নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় অসুস্থ স্বজনকে দেখতে যাওয়ার পথে ট্রাক-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে এক পরিবারের সাতজনসহ মোট আটজন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতরা সবাই কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে বড়াইগ্রামের তরমুজ পাম্প এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের কড্ডায় যাওয়ার পথে একটি মাইক্রোবাস বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই পাঁচজন মারা যান এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া, এ ঘটনায় আহত আরও দুজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের সাতজন হলেন জাহিদুল ইসলাম (৫৫), তার স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৫০), আপন বোন রোউসনারা আক্তার ইতি (৪৮), চাচাতো বোন আনোয়ারা খাতুন (৫৫), চাচাতো ভাবি আনোয়ারা খাতুন আনু (৫০), শাশুড়ি আনজুমান খাতুন (৬৩) ও শ্যালিকা সীমা খাতুন (৩৫)। নিহত আরেকজন হলেন মাইক্রোবাসচালক শাহাবুদ্দিন (৪২)। তিনি একই গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে।
খবর পেয়ে বনপাড়া হাইওয়ে থানার পুলিশ ও গুরুদাসপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে একজনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুজনের মৃত্যু হয়।
নিহত জাহিদুল ইসলামের চাচাতো ভাই মানজারুল ইসলাম খোকন জানান, জাহিদুলের দুই ছেলে প্রবাসে থাকেন। সম্প্রতি বড় ছেলের স্ত্রীর অপারেশন হয়েছে। তিনি বর্তমানে সিরাজগঞ্জের কড্ডায় তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাকে দেখতে যাওয়ার জন্য বুধবার সকালে পরিবারের সাতজন সদস্য মাইক্রোবাসে রওনা হন।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আইড়মারী এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তাদের সবাই প্রাণ হারান।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান শেখ বলেন, ‘খবর পাওয়ার পরপরই স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যদের সেখানে পাঠানো হয়েছে। নিহতদের মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য আইনগত কার্যক্রম চলমান।
আপনার মতামত লিখুন :