ঢাকা শহরে ১৯৭২ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত মোট ছয়বার বিমান বিধ্বস্ত হয়ে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এ সময়কালে বিমান বিধ্বস্ত মোট ৫৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচটি দুর্ঘটনা প্রশিক্ষণ ফ্লাইটের সময় ঘটে এবং একটি দুর্ঘটনা ছিল বাণিজ্যিক যাত্রীবাহী ফ্লাইট।
সর্বশেষ গত ২১ জুলাই ঢাকার উত্তরা এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়, যেখানে আইএসপিআর নিশ্চিত করেছে অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন।
ছয়টি দুর্ঘটনার মধ্যে চারটি ঘটেছে উত্তরা এলাকায়, একটি কাফরুল এবং একটি পোস্তগোলা এলাকায়। বেশিরভাগ দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে নিয়ন্ত্রণ হারানো এবং খারাপ আবহাওয়া উল্লেখ করা হয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে দু’টি প্রশিক্ষণ বিমান ছিল বেসামরিক পারাবত ফ্লাইং একাডেমির।
১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম বিমান দুর্ঘটনা ঘটে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরের কাছে। বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ডগলাস ডিসি-৩ প্রশিক্ষণ বিমান রানওয়ে থেকে ৩০০ ফুট উচ্চতায় ওঠার পর কাফরুল এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। বিমানে থাকা পাঁচজন ক্রু নিহত হন। এই ফ্লাইট ছিল বাংলাদেশ বিমানের অভ্যন্তরীণ রুটের প্রথম প্রশিক্ষণ।
৫ আগস্ট ১৯৮৪
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার পথে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফকার এফ-২৭ মডেলের যাত্রীবাহী বিমান ঝড়ো আবহাওয়ার কারণে ঢাকার জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন জলাভূমিতে পড়ে যায়। বিমানে থাকা ৪৯ জনের সবাই নিহত হন। ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন ছিলেন দেশের প্রথম নারী পাইলট কানিজ ফাতেমা রোকসানা।
২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯৮
ঢাকার পোস্তগোলার শ্মশানঘাটের কাছে পারাবত ফ্লাইং একাডেমির সেসনা-১৫০ প্রশিক্ষণ বিমান ঝড়ো আবহাওয়া ও বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত হয়ে দুই পাইলট ফারিয়া লারা ও সৈয়দ রফিকুল ইসলাম নিহত হন।
৭ জুন ২০০২
উত্তরা মডেল টাউনের একটি খেলার মাঠে পারাবত ফ্লাইং একাডেমির প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট মোকলেছুর রহমান সাকিব নিহত হন। উড়ানোর মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারানো এই দুর্ঘটনায় স্থানীয়রা আতঙ্কিত হন।
৮ জুন ২০০৫
ঢাকার উত্তরা আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি চীনে তৈরি এফ-৭ যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাড়ির ওপর পড়ে। এক ব্যক্তি নিহত এবং চারজন আহত হন। পাইলট প্যারাসুট খুলে নিরাপদে অবতরণ করেন।
২১ জুলাই ২০২৫
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে আইএসপিআর এখন পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে। এটি ঢাকায় সর্বশেষ এবং সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে রেকর্ড হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :