্য ছিল না। মাসের পর মাস থানা পুলিশের খুব কাছে সন্ত্রাসীদের একটি আস্তানা গড়ে উঠছে অথচ তার কোনো তথ্য ছিল না থানা পুলিশের কাছে। বিষয়টি থানা পুলিশের ব্যর্থতা কি নাÑ এমন প্রশ্নে জবাব এড়িয়ে গিয়ে ওসি আফতাব বলেন, যখনই খবর পেয়েছি তখনই অভিযান চালিয়েছি।    

থানা পুলিশের নাকের ডগায় মাসের পর মাস টর্চার সেল, অস্ত্রভা-ার ও আস্তানা গড়ে উঠলেও তার খবর থানা পুলিশের না জানার বিষয়টি থানা পুলিশের ব্যর্থতা বলেই অভিযোগ করেছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা। তাদের অভিমত, মাসের পর মাস এই ধরনের একটা সন্ত্রাসী আস্তানা গড়ে উঠছে অথচ থানা পুলিশের কাছে কোনো তথ্য নাইÑ বিষয়টি আশ্চর্যজনক। তারা আরও বলেন, থানা পুলিশের নিজস্ব সোর্সসহ গোয়েন্দা ইউনিট রয়েছেÑ তাদের কাছেই তো এসব তথ্য থাকার কথা। 

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে এসব তথ্য লোকাল থানা পুলিশ সংগ্রহে থাকার কথা। যদি না থাকে তাহলে সেটা থানা পুলিশের ব্যর্থতা। তিনি আরও বলেন, শুধু থানা পুলিশই নয়, কমিউনিটি পুলিশসহ স্থানীয় মানুষও এই দায় এড়াতে পারেন না।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামী সরকারের সময় থেকে স্থানীয় নেতাদের ছত্রছায়ায় বেপরোয়া হয়ে ওঠে পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ইসমাইল হোসেন ওরফে টেম্পো ও  শহিদুল ইসলাম বুইশ্যা। চান্দগাঁও এলাকার চাঁদাবাজি, ঝুট ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিতে এর আগেও বেশ কয়েকবার নিজেদের মধ্যে বিবাদে সংঘর্ষে জড়ায় তারা। নগর পুলিশের দাবি, দুজনের বিরুদ্ধেই নগরীর বিভিন্ন থানায় ২০ থেকে ৩০টিরও অধিক মামলা রয়েছে।

চান্দগাঁও থানা এলাকার ফরিদাপাড়ার টেম্পো চালক মোহাম্মদ ইউসুফের ছেলে ইসমাইল হোসেন। এক সময় বাবার সাথে টেম্পো চালাত বলে তার নামের সাথে যুক্ত হয় টেম্পো। ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর চান্দগাঁও এলাকা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয় ইসমাইল হোসেন টেম্পো। পরে জামিনে মুক্তি পায়। ৩৮ বছর বয়সি সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন থানায় ৩১টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বেশির ভাগ মামলাই করা হয়েছে ডাকাতি, ছিনতাই, খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, মাদক ও অস্ত্র রাখার অভিযোগে।

গত বছরের ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের ব্যস্ততম এলাকা জিইসি মোড়ে চালককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গার্মেন্টস পণ্যভর্তি একটি কাভার্ড ভ্যান লুট করার অভিযোগে মামলাও রয়েছে বুইশ্যা বাহিনীর বিরুদ্ধে।
নগর পুলিশের তথ্যমতে, শহিদুল ইসলাম বুইশ্যার বিরুদ্ধে নগরীর কয়েকটি থানায় ১৫ থেকে ২০টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও থানায় রয়েছে ১২টি মামলা।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!