ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে আর কোনো রিট শুনবেন না বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট। কার্যতালিকায় থাকা ডাকসু নির্বাচন-সংক্রান্ত এক রিট শুনানিতে এমনটাই জানান হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্বাচনি কার্যক্রম সুষ্ঠু করতে শিক্ষক প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি পর্যবেক্ষক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। দুটি ঘটনাই ঘটে গতকাল বৃহস্পতিবার।
ডাকসু ভিপি পদে প্রার্থিতা ও ব্যালট নম্বর পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী জুলিয়াস সিজার তালুকদারের দায়ের করা এক রিট হাইকোর্টের বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদের বেঞ্চে উঠলে বিচারপতিরা বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আপিল বিভাগে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে কোনো রিট শুনব না।’ বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি স্পষ্ট ভাষায় জানান, ‘আগে এ ধরনের রিট এলে আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি। যেহেতু আপিল বিভাগ হস্তক্ষেপ করেছে, তাই আমরা নতুন কোনো রিট শুনব না।’ পরে আদালত রিট আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। এ সময় রিটকারীর আইনজীবী সরদার আবুল হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির।
অন্যদিকে একই দিন বিকেলে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠুতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের নিয়ে একটি স্বতন্ত্র পর্যবেক্ষক প্যানেল গঠন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যানদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। এবার অধিকাংশ শিক্ষার্থীই নতুন ভোটার। তাদের ভোটদানে আগ্রহী ও উৎসাহিত করতেই আমরা কাজ করছি।’ ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন টাস্কফোর্সের প্রধান অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, রিটার্নিং কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা ও সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর।
এদিকে ডাকসু নির্বাচন ঘিরে অপপ্রচারের বিষয়ে নিজের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবদুল কাদের। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেসবুকে এক পোস্টে কাদের লেখেন, ‘ডাকসুতে জিতা লাগবে না, কেবল বেঁচে থাকতে চাই। এতটুকু দয়া অন্তত আমাকে দেখানোর অনুরোধ’। তিনি আরও লেখেন, ‘সেই রাজাকার নিয়ে কথা বলার পর থেকেই যে শুরু হইছে, প্রতিনিয়ত সেটা আরও বাড়তেছে। তার পর থেকেই আমি ঘুমাতে পারি না, মাঝরাতে জেগে যাই; শরীর কাঁপতে থাকে। একটা মানুষকে নিয়ে আর কত করবেন? মানুষের কতটুকুও বা ধৈর্যক্ষমতা থাকে, আমি আর কত দিন নিতে পারব জানি না।’
‘কেবল অনলাইনে এই হেনস্তাটা আমার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকলেও মানা যাইত, বাড়িতে গিয়ে আমার আম্মাকে পর্যন্ত কথা শোনাচ্ছেন!’ বলেও উল্লেখ করেছেন আবদুল কাদের। ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, ‘১০ দিন আগের বক্তব্য কাট করে প্রপাগান্ডা (অপপ্রচার) না ছড়ালেও পারতেন। পুরো বক্তব্য তুলে ধরলে বক্তব্যের সারমর্ম বুঝতে পারত মানুষ। কেবল তো শুরু, আরও ৫ দিন বাকি। তত দিনে কী যে ঘটবে, সেটা ভাবতে গেলে আরও বেশি ট্রমাটাইজড হয়ে যাই।’