ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার সমর্থিত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কিছু চিকিৎসক অতিউৎসাহী হয়ে জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ রোগীদের চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকদের বারণ করেছিলেন। চিকিৎসায় বাধা দেওয়ায় হাসপাতালের পাঁচ চিকিৎসককে গত ২৫ জুলাই বদলি করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ দেওয়া জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন ঢামেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের আবাসিক সার্জন মোস্তাক আহমেদ। তিনি আরও বলেন, ‘স্বাচিপের চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, এরা (আন্দোলনকারী) সন্ত্রাসী, এদের চিকিৎসা দেওয়া যাবে না’।
গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় ২৭তম সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনাল-১-এ মোস্তাক আহমেদ এই জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত বছরের ১৯, ২০ ও ২১ জুলাই এবং ৪ ও ৫ আগস্ট গুলিতে আহত বেশিসংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ক্যাজুয়ালটি বিভাগে চাকরি করার সুবাদে তিনি আগেও গুলিবিদ্ধ রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন। গুলিবিদ্ধ বেশির ভাগ রোগীর গুলির ডিরেকশন ছিল ওপর থেকে নিচের দিকে। সাধারণত গুলির ডিরেকশন থাকে নিচ থেকে ওপরের দিকে বা সমান্তরালভাবে। রোগীরা জানান, তাঁদের কোনো উঁচু জায়গা অথবা হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়েছে। কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে মাথায় গুলি লেগে তা পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়’।
জবানবন্দিতে তিনি জানান, চিকিৎসা দেওয়ার সময় ছাত্রলীগের সশস্ত্র কর্মীরা হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন, আহত ব্যক্তিরা কারা। তখন গুলিবিদ্ধ ছাত্ররা নিজেদের (ছাত্রত্ব) পরিচয় গোপন রাখার জন্য তাঁদের (চিকিৎসক) অনুরোধ করেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন