রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে নিহতের ঘটনায় শোক জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দাতুক সেরি আনোয়ার ইব্রাহিম। তিনি এ ঘটনায় বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ের জন্য শিক্ষিকা মাহেরীনের আত্মত্যাগ ও বীরত্বের প্রশংসাও করেন।
গতকাল বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্টে আনোয়ার ইব্রাহিম লিখেছেন, ‘ঢাকার একটি স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর শুনে বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। বহু প্রাণহানি ঘটেছে, যাদের অধিকাংশই শিশু। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক।’
ফেসবুক পোস্টে আনোয়ার ইব্রাহিম আরও লিখেন, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনার শিকারদের মধ্যে ছিলেন মাহেরীন চৌধুরী, একজন শিক্ষিকা যিনি সাহসিকতার সঙ্গে তার শিক্ষার্থীদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যান এবং এরপর ধোঁয়া ও আগুনের মধ্যে আরও শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে ফিরে যান। তার এই অসীম সাহস ও আত্মত্যাগ কখনো ভোলার নয়।’
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার আরও জানান, তিনি নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি লিখে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে সমবেদনা ও সংহতি জানাবেন।
এ শোকের সময়ে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের ভাই-বোনদের পাশে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, শোকের এই সময়ে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের ভাই-বোনদের পাশে রয়েছে। আমরা প্রতিটি হারানো প্রাণের জন্য শোকাহত এবং প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা জানাই।
গত সোমবার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল হোসেনের স্বাক্ষর করা এক পরিসংখ্যানের তথ্যের বরাতে এ নিয়ে গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধান উপদেষ্টার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব ফয়েজ আহম্মদ।
তিনি জানান, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় গতকাল বুধবার দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ জনে। এ ছাড়া জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন ৬৯ জন। পরিসংখ্যান বলছে, নিহত ২৯ জনের মধ্যে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ১১ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১৫ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন, লুবানা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে একজন (পরিচয় জানা যায়নি) ও ইউনাইটেড হাসপাতালে একজন মারা গেছেন।
তথ্য অনুযায়ী, অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে বর্তমানে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ৪৪ জন, সিএমএইচে ২১ জন, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে একজন, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন ও হিউম্যান এইড রিসার্চ ল্যাব অ্যান্ড হাসপাতালে একজন চিকিৎসাধীন।
আপনার মতামত লিখুন :