শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসানুজ্জামান হাসান, কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট)

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০৫:১২ এএম

কমছে তিস্তার পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

হাসানুজ্জামান হাসান, কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট)

প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০৫:১২ এএম

কমছে তিস্তার পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

ভারি বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর তিস্তার পানি এখন বিপৎসীমার নিচে। পানি কমলেও দুর্ভোগে পড়েছেন লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার মানুষ। গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টায় হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচে। দুপুর থেকে তা কমে দাঁড়ায় ২৪ সেন্টিমিটার নিচে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পানিবন্দি মানুষের পরিস্থিতি। বাড়িঘর আর ফসলের ক্ষেত থেকে নেমে গেছে ঢলের পানি। স্বাভাবিক হচ্ছে বানভাসিদের জীবন।

তবে তীরবর্তী নি¤œাঞ্চল প্লাবিত থাকায় পাঁচ উপজেলার হাজারো মানুষ এখনো পানিবন্দি। তলিয়ে গেছে রোপা আমনসহ নানা ফসলের ক্ষেত, ভেসে গেছে মাছ, সংকটে গবাদি পশুর খাদ্য।

গত ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় জেলায় দেখা দিয়েছে বন্যা। এতে নি¤œাঞ্চলের ৩০টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত। ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে ৪৪টি জলকপাট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

বন্যা সতর্কতা কেন্দ্রের তথ্য মতে, কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচে এবং ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানিবন্দি মানুষ এখন নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। কেউ উঁচু বাঁধে বা রাস্তার ধারে পলিথিন টানিয়ে গবাদি পশু রেখেছেন, কেউ ল্যাট্রিন তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে। কারো ঘরের ভেতরে মাচাং তুলে রান্না, কেউ বা বাঁধের ধারে চুলা বসিয়ে দিনের খাবার রান্না করছেন। সাপ-পোকামাকড়ের উপদ্রবও বেড়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি কমা-বাড়ার কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না, নষ্ট হয়েছে চাষাবাদ, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। গবাদি পশু নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। দেখা দিয়েছে শিশু খাদ্য ও গবাদি পশুর খাবারের সংকট। প্লাবিত হয়ে আছে রাস্তাঘাটসহ ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

আদিতমারী গোবর্দ্ধন গ্রামের মোবারক হোসেন বলেন, তিন দিন ধরে চরাঞ্চলের সব বাড়ি পানিবন্দি। শুকনো জমি নেই, গরু-ছাগল রাখার জায়গাও পাচ্ছি না। একই গ্রামের কাচুয়া শেখের আক্ষেপ, পাঁচ দিন ধরে ঠিকমতো রান্না হয়নি। গরু-ছাগল ও পরিবারকে উঁচু জায়গায় রেখেছি। ত্রাণ চাই না, চাই ভারত থেকে যেন আর পানি না আসে।

পানিবন্দি ফিরোজ হাসান সুরুজ বলেন, পানি ঢুকে পড়ায় চুলা জ্বালানো সম্ভব হয়নি। গবাদি পশু ও পরিবারের লোকদের নিয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিতে হয়েছিল। পুকুরের মাছও ভেসে গেছে। সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে আমরা রেহাই পাব।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হলেও নি¤œাঞ্চল প্লাবিত রয়েছে। কোথাও পানি কমায় ভাঙন দেখা দিলে দ্রুত সমাধানের জন্য প্রস্তুত আছি। চলতি মৌসুমে এটি তিস্তায় তৃতীয় দফা বন্যা। ২৯ জুলাই প্রথম দফায় এবং ৩ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। সর্বশেষ ১৩ আগস্ট থেকে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, যা আজ (গতকাল) থেকে নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোর মধ্যে কিছু শুকনো খাবার ও জিআর চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, দ্রুত বিতরণ করা হবে। আরও শুকনো খাবারের জন্য বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!