ঢাকা রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

সিদ্ধিরগঞ্জে গভীর রাতে  বাড়িতে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৯

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৫, ০৬:৫৭ এএম
  • সবার জীবনই সংকটাপন্ন 
  • গ্যাস লাইনে লিকেজ বা বৈদ্যুতিক শট সার্কিটে দুর্ঘটনা

নারায়ণগঞ্জে সিদ্ধিরগঞ্জে গভীর রাতে একটি বাড়িতে হঠাৎ বিস্ফোরণে নারী, শিশুসহ ৯ জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮ জনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে, দগ্ধ সবার জীবনই সংকটে। তাদের মধ্যে তিনজনের শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস আগুনের কারণ হিসেবে বলছেন গ্যাস লাইনের লিকেজ অথবা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট। তবে তারা নিশ্চিতভাবে কিছু জানায়নি। গত শুক্রবার রাত ৩টার দিকে জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার  হীরাঝিল এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দগ্ধদের মধ্যে তানজিল ইসলামের পরিবারের চারজন এবং হাসানের পরিবারের পাঁচজন দগ্ধ হন। দগ্ধরা হলেন- তানজিল ইসলাম (৪০), তার স্ত্রী আসমা বেগম (৩৫) তাদের দুই সন্তান তৃষা আক্তার (১৭) ও আরাফাত (১৫)। এ ছাড়া  হাসান (৩৫), তার স্ত্রী সালমা বেগম (৩২) ও তাদের তিন সন্তান ইমাম উদ্দিন (১ মাস), জান্নাত (৪) ও মুনতাহা (৮) দগ্ধ হন। 

স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, রাত ৩টার দিকে হাসানের টিনসেডের বাড়িতে এই বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দগ্ধদের উদ্ধার করেন তারা। তাদের দাবি, গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকেই আগুনের ঘটনা ঘটে। লিকেজের খবর আগেও বাড়ির মালিককে জানানো হয়েছিল। তবে সমাধান না পেয়ে সামনের মাসেই এই বাড়িটি ছেড়ে অন্য একটি বাড়িতে ওঠার কথা ছিল তাদের।

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সার্জন ডা. সুলতান মাহমুদ শিকদার বলেন, ৯ জনকে দগ্ধ অবস্থায় ভোরে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে হাসানের শরীরের ৪৪ শতাংশ, সালমার ৪৮ শতাংশ, আসমার ৪৮ শতাংশ, তৃষার ৫৩ শতাংশ, জান্নাতের ৪০ শতাংশ, মুনতাহার ৩৭ শতাংশ এবং এক মাস বয়সি ইমামের শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তানজিল ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। 

দগ্ধ হাসানের ছোট ভাই রকিবুল জানান, তার ভাই ও ভায়রা ভাই দিনমজুরের কাজ করতেন। তারা রাতে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ পান। এরপরেই দুই পরিবারের সদস্যরা দগ্ধ হন।

আদমজী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. মিরন মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ফ্রিজে সরাসরি বৈদ্যুতিক লাইন দেওয়া ছিল। বৈদ্যুতিক লাইনের শর্টসার্কিট থেকে প্রথমে আগুন ধরে যায়, সেই আগুন থেকে ফ্রিজের কম্প্রেসার বিস্ফোরণ হয়। এতে পরিবারের সদস্যরা দগ্ধ হন। আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার আগেই স্থানীয়রা দগ্ধদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যান।

তিনি বলেন, আমরা আশপাশে কিংবা ঘরের ভেতরে অন্য কোনো ধরনের গ্যাসের আলামত পাইনি। সবকিছুই ইঙ্গিত দিচ্ছে, ফ্রিজের কম্প্রেসার থেকেই বিস্ফোরণ ও অগ্নিকা-ের সূত্রপাত।