বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২৫, ০১:২২ এএম

মনের কথা রবে না আর গোপনে

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২৫, ০১:২২ এএম

মনের কথা রবে না আর গোপনে

মস্তিষ্কে বসানো ইলেকট্রনিক চিপ। তাতেই কথা ফুটছে! মানুষের কণ্ঠে নয়, যন্ত্র-মুখে। মনে মনে যা-ই ভাবা হচ্ছে, তা-ই প্রায় নির্ভুলভাবে লিখে দিচ্ছে কম্পিউটার। শুধু তা-ই নয়, কখনো কখনো সেই যন্ত্র উঁকি দিচ্ছে মস্তিষ্কের গোপন কুঠুরিতেও। সাম্প্রতিক গবেষণায় এ রকম ফল মিলতেই শোরগোল পড়েছে বিজ্ঞানীমহলে।

জটিল রোগে কথা বলার শক্তি হারিয়েছেন, এ রকম ব্যক্তির অস্ফুট বুলি পড়ে ফেলার যন্ত্র তৈরি হয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই। এবার সেই মৃদু বা অস্পষ্ট শব্দও ছিল না। যা ছিল, তা একেবারেই মনে মনে। ধরুন, আপনি নিজের মনে বললেন, ‘আপেল’। আর সেই ইলেকট্রনিক চিপ আপনার মস্তিষ্কের স্নায়ুবিক নির্দেশ (সিগন্যাল) সংগ্রহ করে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) যন্ত্রের হাতে তুলে দেবে। তারপর ওই যন্ত্রই লিখে জানিয়ে দেবে আপনি মনে মনে ‘আপেল’ বলেছিলেন।

গত বৃহস্পতিবারই ‘সেল’ নামে একটি জার্নালে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে। কথা বলার শক্তি পুরোপুরিই হারিয়েছেন, এ রকম কয়েকজন রোগীর ওপর পরীক্ষা চালিয়েছিলেন গবেষকেরা। ওই রোগীদের অনেকেই ‘অ্যামিয়োট্রপিক ল্যাটারাল সেক্লরোসিস’ (এএলএস) রোগে আক্রান্ত। স্নায়ুর এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিশ্বখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংও।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গবেষণা চলাকালীন কেসি হ্যারেল নামে এক রোগীর মনে মনে ভাবা অন্তত ছয় হাজার শব্দ সঠিকভাবে পড়ে ফেলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যন্ত্র। গবেষণার সঙ্গে যুক্ত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসায়েন্টিস্ট এরিন কুনজ বলেন, ‘‘পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের প্রথমে বলা হয়েছিল, মনে মনে ‘ঘুড়ি’ বা ‘দিন’- এই জাতীয় শব্দ বলতে। কম্পিউটার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা নির্ভুলভাবে পড়ে দিচ্ছে। পরে ওদের বলা হয়েছে, একটি গোটা বাক্য মনে মনে বলতে। দেখা গেল, সেটাও কম্পিউটার প্রায় নির্ভুলভাবে লিখে দিচ্ছে।’’

গবেষকদের মতে, আসলে ভাবনার জন্য ভাষাও প্রয়োজন। তার কোনো বহিঃপ্রকাশ না হলেও তো সেটা ভাষাই। কিন্তু এই যন্ত্র কি মনের গোপন কথাও পড়তে পারবে? এমন কথা, যা কেউ মনে মনেও উচ্চারণ করবেন না। বিজ্ঞানীদের দাবি, এখনো ততটা সম্ভব হয়নি। তবে কেউ যদি স্বেচ্ছায় নিজের মন ‘খুলে’ দেন, তা হলে ওই যন্ত্র মন পড়ে ফেলতে পারবে।

এই স্বেচ্ছায় নিজের ‘মন’ খুলে দেওয়ার বিষয়টি বুঝতে গবেষকেরা পাসওয়ার্ড পদ্ধতি প্রয়োগ করেছিলেন। কুনজ বলেন, ‘‘একজনকে বার বার ‘চিটি চিটি ব্যাং ব্যাং’Ñ এই শব্দবন্ধ বলতে বলা হয়েছিল। আর যন্ত্রকে বলা হয়েছিল, এই শব্দবন্ধ শোনার পরেই যাতে সে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মনের কথায় আড়ি পাতে। ‘চিটি চিটি ব্যাং ব্যাং’Ñ এই শব্দবন্ধই যন্ত্রের কাছে পাসওয়ার্ডের মতো ছিল। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এই শব্দবন্ধ বলছেন মানেই যন্ত্র ধরে নিচ্ছে, ওই ব্যক্তি নিজের মন উন্মুক্ত করতে চাইছে।’’

অস্ট্রেলিয়ার ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োএথিসিস্ট মার্কাস লিয়োনেল ব্রাউন বলেন, ‘এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, আমরা সঠিক পথে এগিয়েছি। যদি ঠিকঠাক ভাবে প্রয়োগ করা হয়, তা হলে দেখা যাবে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যতটুকু চাইবেন, যন্ত্র ততটুকুই পড়তে পারবে।’

আবার যখন অংশগ্রহণকারীদের বলা হয়েছিল ছোটবেলার প্রিয় বন্ধুর কথা ভাবতে, তখনো তার কোনো স্পষ্ট জবাব দিতে পারেনি ওই যন্ত্র। গবেষকদের যুক্তি, সম্ভবত এই ধরনের প্রশ্নে একাধিক উত্তর মাথায় ভিড় করে। ছোটবেলার প্রিয় বন্ধুর কথা বলতে বললে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাথায় একাধিক মুখের ছবি ঘুরতে থাকে। তখন যন্ত্রটি বিভ্রান্ত হয়ে পড়ছে।

তা সত্ত্বেও এই ফল নতুন গবেষণার দরজা খুলে দেবে বলেই মনে করছেন নেদারল্যান্ডসের মাস্ট্রুখ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসায়েন্টিস্ট ক্রিস্টান হার্ফ। তিনি এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। মার্কিন সংবাদপত্র ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’কে তিনি বলেন, ‘এই গবেষণা শুধু কোনো যন্ত্র বা প্রযুক্তি সম্পর্কিত নয়, তার গ-ি ছাড়িয়ে ভাষা এবং ভাবনার অন্তর্নিহিত সম্পর্ক নিয়েও অনেক কিছু জানিয়েছে আমাদের।’
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!